মঙ্গলবার, ৩ ডিসেম্বর, ২০২৪, ঢাকা

‘বুট কেনার টাকা ছিল না বিশ্বকাপের প্রথম গোলদাতার’

আল মামুন ফাহিম
প্রকাশিত: ২১ নভেম্বর ২০২২, ০২:৪৪ এএম

শেয়ার করুন:

‘বুট কেনার টাকা ছিল না বিশ্বকাপের প্রথম গোলদাতার’

সব ধরণের আলোচনা-সমালোচনাকে পেছনে ফেলে পর্দা উঠেছে ২২তম ফুটবল বিশ্বকাপের। আল বাইত স্টেডিয়ামে জমকালো উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের পর 'এ' গ্রুপের প্রথম ম্যাচে মুখোমুখি হয়েছে কাতার ও ইকুয়েডর। প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপ খেলতে নামা স্বাগতিক কাতার নিজেদের সূচনাটা স্মরণীয় করতে পারেনি। লাতিন আমেরিকার দেশটির বিপক্ষে ২-০ গোলের ব্যবধানে হেরেছে আরবরা। এই ম্যাচে ইকুয়েডরের হয়ে জোড়া গোল করে প্রশংসায় ভাসছেন ফরোয়ার্ড এনার ভ্যালেন্সিয়া। তবে এবারের বিশ্বকাপের প্রথম গোলদাতার গল্প শুনলে যে কেউ চমকে উঠবে, কেননা সে গল্প রূপকথাকেও হার মানাবে। 

ইকুয়েডরের সান লোরেঞ্জো শহরে ভ্যালেন্সিয়ার বেড়ে উঠা মোটেও সহজ ছিলো না। দারিদ্র সীমার সঙ্গে প্রতিনিয়ত লড়াই করে ফুটবলার হয়েছেন তিনি। ৩৩বছর বয়সী এই ফরোয়ার্ডের জন্ম দরিদ্র এক পরিবারে। যেখানে এক বেলার খাবারের ব্যবস্থা করা ছিল অনেক কঠিন। 


বিজ্ঞাপন


পরিবারকে সহযোগীতা করার জন্য ছোটবেলা থেকেই বিভিন্ন রকমের কাজ করতেন এনার। ফুটবল খেলার জন্য এক জোড়া বুটও ছিলো না তার। বাবার সঙ্গে দুধ বিক্রি করে টাকা জমিয়ে ক্যারিয়ারের প্রথম বুট কিনেছিলেন তিনি।

পর্যাপ্ত পরিমাণ টাকা না থাকার কারণে মাঝে মধ্যে স্টেডিয়ামেই ঘুমিয়ে পড়তেন তিনি। নিজের ফুটবল খেলার স্বপ্ন বাঁচিয়ে রাখার জন্য প্রায়শ না খেয়ে থাকতেন। 

আরও পড়ুন: কন্টেইনার দিয়ে নির্মিত স্টেডিয়ামে খেলবেন মেসি-নেইমাররা


বিজ্ঞাপন


অবশেষে ২০১০ সালে পরিশ্রম সফল হয় ভ্যালেন্সিয়ার। ইকুয়েডরের সিএস এমেলেকের সিনিয়র দলের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হন এই ফরোয়ার্ড। তারপর আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয় নি এই ফুটবলারকে। চার বছর পর মেক্সিকোর পাকচুয়া হয়ে ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের ওয়েস্ট হ্যাম, এভারটনের মতো ক্লাবের জার্সিতে মাঠ কাঁপিয়েছেন। বর্তমানে তুরস্কের ক্লাব ফেনেরবাচে খেলছেন তিনি। 

কাতার বিশ্বকাপের প্রথম গোলদাতা নিজেকে নিয়ে গেছেন ইতিহাসের পাতায়। বিশ্বকাপের ইতিহাসে দ্বিতীয় খেলোয়াড় হিসেবে কোনো আসরে প্রথম ম্যাচের প্রথমার্ধে জোড়া গোলের নজির গড়লেন ভ্যালেন্সিয়া। 

আরও পড়ুন: কাতার বিশ্বকাপে রেকর্ড ভাঙতে প্রস্তুত মেসি-রোনালদো

অথচ এই ফুটবলারের জীবনে এক সময় বুট কেনার টাকায় ছিলো না। বিশ্বকাপের মঞ্চে নিজের দেশকে জয় এনে দিয়ে বিশ্বকাপে ৯২ বছরের স্বাগতিক দলের অপরাজিত থাকার রেকর্ড যেমন ভেঙেছেন তেমনি নিজেকে নিয়ে গিয়েছেন অনন্য এক উচ্চতায়। কঠোর সাধনার মাধ্যমে সকল প্রতিকূলতাকে পেছনে ফেলে সফলতার চরম শিখরে উঠা বোধ হয় ইকুয়েডরের এই ফুটবলারের গল্পকেই নির্দেশ করে।  

এমএএম    

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

টাইমলাইন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর