আগামীকাল রোববার কাতার-ইকুয়েডরের ম্যাচ দিয়ে পর্দা উঠছে ফিফা বিশ্বকাপ -২০২২ এর। শিরোপা জয়ের লড়াইয়ে এবারের আসরে মাঠে নামবে ৩২টি দল। কাতারের ৫টি শহরের ৮টি মাঠে অনুষ্ঠিত হবে এবারের বিশ্বকাপ। ২৯ দিন সময়সীমার এই লড়াইয়ে আল খুরের আল বাইত স্টেডিয়ামে উদ্বোধনী ম্যাচে কাল মাঠে নামছে কাতার ও ইকুয়েডর। অপরদিকে, ১৮ই ডিসেম্বর স্বাগতিক দেশটির জাতীয় দিবসে ফাইনাল খেলার মধ্য দিয়ে পর্দা নামবে এবারের বিশ্বকাপের। শিরোপা নির্ধারনী সেই ম্যাচটি হবে দেশটির লুসাইল আইকনিক স্টেডিয়ামে।
ফুটবল বিশ্বকাপের এবারের আসরে যে আটটি ম্যাচে দলগুলো মাঠে নামবে তার মধ্যে সবচেয়ে বড় ভেন্যু হচ্ছে লুসাইল স্টেডিয়াম। ৮০ হাজারের বেশি দর্শক ধারণক্ষমতাসম্পন্ন স্টেডিয়ামটি কাতারের সবচেয়ে দৃষ্টিনন্দন ভেন্যু। ফাইনালসহ সর্বমোট নয়টি ম্যাচ অনুষ্ঠিত হবে এখানে।
বিজ্ঞাপন
আরও পড়ুন- নরক থেকে ব্রাজিল দলে, রূপকথাকেও হার মানায় যে গল্প
লুসাইল ধারণক্ষমতার দিক থেকে বিশ্বের দশম বৃহৎ ফুটবল ভেন্যু। স্টেডিয়ামটির নির্মাণে যৌথভাবে কাজ করেছে কাতারের ঠিকাদার কোম্পানি ‘এইচবিকে কন্ট্রাকটিং কোম্পানি’ ও চীনের ‘চীনা রেলওয়ে কনস্ট্রাকশন করপোরেশন (সিআরসিসি)’।
স্টেডিয়ামটির নকশা তৈরি করেছে বিখ্যাত ব্রিটিশ আর্কিটেকচার ফার্ম ‘ফোস্টার প্লাস পার্টনার্স গ্রুপ লিমিটেড’। সঙ্গে ছিল যুক্তরাষ্ট্রের ‘পপুলাস’। তাদের সহযোগিতায় ছিল ‘এএফএল আর্কিটেক’ ও ‘ম্যানিকা আর্কিটেক’। ১৯৬৭ সালে প্রতিষ্ঠিত হওয়া ফোস্টার প্লাস পার্টনার্স এর বাইরেও তৈরি করেছে বেশ কয়েকটি ঐতিহাসিক ও দৃষ্টিনন্দন স্থাপনা। লন্ডন সিটি হল, রানী এলিজাবিথ গ্রেট কোর্ট, ব্লুমবার্গ লন্ডন ও অ্যাপল ফিফথ এভিনিউ তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য। লুসাইল নির্মাণের ডিজাইন, পরিকল্পনা, প্রজেক্ট ম্যানেজমেন্ট ও অ্যাডভাইজরি হিসেবে কাজ করেছে অস্ট্রেলিয়ার ‘অরেকন’ কোম্পানি।
বিজ্ঞাপন
স্টেডিয়ামটি নির্মাণে খরচ হয়েছে ৭৬৭ মিলিয়ন ডলার, যা বাংলাদেশি মুদ্রায় ৬ হাজার ৬১০ কোটি ৭২ লাখ ১৬ হাজার ১১০ টাকা। (সূত্র: স্টেডিয়াম ডিবি)
কাতার ফুটবল অ্যাসোসিয়েশনের মালাকানাধীন স্টেডিয়ামটির কাজ শুরু হয় ২০১৭ সালের ১১ এপ্রিল। ২০২১ সালের ২২ নভেম্বর এর উদ্বোধন করা হয়েছে।
আরও পড়ুন- দুই দেশের হয়ে বিশ্বকাপে খেলবেন আপন দুই ভাই
রাজধানী দোহা থেকে প্রায় ২২.৭ কিলোমিটার উত্তরে অবস্থিত লুসাইল স্টেডিয়াম। গাড়ি ও মেট্রোরেলযোগে স্টেডিয়ামে পৌঁছানো যাবে। স্টেডিয়ামের প্রতিটি প্রান্তেই যেন শিল্পীর তুলির নিখুঁত ছোঁয়া। জলের প্রতিবিম্বাকৃতি আর স্যাডল-ফর্মের ছাদের এই নির্মাণশৈলীকে ওপর থেকে দেখলে মনে হবে ভাসমান মাঠ। চারপাশে থাকবে পানির কৃত্রিম ফোয়ারা। মাঠে প্রবেশে দর্শকদের পার হতে হবে বিশেষ সেতু। কাতারের প্রধান প্রতিবন্ধক গরম আবহাওয়াকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে স্টেডিয়ামে থাকবে নিজস্ব সৌরশক্তিচালিত কুলিং সিস্টেম। স্টেডিয়ামের ওপরে থাকবে কাচের বিশেষ আবরণ।
আরও পড়ুন- সবচেয়ে ব্যয়বহুল বিশ্বকাপের পেছনের গল্প
এই স্টেডিয়ামটি নির্মাণের মাধ্যমে বিশ্ববাসীর সঙ্গে আরব সংস্কৃতি ভাগ করে নেয়ার আবেগকে তুলে ধরা হয়েছে। এর নকশায় আলো-ছায়ার খেলা দর্শকদের মুগ্ধ করবে। তাছাড়াও ইসলামী সভ্যতার উত্থানের সময় সমগ্র আরব ও ইসলামী বিশ্ব থেকে পাওয়া বাটি, পাত্র, আসবাবপত্র ও অন্যান্য শিল্পকর্মের আলংকারিক নকশাগুলোর কারণে নজর কাড়বে এ স্টেডিয়াম।
এফএইচ