শনিবার, ১২ এপ্রিল, ২০২৫, ঢাকা

ম্যানসিটিকে বিদায় বললেন ডি ব্রুইনা

স্পোর্টস ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৪ এপ্রিল ২০২৫, ০৬:০০ পিএম

শেয়ার করুন:

ম্যানসিটিকে বিদায় বললেন ডি ব্রুইনা

শেষ হচ্ছে এক স্বর্ণযুগের গল্প—ম্যানচেস্টার সিটিকে বিদায় বললেন কেভিন ডি ব্রুইনা। ইতিহাসের পাতায় নাম লিখিয়ে এবার বিদায়ের সুর বাজাচ্ছেন ডি ব্রুইনা। ম্যানচেস্টার সিটির সঙ্গে ৯ বছরের সম্পর্কের ইতি টানতে চলেছেন এই বেলজিয়ান জাদুকর। মৌসুম শেষে যখন তার চুক্তির মেয়াদ শেষ হবে, তখনই শেষবারের মতো আকাশি নীল জার্সি গায়ে উঠবে—এ কথা নিজেই জানিয়ে দিলেন তিনি।

২০১৫ সালে জার্মান ক্লাব ভলফসবুর্গ থেকে ৫৫ মিলিয়ন পাউন্ডে সিটিতে আসা ডি ব্রুইনা এখন শুধুই একটি নাম নয়, বরং একজন কিংবদন্তি যিনি ক্লাবটির ইতিহাসই বদলে দিয়েছেন। "সব গল্পের শেষ থাকে, তবে এটা ছিল সবচেয়ে সুন্দর অধ্যায়" সোশ্যাল মিডিয়ায় আবেগঘন বার্তায় লিখেছেন ব্রুইনা।


বিজ্ঞাপন


তিনি লিখেন, “ফুটবল আমাকে তোমাদের কাছে এনেছে, এনেছে এই শহরে। জানতাম না, এই অধ্যায়টা আমার জীবন বদলে দেবে। এই শহর, এই ক্লাব, এই মানুষরা আমাকে সবকিছু দিয়েছে। আমার কোনো উপায় ছিল না—আমাকে সবটুকু দিয়ে ফিরিয়ে দিতে হয়েছে। আর দেখো, আমরা সব জিতেছি।”

তিনি আরও বলেন, “হ্যাঁ, বিদায় বলার সময় চলে এসেছে। সুরি, রোম, মেসন ও মিশেল এবং আমি এই শহরের প্রতি চিরকৃতজ্ঞ। ম্যানচেস্টার থাকবে আমাদের সন্তানের পাসপোর্টে—আর তার চেয়েও বেশি করে থাকবে আমাদের হৃদয়ে।” 

Gnr49EpXkAA_zSB

ম্যানসিটিতে ৪১৩ ম্যাচে ১০৬ গোল, ১৬টি ট্রফি, ৬টি প্রিমিয়ার লিগ শিরোপা, আর এক ঐতিহাসিক চ্যাম্পিয়নস লিগ জয়—ডি ব্রুইনের সময়টা শুধু পরিসংখ্যানের গল্প নয়, এ এক ফুটবলীয় কাব্য।


বিজ্ঞাপন


পেপ গার্দিওলা যখন ২০১৬ সালে ম্যানসিটির দায়িত্ব নেন, ডি ব্রুইনা তখন থেকেই হয়ে ওঠেন দলের হৃদয়। উইং থেকে ধীরে ধীরে গার্দিওলার ছোঁয়ায় রূপ নেন বিশ্বসেরা প্লেমেকারে। মাঠে তার চোখধাঁধানো পাস, দূরপাল্লার শট, আর অসাধারণ ভিশন তাকে এনে দিয়েছে কিংবদন্তির মর্যাদা।

এ মৌসুমে মাত্র ১৯টি ম্যাচে শুরুর একাদশে ছিলেন তিনি। পুরনো সেই ইনজুরিই যেন বারবার টেনে ধরেছে। সেপ্টেম্বরে পাওয়া চোটে পড়ার পর চুক্তি নবায়নের আলোচনা পর্যন্ত থেমে যায়। গত মৌসুমেও খেলার সুযোগ পান মাত্র ২৬টি ম্যাচে।

গুঞ্জন উঠেছিল, সৌদির ক্লাবগুলো তার দিকে ঝুঁকছে। ডি ব্রুইনা নিজেও বলেছিলেন, "আমি সব কিছুর জন্য প্রস্তুত আছি।" তবে এখনো নিশ্চিত নয় পরবর্তী গন্তব্য কোথায়।

সিটি ভক্তদের জন্য এটি নিঃসন্দেহে এক আবেগঘন মুহূর্ত। যারা জানতেন, ডি ব্রুইনা মানেই সিটি, তাদের জন্য এই বিদায় যেন নিজের কাছের কাউকে বিদায় জানানোর মতো।

শেষ বার্তায় ডি ব্রুইনা বললেন, “এই শহর, এই ক্লাব, এই বন্ধুরা, এই সহযোদ্ধারা—তোমরা সবাই আমাদের জীবনের অংশ হয়ে থাকবে। এই দশ বছরের যাত্রার জন্য তোমাদের অশেষ ধন্যবাদ।”

আগামী মৌসুমে কোন জার্সিতে দেখা যাবে কেভিন ডে ব্রুইনাকে? সৌদি লিগ? আমেরিকা? না কি ইউরোপেই অন্য কোনো ঠিকানা? উত্তর হয়তো সময়ই দেবে। তবে যা নিশ্চিত—ম্যানসিটির ইতিহাসে সবচেয়ে উজ্জ্বল অধ্যায়গুলোর একটিতে তার নাম থাকবে সোনালি হরফে। কারণ, তিনি শুধু একজন মিডফিল্ডার ছিলেন না। তিনি ছিলেন ম্যানসেস্টারের ছায়াপথে জ্বলতে থাকা সবচেয়ে উজ্জ্বল নক্ষত্রদের একজন।

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর