আপনি ফুটবল ভালোবাসেন অথচ আজকের আর্জেন্টিনা-ডাচ লড়াই দেখেন নি, তাহলে আপনার মতো হতভাগা হয়তো আর কেউই নয়। লিওনেল মেসিরা সেমিফাইনালের টিকিট নিশ্চিত হতে আর মাত্র ৭ মিনিট দূরে দাঁড়িয়ে। আনন্দে-উচ্ছ্বাসে ভাসছে স্টেডিয়াম সহ পুরো বিশ্বের আর্জেন্টাইন সমর্থকরা। ঠিক তখনই উল্লাসের মাঝে ডাচদের নাটকীয় প্রত্যাবর্তন। ৮৩তম মিনিট থেকে নির্ধারিত সময়ের সঙ্গে যোগ করা ১০ মিনিট লুসাইল স্টেডিয়ামে যা ঘটল তা রূপকথার গল্পকেও হার মানাবে।
ফুটবল বিশ্বকাপের ইতিহাসে এমন উত্তেজনা পূর্ণ ম্যাচ কখনোই দেখেনি বিশ্ব। নাটকীয়তা কাকে বলে ফুটবল প্রেমীরা আজ তার সাক্ষী হয়ে থাকল। ম্যাচে দুই গোলের লিড নিয়ে সমর্থকরা যখন আর্জেন্টিনার উল্লাস উদযাপনের প্রস্তুতি নিচ্ছে। ঠিক তখনই থ্রিলার মুভির দৃশ্যপট যেন ডাচদের হাত ধরে কাতারে প্রবেশ করল। ৮৩ মিনিটে নেদারল্যান্ডসের গোল শোধ করে ম্যাচে ফেরার ইঙ্গিত। তখনও ২-১ ব্যবধানে জয়ের প্রহর গুনছে লিওনেল স্ক্যালোনির দল।
বিজ্ঞাপন

আরও পড়ুন- পেনাল্টির নাটকীয়তা শেষে সেমিফাইনালে আর্জেন্টিনা
৯০মিনিট শেষে ম্যাচ অফিসিয়াল ১০ মিনিটের অতিরিক্ত সময়ের ঘোষণা দেন। আর তাতেই যেন ফন ডাইকদের নিভে যাওয়া নিভে যাওয়া প্রদীপ জ্বলে উঠে। একের পর এক আক্রমণে আর্জেন্টাইন রক্ষণ ভাগের পরীক্ষা নেয়া ডাচ শিবির ম্যাচের যোগ করা সময়ের শেষ মিনিটে ডি বক্সের বাইরে ফ্রি কিক পেয়ে যায়। তখনও উল্লাসে মেতেছে সমর্থকরা, কেননা এই শটের পরই রেফারির শেষ বাঁশি বাজবে।
তবে সবাইকে স্তব্ধ করে সুদূর আর্মস্টারড্যাম থেকে শুরু করে কাতারে ডাচ সমর্থকদের আনন্দের উপলক্ষ এনে দেন ওয়েগহর্স্ট। তার দক্ষতায় শেষ মিনিটের নাটকীয় গোলে ম্যাচে ২-২ সমতা আসে। আর এতেই ম্যাচ গড়ায় অতিরিক্ত সময়ে।
বিজ্ঞাপন

অতিরিক্ত ৩০ মিনিটে নিরাপদ খেলার চেষ্টা করে দুই দল। তবে এর মাঝেই ডাচরা দুইটি শট নেয় আর্জেন্টিনার গোলমুখে। আলবেসেলিস্তারাও পায় দারুণ দুইটি সুযোগ। তবে বদলি হয়ে নামা লাউতারো মার্টিনেস ও এনজো ফার্নান্দেজের শট লক্ষ্যে পৌঁছায়নি। এরপরই শুরু হয় টাইব্রেকারের নাটকীয়তা।
সেখানেও কমতি নেই নাটকের। ডাচদের প্রথম দুইটি শটই রুখে দিয়ে শুরুতেই আর্জেন্টিনাকে এগিয়ে দেন গোলরক্ষক এমিলিয়ানো মার্টিনেজ। তৃতীয় শটে গোল পায় ডাচরা। অন্যদিকে আর্জেন্টিনা গোল পায় প্রথম তিনটি শটেই। তবে এনজো ফার্নান্দেজ চতুর্থ শটটা বাইরে মারায় আবারও জমে উঠে খেলা। এই সুযোগে ডাচরা চতুর্থ ও পঞ্চম শটে গোল করে খেলায় ফেরার চেষ্টা চালায়। ফলে লাউতারো মার্টিনেসের নেওয়া পঞ্চম শটটি হয়ে উঠে ম্যাচের ভাগ্য-নির্ধারক।
আরও পড়ুন- পেনাল্টিতে ব্রাজিলের স্বপ্ন ভেঙে সেমিফাইনালে ক্রোয়েশিয়া
তবে এবারের মতো আর ভুল করেননি লাউতারো। তার শট নেদারল্যান্ডের জালে পৌঁছাতেই আনন্দে মেতে উঠেন মেসিরা। লুসাইল প্রকম্পিত হতে থাকে আর্জেন্টিনা, আর্জেন্টিনা ধ্বনিতে। ৪-৩ ব্যবধানে জিতে আর্জেন্টিনা পৌঁছে যায় সেমিফাইনালে। যেখানে মেসিদের প্রতিপক্ষ প্রথম কোয়ার্টার ফাইনাল ম্যাচে ব্রাজিলকে হারানো ক্রোয়েশিয়া।
এমএএম/এফএইচ































































































































































































































































































































































































































































