কাতারে অসাধারণ এক দৃশ্য দেখার অপেক্ষায় ফুটবল বিশ্ব। দুই দেশের জার্সি গায়ে মাঠে নামছেন আপন দুই ভাই। নিকো উইলিয়ামস ও ইনাকি উইলিয়ামস ভাইদ্বয় এবার কাতার বিশ্বকাপ মাতাবেন ভিন্ন দুই দেশের হয়ে।
কাতার বিশ্বকাপে বড় ভাই ইনাকি উইলিয়ামস ঘানার হয়ে মাঠে নামবেন। অন্যদিকে এবারের বিশ্বকাপে শিরোপার অন্যতম দাবিদার স্পেনের হয়ে মাঠে নামবে তার ছোট ভাই নিকো উইলিয়ামস।
বিজ্ঞাপন
আরও পড়ুন- নরক থেকে ব্রাজিল দলে, রুপকথাকেও হার মানায় যে গল্প
ফুটবল মাঠে দুই ভাইয়ের খেলার ধরনও আলাদা। ঘানার ডিফেন্সে দেয়াল হয়ে দাঁড়িয়ে প্রতিপক্ষের আক্রমণ ঠেকাতে প্রস্তুত আছেন ইনাকি। অপরদিকে স্পেনের হয়ে আক্রমণভাগ সামলাবেন নিকো উইলিয়ামস।
নিকো ও ইনাকি দুই ভাইয়ের জন্ম স্পেনে। নিকোর চেয়ে আট বছরের বড় ইনাকি। তাদের বাবা-মা দুইজনেরই জন্মভূমি ঘানা হলেও আর্থিক দৈন্যতায় ইনাকি-নিকোর বাবা ফেলেক্স ও মা মারিয়া পাড়ি জমান স্পেনে। ঘানা থেকে স্পেনে যাওয়ার সেই গল্পটা রূপকথাকেও হার মানায়। চার হাজার কিলোমিটার দূরত্বের সেই লম্বা পথ তারা পাড়ি জমিয়েছিলেন একটি ট্রাকে গাদাগাদি করে।
বিজ্ঞাপন
তাছাড়াও সাহারা মরুভূমির তপ্ত বালির ওপর পায়ে হেঁটেছেন মাইলের পর মাইল। ৪০-৫০ ডিগ্রি গরমের মধ্যে সাহারা মরুভূমি পায়ে হেঁটে তারা পৌঁছেছিলেন স্পেনের মেলিলায়। দীর্ঘ এই পথ পাড়ি দেয়ার পর ফেলেক্সের পায়ে ফোসকা পড়ে যায়। যা পরবর্তীতে দীর্ঘস্থায়ী ক্ষততে রূপ নেয়। ফলে এখনো খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে হাঁটেন ফেলেক্স।
আরও পড়ুন- ব্রাজিলের জালে ৭ গোলের মতো অঘটন আবারও দেখবে ফুটবল বিশ্ব?
স্পেনে পৌঁছানোর পর অবৈধ অভিবাসনের দায়ে গ্রেফতার হয় তাদের। মুক্তি পাওয়ার পর তারা স্পেনে রাজনৈতিক আশ্রয় পান এবং এর কিছুদিন পরেই পেয়ে যান নাগরিকত্ব। তবে বড় ভাই ইনাকি উইলিয়ামস স্পেনের নাগরিকত্ব ত্যাগ করে তার বাবার দেশ ঘানার নাগরিকত্ব গ্রহণ করেন।
ইনাকি ২০১৩ সালে যখন লা লিগায় অ্যাথলেটিকো বিলবাওয়ে যোগ দেন, তখন ছোট ভাই নিকো উইলিয়ামসের বয়স ১১ বছর। ইতিমধ্যে স্প্যানিশ লিগে ২০৩ ম্যাচ খেলে অনন্য এক রেকর্ড গড়েছেন ঘানার এই ফুটবলার।
অপরদিকে ছোট ভাই নিকো উইলিয়ামসের ক্যারিয়ার খুব একটা সমৃদ্ধ নয়। গত বছর পেশাদার ক্যারিয়ার শুরু করেন তিনি। অ্যাথলেটিকো বিলবাওয়ে দুর্দান্ত খেলে নজরে আসেন স্পেন দলের কোচের। এরপরই স্পেন জাতীয় দলে ডাক পান এই উইঙ্গার।
এফএইচ