এক ব্যাতিক্রমী ফুটবল বিশ্বকাপের উদ্বোধন দেখল বিশ্ব। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উল্লেখ করা হয় পবিত্র কুরআনের সূরা হুজরাতের ১৩ নম্বর আয়াত। এছাড়া অনুষ্ঠানে অংশ নেওয়ার কথা থাকলেও কোনো নারী শিল্পীকে দেখা যায়নি। সম্ভবত প্রথমবারের মতো ফিফা বিশ্বকাপ উদ্ভোধনী অনুষ্ঠানে কুরআনের আয়াত পাঠ করা হলো।
রোববার রাতে ফিফা বিশ্বকাপের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে কাতারের বেদুইন শিকড় প্রদর্শন করা হয়েছিল। দেশটির আমির যখন বিশ্বকাপের উদ্বোধন করেন, তিনি তার বাবার হাতে চুম্বন করেন এবং বিশ্বকে ফুটবলের সবচেয়ে বড় ইভেন্টে স্বাগত জানান। প্রথমবারের মতো মধ্যপ্রাচ্যে মঞ্চস্থ হচ্ছে বিশ্বের সবচেয়ে বড় এই আসর।
বিজ্ঞাপন
শেখ তামিম বিন হামাদ আল থানি বলেন, 'কাতার থেকে, আরব বিশ্ব থেকে, আমি সবাইকে ২০২২ সালের বিশ্বকাপে স্বাগত জানাই। এটি কত সুন্দর যে লোকেরা তাদের বৈচিত্র্য উদযাপনের জন্য তাদের বিভক্ত করে এবং কী তাদের একত্রিত করে তা একপাশে রাখতে পারে।'
এরপর আল বায়ত স্টেডিয়ামের ছাদ থেকে আতশবাজি বিস্ফোরিত হয়। তবে যা বিশ্বকে আকর্ষণ করেছিল এবং দর্শকদের মুগ্ধ করেছিল তা হলো ২০ বছর বয়সী কোরআনের আয়াত পাঠকারী ঘানিম আল মুফতাহ। তিনি ফিফা বিশ্বকাপের রাষ্ট্রদূতও।
ঘানিম যে আয়াত উল্লেখ করেন তার অর্থ হলো- 'হে মানবজাতি, সত্যিই আমি তোমাদেরকে পুরুষ ও নারী থেকে সৃষ্টি করেছি এবং তোমাদেরকে জাতি ও গোত্রে পরিণত করেছি। যাতে তোমরা একে অপরকে চিনতে পারো।'
ঘানিম একটি বিরল রোগ নিয়ে জন্মগ্রহণ করেছিলেন, যা নিম্ন মেরুদণ্ডের বিকাশকে ব্যাহত করে। অস্কার বিজয়ী অভিনেতা মরগান ফ্রিম্যানের সঙ্গে তিনি মঞ্চে উপস্থিত হন।
বিজ্ঞাপন
ফ্রিম্যান ২০২২ বিশ্বকাপের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের উদ্বোধনী অংশ বর্ণনা করেন, 'দ্য কলিং' শিরোনামে। দর্শকদের তিনি বলেন, 'আমরা সবাই এখানে একটি বড় গোত্রে জড়ো হই। কীভাবে এত দেশ, ভাষা এবং সংস্কৃতি একত্রিত হতে পারে যদি শুধুমাত্র একটি উপায় গ্রহণ করা হয়?'
ঘানিম বলেন, আমরা আপনাকে আমাদের বাড়িতে স্বাগত জানাই। আল বাইত স্টেডিয়াম বেদুঈন তাঁবুর আদলে নির্মাণ করা হয়েছে। এমন তাঁবু আরব উপদ্বীপের যাযাবর বেদুইনরা একসময় আশ্রয়ের জন্য ব্যবহার করত।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিটিএস এর জনপ্রিয় শিল্পী পারফর্ম করেন। এক নারী শিল্পি চেহারা ঢেকে পারফর্ম করলেও মঞ্চে ছিলেন না শাকিরা বা নোরা ফাতেহিরা।
উদ্ভোধনী অনুষ্ঠানে এবারের বিশ্বকাপের অফিশিয়াল মাসকাট 'লাইব' প্রদর্শিত হয়। দেখানো হয় আগের বিশ্বকাপের মাসকাটগুলোও।
কাতার সৌদি আরবের ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমানকে উদ্বোধনী অনুষ্ঠান ও উদ্বোধনী ম্যাচে নিয়ে আসতে সক্ষম হয়।
উদ্বোধনীতে আরও উপস্থিত ছিলেন জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্টোনিও গুতেরেস, আলজেরিয়ার প্রেসিডেন্ট আবদেলমাদজিদ তেবুনে, মিশরের প্রেসিডেন্ট আবদেল ফাত্তাহ এল-সিসি, সেনেগালের প্রেসিডেন্ট ম্যাকি সাল, প্যালেস্টাইনের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস এবং রোয়ান্ডার প্রেসিডেন্ট পল কাগামে।
কুয়েতের যুবরাজও উপস্থিত ছিলেন এই আয়োজনে। এছাড়াও ছিলেন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মহাপরিচালক এবং জিবুতির প্রেসিডেন্ট। জর্ডানের রাজা দ্বিতীয় আবদুল্লাহও উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে যোগ দেন।
সূত্র: খালিজ টাইমস
একে