শুরুটা ভালোই হয়েছিল আর্জেন্টিনার। ফুটবল বিস্ময় লিওনেল মেসির পা থেকে আসা দুর্দান্ত এক গোলে শুরুতেই এগিয়ে যায় আর্জেন্টিনা। হয়তো তারা ভেবেছিল সহজ জয়ে মাঠ ছাড়বেন। কিন্তু পরের অংশে যে নাটকীয়তা ভরা ছিল তা আঁচই করতে পারেনি ডি মারিয়ারা। তাদের স্বপ্নভঙ্গ করে বিশ্বকাপের প্রথম অঘটনের জন্ম দেয় সৌদি আরব।
২-১ গোলে জিতে হারের স্বাদ ভুলতে বসা আর্জেন্টিনাকে মাটিতে নামিয়ে আনে মধ্যপ্রাচ্যের দেশটি। আর সৌদির এই জয়ের পেছনে সবচেয়ে বড় অবদান ছিল দেশটির গোলরক্ষক মো. আলওয়াইসিসের। পাহাড়ের মতো গোলবারের নিচে দাঁড়িয়ে থেকে সব আক্রমণ প্রতিহত করেন। এতে একে ঠেকিয়ে দেন আর্জেন্টিনার সাত সাতটি আক্রমণ। ৬ ফুট ২ ইঞ্চির দেহের অধিকারী আলওয়াসিকে টপকে দ্বিতীয় গোল করার সুযোগ হয়নি লিওলেন মেসিদের। ফলে ২-১ গোলের হার নিয়ে মাঠ ছাড়তে হয় আর্জেন্টিনাকে।
বিজ্ঞাপন
আর্জেন্টিনার বিরুদ্ধে দুর্দান্ত এই জয়ে সৌদি আরবের জয়ের নায়ক কে হবে তা নিয়ে খেলা শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে চলছিল আলোচনা? প্রথম গোল করে সমতায় ফেরানো সালে আলশেহরি না আর্জেন্টিনার জালে দ্বিতীয় বল জড়ানো সালেম আলদাওশারি? নাকি পাহাড়ের মতো গোলবারের নিচে দাঁড়িয়ে থাকা সৌদির গোলরক্ষক আলওয়াইসি? শেষ পর্যন্ত সেরার পুরস্কারটি গেছে আলওয়াইসিসের হাতেই।
পুরো খেলায় একবার পেনাল্টি ও তিন বার অফসাইড ছাড়া তাকে পরাস্ত করতে পারেননি মেসিরা। গোটা ম্যাচে মোট সাত বার গোল বাঁচিয়েছেন আলওয়াইসি। তিনি না থাকলে হয়তো আরব্য রজনী দেখা যেত না বিশ্বকাপে।

বিজ্ঞাপন
২০১৮ সালের বিশ্বকাপে প্রথম বার খেলতে নেমেছিলেন আলওয়াসি। কিন্তু উরুগুয়ের বিরুদ্ধে একটি ম্যাচেই মাঠে নেমেছিলেন। এবারের বিশ্বকাপে প্রথম ম্যাচে খেলতে নেমেই জাত চেনালেন ৬ ফুট ২ ইঞ্চির গোলরক্ষক। খেলার শুরুতেই আলওয়াইসি বুঝিয়ে দিয়েছিলেন, গোলের নিচে তাকে ভরসা করতে পারে সৌদি।
বক্সের মধ্যে থেকে মেসির বাঁ পায়ের শট ডান দিকে ঝাঁপিয়ে আটকে দেন তিনি। নইলে খেলার শুরুতেই এগিয়ে যেত আর্জেন্টিনা।
প্রথমার্ধে এক গোলে পিছিয়ে থাকলেও দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই জোড়া গোল করে এগিয়ে যায় সৌদি। গোল শোধের জন্য আর্জেন্টিনা যখন মরিয়া ঠিক তখনই আরও শক্ত হয়ে পাহাড়ের নিচে লম্বা হয়ে দাঁড়ান আলওয়াইসি। ৬৩ মিনিটের মাথায় লাউতারো মার্তিনেজের শট আটকে দেন তিনি।

৭২ মিনিটের মাথায় গোল করার চেষ্টা করেন দি মারিয়া। কিন্তু পারেননি। বল ধরে ফেলেন আলওয়াসি। দু’মিনিট পরেই নিজের বক্স ছেড়ে বেরিয়ে এসে মার্তিনেজের পা থেকে একটি বল বার করে দেন আলওয়াসি। নইলে গোল করার সুযোগ বাড়ত মার্তিনেজের।
৮৪ মিনিটের মাথায় মেসিকে আবার আটকে দেন আলওয়াসি। দি মারিয়ার ক্রস ধরে হেডে গোল করার চেষ্টা করেন মেসি। বাঁ দিকে ঝাঁপিয়ে বল ধরে নেন আলওয়াসি।
অতিরিক্ত সময়েও দু’বার রক্ষকের ভূমিকায় অবতীর্ণ হন আলওয়াসি। একবার মার্তিনেজ ও পরের বার আলভারেজের হেড বাঁচিয়ে দেন। তাকে টপকে গোল করতে পারেননি আর্জেন্টিনার স্ট্রাইকাররা। ফলে ২-১ গোলে হেরে মাঠ ছাড়তে হয় মেসি-ডি মারিয়াদের।
এমআর































































































































































































































































































































































































































































