ইচ্ছা ছিল জেলার সব থেকে বড় গরু পালন করে টেলিভিশনে খবর হওয়ার। আর সেই ইচ্ছা থেকে গরু পালন করে এবার কোরবানির ঈদে ৩৪ লাখ টাকার দুই জোড়া মামা ভাগিনা নামের ফ্রিজিয়ান জাতের গরু বিক্রির জন্য প্রস্তুত করেছেন পশু চিকিৎসক মোস্তফা কামাল। নীলফামারী সদর উপজেলার কচুকাটা বাজিদপাড়ার বাসিন্দা মোস্তফা দীর্ঘদিন ধরে গ্রামের মানুষের গবাদী পশুর প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে আসছেন। তার দাবি মামা-ভাগিনা নামের এই গরু চারটিই জেলার সব থেকে বড় গরু।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, মোস্তফা কামালের বাড়ির খামারে বিদেশি জাতের গরু চারটির মধ্যে মামা গরু দুইটির ওজন প্রায় ৩৭ মণ ও ৩৫ মন। এছাড়াও দৈর্ঘ ১০ ফুট প্রস্থ ৬ ফুট। ৩৭ মণ ওজনের মামা গরুর দাম হাঁকা হয়েছে সাড়ে ১৩ লাখ টাকা ও ৩৫ মণ মামার দাম হাকা হয়েছে সাড়ে ১২ লাখ টাকা। এদিকে ভাগিনা গরু দুইটির ওজন ২০ মণ ও ২৫ মন। দৈর্ঘ্য সাড়ে ৮ ফুট ও প্রস্থ সাড়ে ৫ ফুট। ২৫ মণের ভাগিনার দাম ধরা হয়েছে সাড়ে ৪ লাখ টাকা ও ২০ মনের ভাগিনার দাম সাড়ে ৩ লাখ টাকা।
বিজ্ঞাপন
বিশাল আকৃতির এই গরু দেখতে প্রতিদিন সেখানে ভিড় জমাচ্ছে দুরদুরান্তের মানুষ। অনেকেই তুলছেন সেলফি, করছেন ভিডিও। আর গরু ব্যবসায়ীদের যাতায়াত তো আছেই।
জানা যায়, প্রায় ৭ বছর আগে একটি গরু দিয়ে খামার শুরু করেন মোস্তফা কামাল। এরপর টেলিভিশনে কোরবানির গরুর খবর দেখে অনুপ্রাণিত হয়ে নিজেই খবর তৈরির করবেন এমন ইচ্ছায় ১ টি গরু থেকে ২২টি গরু পেয়েছেন তিনি। এরমধ্যে ৫টি গরু বিক্রি করেন। বাকি ১৭ টি বর্তমানে খামারে রয়েছে।
ঢাকা মেইলকে মোস্তফা কামাল বলেন, আমি টিভিতে খবর দেখার পর নিজেই খবর হওয়ার জন্য গরু পালন শুরু করি। আজ জেলার সব থেকে বড় গরু আমি পালন করেছি। আমার ধারণা এর থেকে বড় গরু জেলায় নাই। বিক্রির জন প্রস্তুত গরু ৪টির পেছনে প্রতিদিন ব্যয় প্রায় ৪ হাজার টাকা। গরুগুলোকে আমি ভুসি, খড়, ধানের কুড়া ও মুসুর ডাল খাওয়াই।
তিনি আরও বলেন, আমার ইচ্ছা পূরণ হইছে, ইনশাআল্লাহ আমার বাড়িতে খবর তৈরি হয়েছে। গরুগুলোকে খুব যত্ন করে পালন করেছি।
পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জ থেকে গরুগুলো দেখতে এসেছেন মোকলেছুর রহমান। চাচা গরু ব্যবসায়ী হওয়ায় তার সাথে এখানে এসেছেন মোখলেছুর। বলেন, জীবনে অনেক গরু দেখেছি, তবে চোখের সামনে এত বড় গরু এই প্রথম দেখলাম। চাচারা দামাদামি করছে। হয়ত কিনে ফেলবে।
জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মোনাক্কা আলী বলেন, জেলায় ৩০ হাজারের বেশি মোটাতাজাকরন খামারি রয়েছেন। ঈদ ঘিরে ২ লক্ষ পশু প্রস্তুত আছে। জেলার চাহিদা মিটিয়ে ৭৫ হাজার পশু বাইরের জেলায় যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
বিজ্ঞাপন
তিনি বলেন, পঞ্চপুকুরে মামা-ভাগিনা যে গরু, সেটা সার্বক্ষণিক জেলা প্রাণী সম্পদ বিভাগের পরামর্শে লালন-পালন হয়েছে।
প্রতিনিধি/এএ