ঈদুল আজহা ঘিরে রাজধানীর ১৭ স্থানে অস্থায়ী ভাবে কোরবানির পশুর হাট বসছে। স্থায়ী হাটগুলো ছাড়াও ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে (ডিএসসিসি) ১০টি এবং ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনে (ডিএনসিসি) সাতটি পশুর হাট বসানোর বিষয় ইতোমধ্যে চূড়ান্ত হয়েছে।
জানা যায়, সিটি করপোরেশনের অস্থায়ী ১৭ হাট ছাড়াও উত্তরের গাবতলী পশুর হাট এবং দক্ষিণের সারুলিয়া পশুর হাটেও মিলবে কোরবানির পশু। চালু থাকবে ডিএনসিসি ডিজিটাল হাট। তবে করোনা ভাইরাস পরিস্থিতি বিবেচনায় স্বাস্থ্য অধিদফতর থেকে দেওয়া বার্তা অনুসরণ করবেন তারা। সময়ের সাথে নেওয়া হবে উপযুক্ত পদক্ষেপ।
বিজ্ঞাপন
এ বিষয়ে ডিএনসিসির প্রধান সম্পত্তি কর্মকর্তা মো. মোজাম্মেল হক বলেন, পশুর হাটে কী ধরনের স্বাস্থ্যবিধি মানা হবে এমন কোনো নির্দেশনা এখনো দেইনি। কোরবানির ঈদ আসতে অনেক সময় রয়েছে, এসময়ের মধ্যে করোনা পরিস্থিতি এবং সরকারি সিদ্ধান্তের আলোকে স্বাস্থ্যবিধির বিষয়টি ঠিক করা হবে। এবার ঢাকা উত্তর এলাকায় সাতটি অস্থায়ী ও একটি স্থায়ী হাট বসানোর নীতিগত সিদ্ধান্ত হয়েছে বলেও জানান তিনি।
হাটগুলোর স্থান প্রসঙ্গে জানতে চাইলে এ কর্মকর্তা বলেন, ডিএনসিসির অধীন হাটগুলো হলো- গাবতলী (স্থায়ী), বাড্ডা ইস্টার্ন হাউজিং ব্লক-ই, এফ জি এইচ পর্যন্ত এলাকার খালি জায়গা, মিরপুর সেকশন ৬ ইস্টার্ন হাউজিংয়ের খালি জায়গা, উত্তরা ১৭ নম্বর সেক্টর এলাকায় অবস্থিত বৃন্দাবন থেকে উত্তর দিকে বিজিএমইএ পর্যন্ত খালি জায়গা, ভাটারা (সাইদনগর) পশুর হাট, কাওলা শিয়ালডাঙ্গা সংলগ্ন খালি জায়গা, ৪৩ নম্বর ওয়ার্ডের ৩০০ ফিট সড়ক সংলগ্ন উত্তর পাশের সালাম স্টিল ও যমুনা হাউজিং কোম্পানির এবং ব্যক্তিগত মালিকানাধীনের খালি জায়গা এবং মোহাম্মদপুর বছিলায় ৪০ ফুট রাস্তা সংলগ্ন খালি জায়গা হাট হিসেবে থাকছে।
ডিজিটাল হাট প্রসঙ্গে জনতে চাইলে মো. মোজাম্মেল হক বলেন, করোনা পরিস্থিতি বিবেচনায় তৃতীয়বারের মতো অনলাইন হাট প্রাধান্য দিচ্ছে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন। ডিএনসিসির ডিজিটাল হাটে ই-ক্যাব এবং বাংলাদেশ ডেইরি ফার্মারস অ্যাসোসিয়েশন (বিডিএফএ) অনুমোদিত প্রতিষ্ঠানের খামারিরা পশু বিক্রি করতে পারবেন।
ডিজিটাল হাটে পশু বিক্রি প্রসঙ্গে ডিএনসিসি জানিয়েছে, ঈদুল আজহা আসতে এখনো সময় রয়েছে। স্থান ঠিক করা হয়েছে। পর্যায়ক্রমে পশু ক্রয়-বিক্রয়ের নিয়ম ঠিক করে দেওয়া হবে। তবে এ প্ল্যাটফরমে ই-ক্যাব এবং বিডিএফএর অনুমোদিত সদস্যের প্রতিষ্ঠানই কেবল অংশ নিতে পারবে। এ ছাড়া জেলা প্রশাসকদের অনুমোদিত বিক্রেতারা তাদের পশু বিক্রি করতে পারবেন। ক্রেতার নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করে এ ধরনের রক্ষণশীল কৌশল রাখা হয়েছে বলেও জানান তারা।
বিজ্ঞাপন
ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন এলাকায় একটি স্থায়ীসহ ১১টি পশুর হাট বসানো প্রসঙ্গে জানতে চাইলে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের প্রধান সম্পত্তি কর্মকর্তা রাসেল সাবরিন বলেন, ঢাকা দক্ষিণ এলাকায় এবার ১০টি অস্থায়ী পশুর হাট বসানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে। তবে কর্তৃপক্ষ মনে করলে হাটের সংখ্যা কমতেও পারে, আবার বাড়তেও পারে। তবে কমার সম্ভাবনা নেই। এর বাইরে সারুলিয়া (স্থায়ী) হাটটিতেও পশু বিক্রি হবে। স্বাস্থ্যবিধি নিয়ে আমাদের কিছু নির্দেশনা থাকবে। এর বাইরে সরকারের পক্ষ থেকে কোনো নির্দেশনা এলে সেটা বাস্তবায়ন করা হবে।
ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি) অধীন হাটগুলোর প্রসঙ্গে জানতে চাইলে এ কর্মকর্তা বলেন, মেরাদিয়া বাজারসংলগ্ন আশপাশের খালি জায়গা, দনিয়া কলেজ মাঠসংলগ্ন খালি জায়গা, ধোলাইখাল ট্রাক টার্মিনাল সংলগ্ন উন্মুক্ত জায়গা, উত্তর শাহজাহানপুর খিলগাঁও রেলগেট বাজার মৈত্রী সংঘের ক্লাব সংলগ্ন আশপাশের খালি জায়গা, হাজারীবাগ এলাকায় ইনস্টিটিউট অব লেদার টেকনোলজি মাঠ সংলগ্ন উন্মুক্ত এলাকা, আমুলিয়া মডেল টাউনের আশপাশের খালি জায়গা, লালবাগের রহমতগঞ্জ ক্লাবসংলগ্ন আশপাশের খালি জায়গা, শ্যামপুর-কদমতলী ট্রাক স্ট্যান্ড সংলগ্ন খালি জায়গা, লিটল ফ্রেন্ডস ক্লাব সংলগ্ন খালি জায়গা ও কলাপুর স্টেডিয়াম সংলগ্ন বিশ্বরোডের আশপাশের এলাকা এবং পোস্তগোলা শ্মশান ঘাট সংলগ্ন আশপাশের খালি জায়গা। এর বাইরে সারুলিয়া স্থায়ী হাটটিতে পশু বেচা-বিক্রি হবে।
উল্লেখ্য, গত বছর করোনা মহামারিতে দুই সিটি করপোরেশনের অধীনে ২৩টি (ডিএনসিসি ১০, ডিএসসিসি ১৩টি) পশুর হাট বসানো হয়েছিল।
ডিএইচডি/এএস