শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪, ঢাকা

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় সোয়া ১ লাখ কোরবানির পশু প্রস্তুত

জেলা প্রতিনিধি
প্রকাশিত: ২৮ জুন ২০২২, ১১:৩৩ এএম

শেয়ার করুন:

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় সোয়া ১ লাখ কোরবানির পশু প্রস্তুত

আসন্ন ঈদুল আজহা উপলক্ষে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার খামারগুলোতে কোরবানির জন্য ১ লাখ ১১ হাজার ৬১৭টি গরু, মহিষ ও ছাগল প্রস্তুত আছে। এতে কোরবানির ঈদে অন্তত ৭০০ কোটি টাকার পশু বেচাকেনা হবে বলে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।

প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের তথ্য মতে, জেলার খামারগুলোতে যে পরিমাণ কুরবানিযোগ্য পশু প্রস্তুত আছে- তা চাহিদার তুলনায় প্রায় ৫৯ হাজার কম। যদিও শেষ সময়ে এ সংকট থাকবে না বলে মনে করছে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর।


বিজ্ঞাপন


জানা গেছে, জেলায় খামারি আছেন ১২ হাজার ৪০০ জন। আর খামারগুলোতে দেশি, শাহীওয়াল ও ফ্রিজিয়ানসহ বিভিন্ন জাতের গরু লালন-পালন করা হচ্ছে। গত দুই বছর করোনা মহামারির কারণে প্রত্যেক খামারি কয়েক লাখ টাকা করে লোকসান গুণেছেন। এবার করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ায় সেই লোকসান কিছুটা পুষিয়ে নেওয়ার চিন্তা করেছিলেন তারা। কিন্তু গোখাদ্যের দাম বেড়ে যাওয়ায় বিপাকে পড়েছেন তারা। এতে করে গবাদি পশু পালনে খরচ বেড়েছে।

কয়েকজন খামারির সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, মাস তিনেক আগেও প্রতি বস্তা (৪০ কেজি) ভূষির মূল্য ছিল ১৩০০-১৪০০ টাকা। এখন সেই ভূষি কিনতে হচ্ছে ১৭৫০-১৮০০ টাকায়। আর খৈলের প্রতি বস্তার (৪০ কেজি) বাজারদর আগে ছিল ১৪০০-১৫০০ টাকা। এখন খৈলের বস্তার দাম ২০০০ টাকা।

এছাড়া ধানের কুড়ার দাম দ্বিগুণ হওয়ায় এখন খামারিদের কিনতে হচ্ছে ৫৫০-৬০০ টাকায়। সব মিলিয়ে খরচ বাড়লেও গবাদি পশু পালন করে খুব একটা লাভবান হতে পারছেন না খামারিরা। আর তাই পশু উৎপাদনও খুব একটা বাড়েনি। এতে করে এবার পশুর হাটগুলোতে চাহিদার তুলনায় কিছুটা সংকট দেখা দিতে পারে। আর এ সংকটের কারণে হাটে ছোট গরুর দাম স্বাভাবিকের চেয়ে ৫-১০ হাজার, মাঝারি গরু ১০-১২ হাজার এবং বড় গরুর দাম ১০-১৫ হাজার টাকা বাড়তে পারে বলে জানিয়েছেন খামারীরা।

জেলা প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের দেওয়া তথ্য মতে, এবছর জেলায় কোররবানির পশুর চাহিদা আছে ১ লাখ ৭০ হাজার ৫২০টি। এর মধ্যে জেলার খামারগুলোতে কোরবানির জন্য প্রস্তুত আছে ১ লাখ ১১ হাজার ৬১৭টি গরু, মহিষ ও ছাগল। এর ফলে এবার ৫৮ হাজার ৯০৩টি কোরবানিযোগ্য পশুর ঘাটতি রয়েছে। বিগত বছরের চাহিদা বিবেচনায় এবছরের চাহিদা নির্ধারণ করেছে প্রাণিসম্পদ বিভাগ।


বিজ্ঞাপন


COW

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার স্বপ্ন ডেইরি অ্যান্ড এগ্রো ফার্মের পরিচালক ওয়ালিউল্লাহ সরকার জানান, তাদের খামারে এবার কোরবানির উপযুক্ত ৩০টি গরু আছে। এর সবগুলোই দেশি ও শাহীওয়াল জাতের। এবার হাটে গত বছরের তুলনায় গরুর দাম কিছুটা বাড়বে। কারণ গোখাদ্যের দাম বেড়েছে। এছাড়া করোনার কারণে প্রত্যেক খামারি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন।

আরেক খামারি আব্দুল হাই জানান, গোখাদ্যের দাম হু হু করে বাড়ছে। এতে করে গরু পালনে খরচও বাড়ছে। এভাবে চলতে থাকলে গরুর ফার্মগুলোর টিকে থাকা দায় হয়ে পড়বে। এ খাতকে বাঁচিয়ে রাখতে সরকারি সহায়তা প্রয়োজন। অন্যথায় অনেক খামার বন্ধ হয়ে যাবে। তখন সংকট আরও তীব্র হবে।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া ডেইরি ফারমার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ডা. সাইফুদ্দিন খান শুভ্র জানান, খামারিরা এখনও করোনাকালীন সংকট কাটিয়ে উঠতে পারেন নি। এর মধ্যে গোখাদ্যের মূল্য বৃদ্ধি আমাদের জন্য ‘মড়ার ওপর খাঁড়ার ঘা’ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এখন যদি চোরাই পথে ভারতীয় গরু আসে, তাহলে খামারিরা পথে বসে যাবে।

জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. এ. বি. এম. সাইফুজ্জামান বলেন, ‘আমাদের হিসেবে এখন পর্যন্ত পশুর যে ঘাটতি আছে, সেটি হয়তো ঈদ আসার আগেই পূরণ হয়ে যাবে। কারণ পশুর হাটগুলোতে দেশের অন্য জেলাগুলো থেকেও পশু আসবে। এবার অন্তত ৭০০ কোটি টাকার পশু বেচাকেনা হবে বলে আমরা আশা করছি।’

টিবি

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

টাইমলাইন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর