শুক্রবার, ২২ নভেম্বর, ২০২৪, ঢাকা

ইসলামে পশু জবাইয়ের স্থান ও পরিচ্ছন্নতার গুরুত্ব

ধর্ম ডেস্ক
প্রকাশিত: ২৮ জুন ২০২৩, ০৬:১১ পিএম

শেয়ার করুন:

ইসলামে পশু জবাইয়ের স্থান ও পরিচ্ছন্নতার গুরুত্ব

ইসলামি শরিয়তে নির্দিষ্ট স্থানে কোরবানির পশু জবাইয়ের বাধ্যবাধকতা না থাকলেও নির্ধারিত স্থানে কোরবানি করা উত্তম। যাতে পরিচ্ছন্নতা বজায় থাকে এবং যত্রতত্র আবর্জনাময় দুর্গন্ধময় পরিবেশ তৈরি না হয়। নবীজির যুগে শহর বা বসতির এক প্রান্তে কোরবানি হত এবং যেখানে সমাজের পশুগুলো একত্র করার পর জবাই দেওয়া হত। আবদুল্লাহ ইবনে ওমর (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ (স.) ঈদগাহে পশু জবাই বা নহর করতেন। নাসায়ি: ১৫৮৯)

আলোচ্য হাদিসে ‘করতেন’ শব্দটি দ্বারা ধারাবাহিকতা ও অভ্যাস বোঝায়। তাই আমাদেরও পরিচ্ছন্নতার তাগিদে জনসমাগম থেকে দূরত্ব বজায় রেখে পশু জবাই করা উচিত। তবে ইসলামি আইনজ্ঞদের মতে, যেকোনো স্থানে কোরবানি করলে তা শুদ্ধ হয়ে যাবে। শায়খ মুহাম্মদ বিন সালিহ আল-উসাইমিন (রহ.) বলেন, এ হাদিস দ্বারা প্রমাণিত হয়, ইমামদের জন্য ঈদগাহে পশু কোরবানি করা উচিত। তবে নামাজের স্থানে নয়; বরং তার কাছাকাছি স্থানে পশু কোরবানি করবে। কেননা সেজদার স্থানে নাপাক রক্ত প্রবাহিত করা জায়েজ নয়। নবীজি (স.) ঈদগাহ থেকে বের হয়ে (নিকটবর্তী স্থানে) পশু কোরবানি করতেন। (শরহুল বুখারি) কোরবানির স্থান, কোরবানির পশু জবাই করার স্থান, যে স্থানে পশু জবাই করবেন


বিজ্ঞাপন


আল্লামা আনোয়ার শাহ কাশ্মীরি (রহ.) উক্ত হাদিসের আলোকে বলেন, একইভাবে ঈদগাহে পশু কোরবানি করা মোস্তাহাব। (ফয়জুল বারি)

উল্লিখিত আলোচনা থেকে প্রমাণিত হয়, কোরবানির পশুর বর্জ্য অপসারণ, পরিচ্ছন্নতা ও স্বাস্থ্য সুরক্ষার স্বার্থে পশু কোরবানির জন্য স্থান নির্ধারণ করার অবকাশ ইসলামি শরিয়তে আছে। বিষয়টি শরয়ি বিধানের অনুকূল। তবে কাউকে নির্ধারিত স্থানে পশু কোরবানি করতে জোর প্রয়োগ করা উচিত হবে না। কেননা শরিয়ত তাকে তার ব্যক্তিগত পছন্দ ও তার জন্য নিরাপদ স্থানে পশু কোরবানি করার অবকাশ দিয়েছে। কোরবানী পরিচ্ছন্নতা

এক্ষেত্রে সাধারণ মানুষকে নির্ধারিত স্থানে পশু কোরবানি করতে, নির্ধারিত স্থানে বর্জ্য ফেলতে এবং রোগ-ব্যধি প্রতিরোধে ব্যবস্থা নিতে উৎসাহিত করা যেতে পারে, সামাজিক সচেতনতামূলক কর্মসূচি গ্রহণ করা যেতে পারে। কোরবানির কারণে দুর্গন্ধ, অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ

সবচেয়ে বড় কথা হলো- পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা ঈমানের অঙ্গ। আল্লাহ পরিচ্ছন্নতাকে ভালোবাসেন। তাই আমাদেরকে ব্যক্তিগত তাগিদে পরিচ্ছন্নতার গুরুত্ব উপলব্ধি করতে হবে এবং যথাযথ জায়গায় পশু জবাই করতে হবে। ইরশাদ হয়েছে, ‘নিশ্চয়ই আল্লাহ তাওবাকারীদের ভালোবাসেন এবং ভালোবাসেন অধিক পবিত্রতা অর্জনকারীদের।’ (সুরা বাকারা: ২২২)


বিজ্ঞাপন


অসচেতনতার কারণে নোংরা ও অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ তৈরি হলে গুনাহগার হতে হবে। একজন মুমিন কখনো অন্যের কষ্টের কারণ হতে পারে না। সে যত্রতত্র ময়লা ফেলে পরিবেশ দূষণ করতে পারে না। কেননা রাসুলুল্লাহ (স.) বলেন, ‘তোমরা অভিশাপকারী দুটি কাজ থেকে বেঁচে থাকো। সাহাবিরা জিজ্ঞাসা করলেন, হে আল্লাহর রাসুল (স.), অভিশাপকারী  কাজ দুটি কী? তিনি বলেন, যে মানুষের চলাচলের রাস্তায় কিংবা গাছের ছায়ায় মলমূত্র ত্যাগ করে।’ (আবু দাউদ: ২৫) 

এ ছাড়া নবীজি (স.)-এর নির্দেশ হলো, ‘তোমরা তোমাদের ঘরের আঙিনাগুলো পরিচ্ছন্ন রাখবে। (তিরমিজি: ২৭৯৯) আসুন আমরা সবাই নির্ধারিত স্থানে কোরবানি করি, নিজ দায়িত্বে ঘর-বাড়ি, এলাকা পরিষ্কার রাখি। আল্লাহ আমাদের সেই তাওফিক দান করুন। আমিন। কোথায় কোরবানির পশু জবাই করা উচিত?

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

টাইমলাইন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর