রোববার, ২৮ এপ্রিল, ২০২৪, ঢাকা

কোরবানির সঙ্গে আকিকা, ছেলে সন্তানের জন্য কত অংশ জরুরি?

ধর্ম ডেস্ক
প্রকাশিত: ২২ জুন ২০২৩, ০৩:৫০ পিএম

শেয়ার করুন:

কোরবানির সঙ্গে আকিকা, ছেলে সন্তানের জন্য কত অংশ জরুরি?

কোরবানি ও আকিকা আলাদা আমল হওয়ায় একত্রে না করা উত্তম। তবে, একত্রে করলেও আদায় হয়ে যাবে। কারণ আকিকাও এক ধরনের কোরবানি। হাদিসে আকিকার ওপরও ‘নুসুক’ শব্দের প্রয়োগ হয়েছে। যার অর্থ কোরবানি।

আলেমদের মতে, আকিকাও যেহেতু ‘নুসুক’ বা কোরবানি তাই এ মূলনীতিতে কোরবানির পশুতে সন্তানের আকিকা দেওয়া দোষণীয় নয়। এতে কোরবানি ও আকিকা দুইটিই শুদ্ধ হবে। ফতোয়ার বিখ্যাত কিতাব শামিসহ অন্যান্য কিতাবাদিতে বলা হয়েছে যে, কোরবানির সাথে আকিকা শুদ্ধ। (রদ্দুল মুখতার: ৬/৩২৬; হাশিয়াতুত তহতাভি আলাদ্দুর: ৪/১১৬)


বিজ্ঞাপন


কোরবানির গরু, মহিষ ও উটে আকিকার নিয়তে শরিক হলে ছেলের আকিকার জন্য দুই অংশ আর মেয়ের জন্য এক অংশ দিতে হবে। (ইলাউস সুনান: ১৭/১২৬) কোরবানির সঙ্গে আকিকা, ছেলে সন্তানের জন্য আকিকা, মেয়ে সন্তানের জন্য আকিকা

উত্তম হলো- পুত্র সন্তান হলে দুটি আর কন্যাসন্তান হলে একটি ছাগল দ্বারা আকিকা করা। কেননা, রাসুলুল্লাহ (স.)-কে আকিকা সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলে তিনি বলেন, পুত্রসন্তানের পক্ষ থেকে দুটি ছাগল আর কন্যাসন্তানের পক্ষ থেকে একটি ছাগল জবাই করবে। (জামে তিরমিজি: ১/১৮৩)

তবে, কোরবানির পশুতে ছেলে সন্তানের জন্য এক অংশ নিলেও অথবা আলাদা একটি ছাগল জবাই করলেও আকিকা আদায় হবে। যদিও উত্তম হলো দুটি ছাগল জবাই করা। দলিল হলো- ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত, নিশ্চয় রাসুল (স.) হজরত হাসান (রা.) এবং হজরত হুসাইন (রা.)-এর জন্য একটি একটি বকরি আকিকা দিয়েছেন। (আবু দাউদ: ২৮৪১)

ছাগল ছাড়াও উট, গরু, মহিষ, ভেড়া ও দুম্বা দিয়েও আকিকা করা জায়েজ। (আলমুজামুল আউসাত: ৩৭১; আবু দাউদ: ২/৩৯২)


বিজ্ঞাপন


আল্লাহ তাআলার শুকরিয়া আদায়ের উদ্দেশে সন্তান জন্মের সপ্তম দিনে পশু জবাই করাকে আকিকা বলে। আকিকা করা মোস্তাহাব। হাদিসে আকিকার প্রতি উৎসাহিত করা হয়েছে। রাসুল (স.)-কে আকিকা সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলে তিনি বলেন, যে ব্যক্তি সন্তানের আকিকা করার ইচ্ছা করে, সে যেন তা পালন করে। ছেলের জন্য সমমানের দুইটি ছাগল। আর মেয়ের জন্য একটি। (মুসান্নাফে আব্দুর রাজ্জাক: ৭৯৬১)

আকিকার গোশত সন্তানের মা-বাবা ও অন্যান্য আত্মীয়-স্বজন এবং ধনি-গরিব সকলেই খেতে পারবে। আকিকার গোশতের বণ্টন ও ব্যাবহার কোরবানির গোশতের মতই । অর্থাৎ কিছু গোশত নিজেদের জন্য রাখা, কিছু আত্মীয়-স্বজনকে দেওয়া এবং কিছু গোশত গরিবদের সদকা করা। (মুসতাদরাকে হাকেম: ৭৬৬৯ ইলাউস সুনান: ১৭/১১৮ ফতোয়ায়ে হিন্দিয়া: ৫/৩০৪) কোরবানির সঙ্গে আকিকা

‘শৈশবে আকিকা করা না হলে বড় হওয়ার পরও আকিকা করা যাবে। যার আকিকা সে এবং তার মা-বাবাও আকিকার গোশত খেতে পারবে।’ (ইলাউস সুনান: ১৭/১২৬) কুরবানীর সাথে আকীকা, কন্যা সন্তানের জন্য আকীকা, পুত্র সন্তানের জন্য আকীকা

আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আকিকার গোশত নিজে খাবে, অন্যকে খাওয়াবে এবং কিছু সদকা করবে। (মুসতাদরাকে হাকেম: ৭৬৬৯)

অন্য হাদিসে আছে, সন্তানের সঙ্গে আকিকার বিধান রয়েছে। তোমরা তার পক্ষ থেকে রক্ত প্রবাহিত কর (অর্থাৎ পশু জবাই করো) এবং সন্তানের শরীর থেকে কষ্টদায়ক বস্তু (চুল) দূর করে দাও। (বুখারি: ৫৪৭২)

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে কোরবানি ও আকিকা সুন্নাহ মেনে যথাযথভাবে আদায় করার তাওফিক দান করুন। আমিন।

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

টাইমলাইন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর