শুক্রবার, ২২ নভেম্বর, ২০২৪, ঢাকা

নড়াইল কোরবানির পশুর হাট: দেশি জাতের মাঝারি গরুর চাহিদা বেশি

মো.হাবিবুর রহমান
প্রকাশিত: ২৬ জুন ২০২৩, ১২:২৫ পিএম

শেয়ার করুন:

নড়াইল কোরবানির পশুর হাট: দেশি জাতের মাঝারি গরুর চাহিদা বেশি

নড়াইলে শেষ সময়ে কোরবানির পশুর হাটে মানুষের উপচে পড়া ভিড় লক্ষ করা গেছে। এখন পশুর হাটে ছুটছেন সবাই। এতে হাসি ফুটেছে পশু বিক্রেতাদের মুখেও। এখন কেবল দরদাম নয়, কোরবানির পশু কেনাবেচাও শুরু হয়েছে জোরতালে। তাই সাধ ও সাধ্যের সমন্বয় ঘটিয়ে কোরবানির জন্য হাটের সেরা পশুটিই কিনতে চাইছেন সবাই।

গেল বারের মতো এ বছরেও হাটে দেশি জাতের মাঝারি গরুর চাহিদাই বেশি। তবে গত বছরের তুলনায় এ বছর গরুর দাম বেশি বলে অভিযোগ বিক্রেতাদের। এদিকে দাম ছাড়তে নারাজ বিক্রেতারা। আবার দাম দরে মিলে গেলেই পশু নিয়ে হাট ছাড়ছেন ক্রেতারা।


বিজ্ঞাপন


সরেজমিন ঘুরে জেলার মাইজপাড়া হাট, নাকসী বাজার, লোহাগড়া বাজার, শিয়রবর, লাহুড়িয়া, দিঘলিয়া, পশুর হাটে সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, প্রতিটি পশুর হাটে বিপুল পরিমাণ গরু-ছাগল, মহিষ বিক্রির জন্য হাটে নিয়ে আসছেন বিক্রেতারা।

বিক্রেতা মো. লিন্টু ঠাকুর, গোলজার মৃধা বলেন, গত বছরের চেয়ে এ বছর দেশীয় পদ্ধতিতে আমরা গরু-ছাগল মোটাতাজা করতে টাকা খরচ করেছি। তাই কোরবানির হাটে পশুগ্রুলোর দাম একটু বেশি রয়েছে। কিন্তু আমরা যদি গরুর দাম দেড় লাখ চাই তাহলে ক্রেতারা তার দাম বলেন ৮০ থেকে ৯০ হাজার আর যদি এক লাখ চাই তাহলে ক্রেতারা বলেন ৬০ থেকে ৭০ হাজার। কোনো কোনো ক্রেতা দাম বেশি দিয়ে কিনে নেন। আবার কিছু ক্রেতা দাম শুনে চলে যান।

তারা আরও বলেন, বেশি দামে বিক্রি করতে না পারলে তাদের অনেক লোকসান গুনতে হবে। এ নিয়ে দুশ্চিন্তায় রয়েছেন তারা।

লোহাগড়া হাটে গরু কিতে আসা উপজেলার চাচই গ্রামের শিকদার সাহাবুদ্দিন সাবু বলেন, হাটে গরু প্রচুর কিন্তু দাম বেশি। তার পরও কোরবানির গরু কিনতেই হবে।


বিজ্ঞাপন


Narail

গরু কিনতে আসা আর এক ক্রেতা মরিচ পাশা গ্রামের মতিয়ার রহমান বলেন, ঈদের শেষ সময়ে গরুর একটু দাম থাকবেই সেটা আমরাও জানি। তারপরও তুলনামূলকভাবে হাটে গরুর দাম কিছুটা বেশি।

ক্রেতা হেলালউদ্দিন, মহব্বত হোসেন, দেলোয়ার হোসেন, ইব্রাহিম সরদার বলেন, কোরবানির পশু কেনার জন্য হাটে এসেছি। কিন্তু বিক্রেতারা গত বছরের চেয়ে এ বছর দাম অনেক বেশি চাচ্ছেন। ফলে সামর্থ্য অনুযায়ী পশু কিনতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। তারা আরও জানান, এক-দুইদিন হাটে যাব। ‍যদি দাম কিছুটা কমে তাহলে ভালো নাহলে বেশি দামেই কিনতে হবে।

নড়াইলের পুলিশ সুপার সাদিরা খাতুন বলেন, পবিত্র ঈদ-উল-আযহা উপলক্ষে কোরবানির পশুর হাটে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। পশুর হাটে চাঁদাবাজিসহ সব ধরনের অপরাধ নিয়ন্ত্রণ ও সাধারণ জনগণ যাতে নির্বিঘ্নে কোরবানির জন্য পশু কিনতে পারে সে জন্য নজরদারি বাড়াতে পুলিশ, ব্যাংক কর্মকর্তা ও ইজারাদারদের সমন্বয়ে অস্থায়ী কন্ট্রোলরুম স্থাপন করা হয়েছে।

এছাড়া গরু ও ছাগল সুস্থ আছে কি না তা যাচাই করার জন্য কন্ট্রোলরুমে পশু ডাক্তার উপস্থিত থাকার বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে। জাল টাকার বিস্তার রোধে জাল টাকা শনাক্তকরণের মেশিন রাখা হয়েছে। পশুরহাটে মানুষের জানমালের নিরাপত্তা, টাকা ছিনতাই রোধ, মলম ও অজ্ঞান পার্টির তৎপরতা নিয়ন্ত্রণের লক্ষে ডিবির টহল টিম থাকবে। এছাড়া সাদা পোশাকে পুলিশ সার্বক্ষণিক নজরদারি করবে।

নড়াইল জেলা প্রাণিসম্পদ অফিসের তথ্য অনুযায়ী জেলায় এবার কোরবানিযোগ্য গবাদি পশু মজুদ আছে ৫৪ হাজার ৪৯০টি। কোরবানির জন্য পশুর চাহিদা রয়েছে ৩২ হাজার ১৪৫টি। অর্থাৎ ২২ হাজার ৭৭৫টি গবাদি পশু উদ্বৃত্ত রয়েছে।

এবারের কোরবানিতে নড়াইল জেলায় ৩টি উপজেলা নড়াইল সদর, লোহাগড়া ও কালিয়ায় ৪ হাজার ৫৯৯টি খামারে কৃষকের মজুদ থাকা গবাদি পশুর মধ্যে ষাঁড় রয়েছে ১২ হাজার ৯৫৮টি, বলদ ২ হাজার ৫৭১টি এবং গাভী রয়েছে ৪ হাজার ১৬৯টি। মোট গরুর সংখ্যা ১৯হাজার ৬৯৮টি। এছাড়া ছাগল এবং ভেড়া রয়েছে ৩৫ হাজার ১৯২টি। যার মধ্যে ছাগল ৩৫ হাজার ১০৩টি এবং ৮৯টি ভেড়া রয়েছে।

প্রতিনিধি/এসএস

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

টাইমলাইন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর