শেরপুর পৌর শহরের কান্দা পাড়া মহল্লার তরুণ তাহমিদ ইশরাক অলিদ। ২০১৮ সালে শেরপুরের আইডিয়াল প্রি-প্রারেটরি এন্ড হাইস্কুল থেকে এসএসসি পাশ করে এখন ময়মনসিংহের আনন্দমোহন কলেজে অধ্যয়নরত আছেন। এবারের কোরবানির হাট মাতাতে প্রস্তুত তরুণ উদ্যোক্তা ও শিক্ষার্থী অলিদের ‘রাজা’, ‘বাদশা’ ও ‘জমিদার’ নামের তিনটি ষাঁড়। যা ওজন আকৃতি ও সৌন্দর্যে নজর কাড়ছে সকলের। প্রতিদিনই দূর-দূরান্ত থেকে দর্শনার্থীরা আসছেন ষাঁড়গুলো দেখতে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, লেখাপড়ার পাশাপাশি পরিবারের সহায়তায় প্রতিবছরই কোরবানির জন্য ষাঁড় লালন-পালন করেন তিনি।
গেল বছর শেরপুরের ‘বস’ নামের একটি ষাঁড় লালন-পালন করে সবার নজরে আসেন অলিদ। সাত লাখ টাকা দাম হাঁকিয়ে সাড়ে পাঁচ লাখে বিক্রি করেন বসকে। এতে বেশ লাভবানও হন তিনি।
বিজ্ঞাপন
শেরপুরের সবচেয়ে বড় কোরবানির হাট নৌহাটা পৌর গরুর হাটে গত বৃহস্পতিবার রাজা, বাদশা ও জমিদারদের হাটে সবার দৃষ্টি কাড়েন। এদের মধ্যে জমিদার সাড়ে ৬ লাখ, বাদশা সাড়ে ৫ লাখ ও কালো রাজার দাম ৪ লাখ টাকা হাঁকাচ্ছেন অলিদ। তিনি ঢাকা মেইলকে বলেন, পরিবারের সহযোগিতায় পড়াশোনার পাশাপাশি ষাঁড় লালন-পালন করি।
জানান, কোরবানি উপলক্ষে গরু পোষা তার শখ৷ শুধু শখ নয়, এর মধ্য দিয়ে বছরে একটা বাড়তি আয়ও করেন তিনি৷ ষাঁড় তিনটির মধ্যে ‘রাজা’ ও ‘বাদশাহ’ শান্ত স্বভাবের, আর ‘জমিদার’ খুবই রাগী এবং উচ্ছৃঙ্খল।
‘রাজার ওজন আনুমানিক ২৬ মণ, বাদশাহর ওজন আনুমানিক ২৩ মণ আর জমিদারের ওজন আনুমানিক ৩০ মণ।’
অলিদ বলেন, ‘এবার গরুর খাবার ভুসি, খৈল, কুড়া, লবণ ও খড়ের দাম আগের চেয়ে অনেক বেশি। গরুর লালন-পালন করার খরচ অন্য বছরের চেয়ে এবার বেশি হয়েছে। খুব যত্ন করে ষাঁড়গুলো লালনপালন করেছি।’
পৌর শহরের মোবারকপুর মহল্লা হতে গরু দেখতে আসা আবু সাঈদ বলেন, ‘অলিদ প্রাকৃতিক খাবার খাইয়ে ষাঁড় লালন-পালন করে বলে শুনেছি। গতবারও ‘বস’ নামের একটা গরু বাজারে তুলেছিল। ভালো দামে বিক্রি করেছে। এ গরুগুলো দেখে আমাগোর খুব ভালো লেগেছে। আমিও অলিদের মতো কোরবানির ষাঁড় পালন করতে আগ্রহী।’
সদরের চরশেরপুর ইউনিয়নের সাবেক ইউপি সদস্য নাঈম আহম্মেদ মনি বলেন, ‘একজন শিক্ষার্থীর এমন উদ্যোগকে প্রথমে স্বাগত জানাই। অলিদের ষাঁড় তিনটাকে দেখে অনেক ভালো লাগলো। দেখেই মনে হচ্ছে সুস্থ। আমার ইচ্ছে ছিল তিনটার মধ্যে ছোটটা নিমু, কিন্তু দামে বনিবানা হয়নি। আমার বাজেট আরেকটু কম।’
সদর উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা৷ ডা. পলাশ কান্তি ঢাকা মেইলকে বলেন, অলিদের রাজা, বাদশাহ ও জমিদার তিনটি গরুই সুস্থ সবল। গতবার তার ‘বস’ বেশ সাড়া জাগিয়েছিল।
বিজ্ঞাপন
জেলা প্রাণী সম্পদক কর্মকর্তা ডা. মোস্তাফিজুর রহমান ঢাকা মেইলকে জানান, এ বছর জেলায় কোরবানির গরুর উৎপাদন ৮৩ হাজার ৪শ ১৭টি, বিপরীতে চাহিদা রয়েছে ৫৫ হাজার ৪শ ৬৫টি। এছাড়া জেলার পাঁচটি উপজেলায় মোট ২৭টি কোরবানির হাট ও ৬টি অনলাইন প্ল্যাটফর্ম রয়েছে। জেলা প্রাণিসম্পদ অফিসের উদ্যোগে পুরো জেলায় ২৩টি ভেটেনারী মেডিক্যাল টিম কাজ করছে।
প্রতিনিধি/এএ