শুক্রবার, ২২ নভেম্বর, ২০২৪, ঢাকা

প্রস্তুত চামড়া ব্যবসায়ীরা, দুশ্চিন্তা লবণের দাম নিয়ে

তানভীর আহমেদ
প্রকাশিত: ০৯ জুলাই ২০২২, ০৬:০০ পিএম

শেয়ার করুন:

প্রস্তুত চামড়া ব্যবসায়ীরা, দুশ্চিন্তা লবণের দাম নিয়ে
ফাইল ছবি

আগামীকাল রোববার (১০ জুলাই) দেশে উদযাপিত হবে পবিত্র ঈদুল আজহা বা কোরবানির ঈদ। এদিন লাখ লাখ পশু কোরবানি দেবেন। এজন্য পশুর চামড়া কিনতে প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে ব্যবসায়ীরা। চামড়া যাতে নষ্ট না হয় সেই প্রস্তুতিও নিচ্ছেন আড়তদাররা। ঈদের দিন সকাল থেকেই চামড়া সংগ্রহের প্রক্রিয়া শুরু করবেন তারা।

ব্যবসায়ীরা জানান, সাধারণত কোরবানির পশুর চামড়া ছাড়ানোর চার থেকে নয় ঘণ্টার মধ্যে লবণ দিয়ে সংরক্ষণের ব্যবস্থা করতে হয়। তা না হলে ওই চামড়া নষ্ট হয়ে যায়। চলতি বছর বাজারে লবণের দাম বেড়েছে। সেটা নিয়ে তারা দুশ্চিন্তায় রয়েছেন।


বিজ্ঞাপন


ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, গত বছরের তুলনায় এ বছর লবণের দাম বস্তাপ্রতি ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকা বেড়েছে। গত কোরবানির সময় ৭৪ কেজির লবণের বস্তার দাম ছিল ৬৭০ থেকে ৭০০ টাকা। গত রোজার ঈদ পর্যন্ত দাম ছিল বস্তাপ্রতি ৮০০ টাকা। কিন্তু গত দেড় মাসে ক্রমান্বয়ে দাম বেড়েছে। এখন তা ৮০০ টাকায় ঠেকেছে।

করোনার কারণে গত দুই বছর তেমন একটা ব্যবসা না হলেও এবার আশাবাদী তারা। এবার কোনো অবস্থায় যেন চামড়া নষ্ট না হয়, সেই প্রস্তুতিও নিচ্ছেন চামড়া ব্যবসায়ীরা।

পুরান ঢাকার লালবাগের পোস্তা এলাকায় খোঁজ নিয়ে জানা যায়, পাইকারি ব্যবসায়ীরা চামড়া সংরক্ষণের প্রস্তুতি নিচ্ছেন। সে জন্য আগেভাগে অনেকেই লবণ কিনে রেখেছেন।

পোস্তার চামড়া ব্যবসায়ীরা খলিকুর রহমান ঢাকা মেইলকে জানান, সারা বছরের চামড়ার প্রায় অর্ধেকই আসে কোরবানির ঈদের মৌসুমে। তাই এ সময়ের জন্য বাড়তি প্রস্তুতি রাখতে হয় তাদের।


বিজ্ঞাপন


কোরবানির ঈদের দিন সকাল থেকেই চামড়া সংগ্রহের প্রক্রিয়া শুরু করেন পোস্তার আড়তদারেরা। মৌসুমি ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে চামড়া কেনেন তারা। ঈদের তৃতীয় দিন পর্যন্ত চলে চামড়া সংগ্রহ ও সংরক্ষণের কার্যক্রম।

পোস্তার ব্যবসায়ীরা জানান, সাধারণত কোরবানির পশুর চামড়া ছাড়ানোর চার থেকে নয় ঘণ্টার মধ্যে লবণ দিয়ে সংরক্ষণের ব্যবস্থা করতে হয়; তা না হলে ওই চামড়া নষ্ট হয়ে যায়। তাই এ বছর চামড়া সংরক্ষণের দিকেই বেশি নজর দিচ্ছেন আড়তদারেরা।

চামড়া সংগ্রহে ট্যানারিগুলোর প্রস্তুতি সম্পর্কে বাংলাদেশ ট্যানার্স অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান শাহীন আহমেদ ঢাকা মেইলকে বলেন, যেসব ট্যানারি ব্যবসা করছে, তারা সবাই প্রস্তুতি নিয়েছে। চামড়ায় সঠিক সময়ে লবণ দিয়ে সংরক্ষণের জন্য সব মোকাম ও আড়তে লবণ সংগ্রহ করা আছে। পাশাপাশি চামড়া ক্রয়-বিক্রয়ের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যাপারি ও আড়তদাররাও আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন। ইতোমধ্যে চামড়া কেনার জন্য প্রয়োজনীয় টাকা আমরা তাদের দিয়েছি। সব মিলিয়ে আমরা মনে করি, গত দুই বছরের তুলনায় চলতি বছর চামড়া সংগ্রহ, সংরক্ষণ, ক্রয়-বিক্রয় ভালো হবে।

শাহীন আরও বলেন, প্রান্তিক পর্যায়ে কোরবানিদাতারা যেন সঠিক সময়ে লবণ দিয়ে চামড়া সংরক্ষণ করেন, সে জন্য প্রচার-প্রচারণা চালাচ্ছে সরকার। লবণ দিয়ে চামড়া সংরক্ষণ করলেই কিন্তু মধ্যস্বত্বভোগীরা সস্তায় চামড়া কেনার সুযোগ পাবেন না। গরুর চামড়ায় ছয়-সাত কেজি লবণ দিতে হবে, খাসির চামড়ায় দেড় থেকে দুই কেজি লবণ দিলেই চলে। এই চামড়া ভাঁজ করে দুই মাস রেখে দিলেও সমস্যা হবে না। সঠিক দামে বিক্রি করতে শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় কোরবানির প্রথম সাত দিন ঢাকার বাইরের চামড়া ঢুকতে দেবে না। ঢাকার চামড়াও বাইরে যেতে দেওয়া হবে না। সিদ্ধান্তটি খুবই ভালো হয়েছে। কারণ, পুরান ঢাকার পোস্তায় ঈদের এত পরিমাণ চামড়া চলে আসে যে তা লবণ দিয়ে সংরক্ষণ করা তাদের সক্ষমতার বাইরে।

টিএ/জেবি

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

টাইমলাইন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর