কোরবানি ইসলামের একটি শিয়ার বা মহান নিদর্শন। আল্লাহ তাআলা কোরবানির নির্দেশ দিয়ে বলেন—‘আপনি আপনার রবের উদ্দেশ্যে নামাজ পড়ুন এবং কোরবানি আদায় করুন।’ (সুরা কাউসার: ২)
কোরবানির দিনগুলোতে অর্থাৎ ‘১০ জিলহজ ফজর থেকে ১২ জিলহজ সূর্যাস্ত পর্যন্ত সময়ের মধ্যে যদি কোনো সুস্থ মস্তিষ্ক, প্রাপ্তবয়স্ক, মুসলিম নর-নারী ঋণমুক্ত থাকা অবস্থায় প্রয়োজনের অতিরিক্ত নিসাব পরিমাণ সম্পদের মালিক হয়, তবে তার কোরবানি করা ওয়াজিব।’ (রদ্দুল মুখতার: ৬/৩১২)
বিজ্ঞাপন
নিসাবের পরিমাণ হলো- স্বর্ণের ক্ষেত্রে সাড়ে ৭ ভরি এবং রুপার ক্ষেত্রে সাড়ে ৫২ ভরি। টাকাপয়সা ও অন্যান্য বস্তুর ক্ষেত্রে নিসাব হলো এর মূল্য সাড়ে ৫২ ভরি রুপার মূল্যের সমপরিমাণ হওয়া। প্রয়োজনের অতিরিক্ত ভিন্ন ভিন্ন বস্তুর একত্র মূল্যের পরিমাণ সাড়ে ৫২ ভরি রুপার মূল্যের সমান হলেও কোরবানি ওয়াজিব হবে। (আলমুহিতুল বুরহানি: ৮/৪৫৫; ফতোয়া তাতারখানিয়া: ১৭/৪০৫)
প্রশ্ন হলো- কোনো চাকরিজীবী বেতনের টাকা সময়মতো পেলে কোরবানি ওয়াজিব হত। কিন্তু প্রতিষ্ঠান ঠিকমতো টাকাটা দেয়নি। এই অবস্থায় তাকে কি ঋণ করে কোরবানি করতে হবে? অথবা অন্যকোনো করণীয় আছে? বেতনের টাকায় কোরবানি
এর উত্তর হলো—এই অবস্থায় তার ওপর কোরবানি ওয়াজিব হয়নি। শরিয়তের বিধান হলো- উসুল হওয়ার পর থেকেই কেবল জাকাত-কোরবানি ইত্যাদি বিধান প্রযোজ্য হয়। উসুলের আগে নয়। প্রতিষ্ঠান কমিটমেন্ট অনুযায়ী যথাসময়ে বেতন দিতে না পারলে তা কর্মচারীর একটি হক তথা প্রাপ্য হিসেবে গণ্য হয়। তাতে কর্মচারীর মালিকানা প্রতিষ্ঠিত হয় না। আর জাকাত-কোরবানি ইত্যাদির সম্পর্ক মালিকানার সাথে। হকের সাথে নয়।
(বাদায়েউস সানায়ে: ২/৯, ৪/৬১; মাবসুত, সারাখসি: ২/১৯৬; হেদায়া: ৩/২৭৮; আলবাহরুর রায়েক: ২/২০৮, ৭/৩০০; আদ্দুররুল মুখতার: ২/৩০৬; রদ্দুল মুহতার: ৬/১০; জাদিদ মাসায়েল কে শরঈ আহকাম, শফী রহ. ৬৪-৬৫) ঋণ উসূল না হলে কোরবানি