সিরাজগঞ্জের খামার থেকে এক লাখ ২০ হাজার টাকায় সুঠাম দেহের এক গরু কিনে নিয়ে এসেছেন পুরান ঢাকার বাংলাবাজারের ব্যবসায়ী এন ইসলাম গ্রুপের মালিক। ভিক্টোরিয়া পার্কের সামনে থেকে দুজন গরুটির মুখের দুই পাশে রশি ধরে লালকুঠির দিকে হাঁটছেন। কিন্তু শক্তিমান গরু বারবার ছুটে যেতে মরিয়া।
গরুর সঙ্গে শক্তি খাটিয়ে হাঁটতে হাঁটতে যে কাজটি দুই দুজন মানুষকে করতে হচ্ছে সেটি হলো- গরুর দাম কত তার উত্তর দেওয়া।
বিজ্ঞাপন
ভিক্টোরিয়া পার্ক মসজিদ থেকে লালকুঠি পর্যন্ত তাদের সঙ্গে এই প্রতিবেদকও ছিলেন। এই সময়ের মধ্যে কমপক্ষে অর্ধশতাধিক মানুষের কাছে গরুর দাম বলতে হয়েছে তাদের।
এক পর্যায়ে একজন জানতে চাইলে অনেক জোরে এক লাখ ২০ হাজার বলে মৃদু হেসে ওঠেন গরু নিয়ে লোকটি।
এমন দৃশ্য শুধু এইখানেই নয়, কোরবানির ঈদের গরু-ছাগল বা পছন্দের পশু কেনার পর বাসায় ফেরা পর্যন্ত দাম না বলে পার পাওয়ার সুযোগ নেই। অবশ্য যারা গরু কিনেন তারা একসঙ্গে একাধিক লোক থাকায় দাম বলতে এক ধরণের আনন্দও পান।
বিজ্ঞাপন
একজন খেয়াল না করলেও অন্যজনকে দাম বলে প্রশ্নকারীর আগ্রহ মেটাতেও দেখা যায়। বিশেষ করে কিশোর বয়সী যারা বাজার থেকে গরু কেনার সঙ্গী হন তাদের কাছে দাম বলা যেন ঈদের বাড়তি আনন্দ নিয়ে আসে।
হাটের আশপাশে লক্ষ্য করা গেছে, যারা দাম জানতে চান তাদের কেউ কেউ পূর্বেকার বাজারের সঙ্গে এবারের বাজারের দাম নিয়ে পর্যালোচনাও করেন নিজেদের মধ্যে।
অনেককে দাম জিজ্ঞেস করার পাশাপাশি কোন হাট থেকে কেনা হয়েছে তাও জেনে নিতে দেখা গেছে। তবে শুধু যে গরুর ক্ষেত্রেই এমনটা হয় তা কিন্তু নয়। বিশেষ করে বড় আকারে ছাগল কিনলেও দাম না বলে যাওয়ার সুযোগ মিলছে না।
তবে রাজধানীর সড়কে বারবার দাম বলার হাত থেকে বাঁচতে ভিন্ন কৌশল নিতেও দেখা গেছে। গরুর সঙ্গে প্লাকার্ডে দাম লিখে হাতে তুলে নিয়ে যেতে দেখা যায়। যাতে ইংরেজীতে লেখা ছিল ৭৭ হাজার টাকা।
সাংবাদিক ফরহাদ হোসেন এমন একটি ছবি ফেসবুকে পোস্ট করে লিখেছেন, এই সিস্টেমটা ভালো লাগছে। বার বার দাম বলতে বলতে মুখ ব্যথা হয়ে যায়। এই রকম কার্ড ব্যবহার করাই ভালো। আবারো বলি, কোরবানি একটা ইবাদত। এর ভাবগাম্ভীর্য নষ্ট হয়ে বাণিজ্য সেই জায়গা দখল করায় দাম নিয়ে আমাদের এত আগ্রহ।
বিইউ/এএস