শুক্রবার, ১৮ এপ্রিল, ২০২৫, ঢাকা

নানা মত-ধর্ম-রীতির মধ্যেও আমরা এক পরিবারের সদস্য: প্রধান উপদেষ্টা

ঢাকা মেইল ডেস্ক
প্রকাশিত: ১৩ এপ্রিল ২০২৫, ০১:৩৫ পিএম

শেয়ার করুন:

নানা মত-ধর্ম-রীতির মধ্যেও আমরা এক পরিবারের সদস্য: প্রধান উপদেষ্টা
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

পহেলা বৈশাখকে সম্প্রীতির অন্যতম প্রতীক উল্লেখ করে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, ‘বাংলাদেশে নানা মত-ধর্ম-রীতিনীতির মধ্যেও সবাই এক পরিবারের সদস্য।’

রোববার (১৩ এপ্রিল) রাজধানীর মেরুল বাড্ডায় আন্তর্জাতিক বৌদ্ধ বিহারে ‘সম্প্রীতি ভবন’ এর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন তিনি।


বিজ্ঞাপন


ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, ‘আমি বরাবরই বলে এসেছি, নানা মত-ধর্ম-রীতিনীতির মধ্যেও আমরা সবাই এক পরিবারের সদস্য। এ দেশের হিন্দু, মুসলমান, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টান, পাহাড় ও সমতলের বিভিন্ন সম্প্রদায় ও জনগোষ্ঠী—সব মিলিয়ে এ দেশের মানুষের বিচিত্র ভাষা-সংস্কৃতি-ঐতিহ্য।’

পহেলা বৈশাখ উদযাপন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘পহেলা বৈশাখ আমাদের এই সম্প্রীতির অন্যতম প্রতীক। প্রত্যেকে নিজ নিজ উপায়ে, নিজেদের রীতি অনুযায়ী আগামীকালকে উদযাপন করবেন। সর্বজনীন এ উৎসবে অংশ নেবেন।’

yunus1

অতি প্রাচীন সময় থেকেই এ অঞ্চলের গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান হিসেবে আবির্ভূত হয়েছিল এখানকার বৌদ্ধ বিহারগুলো উল্লেখ করে ড. ইউনূস বলেন, ‘এগুলো আমাদের ঐতিহ্য ও সভ্যতার নিদর্শন। পৃথিবীর দূর-দূরান্ত থেকে ভিক্ষু ও ছাত্ররা এ বিহারগুলোতে আসতেন। মহামানব বুদ্ধের শান্তি ও সম্প্রীতির বাণী বিশ্বে ছড়িয়ে দিতেন। শুধু ধর্মীয় আচার ও শিক্ষা নয়, সমাজে জনকল্যাণকর কর্মসূচিরও কেন্দ্র ছিল এ দেশের বৌদ্ধ বিহারগুলো।’


বিজ্ঞাপন


প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘গৌতম বুদ্ধ বিশ্বমানবতার কল্যাণে সম্প্রীতি ও সাম্যের বাণী প্রচার করেন। বৌদ্ধধর্ম জীবজগতের সকল প্রাণীর মঙ্গল কামনা করে। মহামানব বুদ্ধ বলেছেন, শান্তি, সুখ থেকে আমরা কাউকে বঞ্চিত করতে পারি না; এমনকি ক্ষুদ্র জীবও। এ দেশের বৌদ্ধ পণ্ডিত অতীশ দীপঙ্কর বিশ্ববরেণ্য একজন মহাপণ্ডিত। মহামানব বুদ্ধের বাণী তিনি বহন করে নিয়েছিলেন সেই মহাচীনের তিব্বতে। চীনে এখনো তাকে সর্বোচ্চ মর্যাদায় শ্রদ্ধা জানানো হয়। বৌদ্ধ ধর্মের নিদর্শন, স্থাপনা, ঐতিহ্য ও পণ্ডিতগণ মানব সভ্যতার ইতিহাসে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।’

আন্তর্জাতিক বৌদ্ধ বিহার বাংলাদেশের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির এক অন্যতম নিদর্শন উল্লেখ উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘প্রতিষ্ঠার পর থেকে এটি বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীসহ বাংলাদেশের জাতীয় স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে।’

yunus2

ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, ‘গৌতম বুদ্ধের অহিংসা ও সাম্যের বাণীর প্রতি শ্রদ্ধা রেখে বাংলাদেশের বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের ধর্মীয়, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য সংরক্ষণ এবং কারিগরি শিক্ষাসহ বিভিন্ন জনকল্যাণকর কর্মসূচি পালন করে আসছে এ বৌদ্ধ বিহার। আন্তর্জাতিক বৌদ্ধ বিহারের “সম্প্রীতি ভবন” বাংলাদেশের সম্প্রীতি ও মানবতার ঐতিহ্যকে ধারণ করে জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে গৌরবময় ভূমিকা রাখবে এই আমার প্রত্যাশা।’

এর আগে, সকালে আন্তর্জাতিক বৌদ্ধ বিহারে সম্প্রীতি ভবনের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। ভিত্তিপ্রস্তর উন্মোচনের পর তিনি সেখানে অবস্থিত প্রার্থনা হল পরিদর্শন করেন। এসময় বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের সঙ্গে মতবিনিময় করেন প্রধান উপদেষ্টা।

মেরুল বাড্ডায় ১৯৮১ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় আন্তর্জাতিক বৌদ্ধ বিহার। বাংলাদেশে বৌদ্ধদের ধর্ম, সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য সংরক্ষণ এবং সদ্ধর্মের প্রচার ও প্রসারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে প্রতিষ্ঠানটি।

এমএইচটি

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর