ঈদ-উল আজহা উপলক্ষে রাজধানীর মেরাদিয়ার বনশ্রী আবাসিক এলাকায় প্রতি বছরের মতো এবারও বসেছে কোরবানির পশুর হাট। বাসাবাড়ি, রাস্তা, ফুটপাত, দোকান, হাসপাতাল ও মসজিদের আশপাশে সর্বত্রই বেঁধে রাখা হয়েছে গরু-ছাগল। আবাসিক এলাকার বাসিন্দাদের অভিযোগ, সর্বত্র পশু বেঁধে রাখার কারণে মানুষ রাস্তা-ফুটপাত ব্যবহার করতে পারছে না।
রাজধানীতে পশুর হাট ইজারা দেওয়ার সময় ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) অন্যতম শর্ত ছিল আবাসিক এলাকা বা লোকালয়ের মধ্যে হাট বসানো যাবে না। সেই শর্ত ভঙ্গ করেছেন মেরাদিয়া বাজারসংলগ্ন পশুর হাটের ইজারাদার।
বিজ্ঞাপন
ইজারার শর্তে আরও উল্লেখ রয়েছে, মূল সড়কের ওপর পশুর হাট বসানো যাবে না। সড়কের পাশের ফাঁকা জায়গায় হাট বসানো যাবে। এ নিয়মও ভঙ্গ করেছেন মেরাদিয়া পশুর হাটের ইজারাদার।
বুধবার (৬ জুলাই) মেরাদিয়া পশুর হাটে গিয়ে দেখা গেছে, বনশ্রী এইচ ব্লকের প্রবেশ মুখে চলছে হাটের প্রস্তুতিমূলক কাজ। এই গেট দিয়ে হাতের বাঁয়ে প্রবেশ করলে সোজা জে, কে, এল, এম ও এন ব্লক পর্যন্ত মূল রাস্তা চলে গেছে। এই রাস্তা ধরে সামনে এগোতেই উভয় পাশে চোখে পড়ে গরু বেঁধে রাখার বাঁশের সীমানা বেষ্টনী। কয়েকটি স্থানে এরই মধ্যে বেঁধে রাখা হয়েছে গরু। আবাসিক এলাকার এই রাস্তার উভয় পাশে সারি সারি বাড়ি। এসব বিবেচনায় না রেখেই ইজারাদার হাটের অংশ টেনে এনেছেন আবাসিক এলাকায়।
ওই এলাকার কুদ্দুস মিয়া বলেন, প্রতিবছর বাসাবাড়ির সামনেই গরুর হাট বসায়। গরুর গোবর আর হাটের ময়লা-আবর্জনার কারণে বাসায় প্রবেশ এবং বের হওয়া রীতিমতো কষ্টকর। বর্তমানে করোন আবার বাড়ছে। এ অবস্থায় হাটে বিপুলসংখ্যক মানুষের আসা-যাওয়া নিয়ে আমরা উচ্চ ঝুঁকির মধ্যে আছি।
বিজ্ঞাপন
বুধবার রাতে মেরাদিয়া হাট ঘুরে দেখা গেছে, গরু বেঁধে রাখতে এরই মধ্যে বাঁশ দিয়ে সীমানা বেষ্টনী তৈরি হয়ে গেছে। সেখানে প্রস্তুতিমূলক কাজের তদারকি করছিলেন শিপন। তিনি বলেন, মোটামুটিভাবে আমাদের প্রস্তুতি শেষ। এখনও গরু আসছে।
লোকালয়ে পশুর হাট বসানোয় সিটি করপোরেশনের নিষেধ রয়েছে, এ কথা বলতেই ওই হাটের ইজারা কমিটির এই সদস্য বলেন, ‘মুখের জবান আর হাতের লেহা যদি এক লগে মিলা যাইতো; তাইলে তো আমাদের দেশটা অনেক উন্নত হইতো।’
বনশ্রীর এল ব্লকের বাসিন্দা ফিরোজ হোসেন বলেন, কোরবানির হাটকে কেন্দ্র করে এলাকার রাস্তা আর ফুটপাত ব্যবহার করতে পারি না। রাস্তায় শুধু পশুর বর্জ্য। সিটি করপোরেশনের কাছে এ অবস্থা থেকে মুক্তি চান তিনি।
হাটের ইজারাদার আওরঙ্গজেব টিটু বলেন, এই হাটটি ৪০ বছর ধরে চলছে। আগে হাট ছিল, পরে বাড়িঘর হয়েছে। আমরা এমন কোনো কাজ করবো না যাতে এলাকাবাসীর অসুবিধা হয়। ঢাকা শহরে হাট বসানোর জায়গা নেই। সবাই রাস্তার মধ্যেই হাট বসায়। আমরা স্বেচ্ছাসেবকদের বলে দিয়েছি কোনো বাড়িতে যেন গরু-ছাগল ঢুকে না পড়ে।
টিএ/এইউ