বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪, ঢাকা

হাতের কাছেই গো খাদ্যের ভাসমান দোকান, খুশি ক্রেতারাও

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৭ জুলাই ২০২২, ১২:৪৪ পিএম

শেয়ার করুন:

হাতের কাছেই গো খাদ্যের ভাসমান দোকান, খুশি ক্রেতারাও

মাঝখানে আর মাত্র দুটি দিন। আগামী রোববার মুসলমানদের অনত্যম ধর্মীয় উৎসব ঈদুল আজহা। ইতোমধ্যেই রাজধানীর স্থায়ী অস্থায়ী পশুর হাটগুলোতে শুরু হয়েছে কোরবানির পশু বিক্রি।

কোরবানির পশু বিক্রিকে কেন্দ্র করে পশু হাটের পাশাপাশি রাজধানীর বিভিন্ন অলি গলিতে ভাসমান গো-খাদ্যের দোকান বসেছে। খড়, ভুসি, ঘাসসহ বিভিন্ন গো-খাদ্যের পসরা সাজিয়ে বসেছেন মৌসুমি ব্যবসায়ীরা। রাজধানীর বিভিন্নস্থানে এই দৃশ্য দেখা গেছে। এতে করে যারা গরু বা ছাগল কিনছেন তাদেরও এসকল গো খাদ্য কিনতে দেখা গেছে। হাতের কাছে পাওয়াতে ক্রেতারাও বেশ খুশি। 


বিজ্ঞাপন


বুধবার ও বৃহস্পতিবার রাজধানীর পশুর হাট এলাকার পাশাপাশি বিভিন্ন এলাকায় এসকল গো-খাদ্যের ভাসমান দোকান দেখা যায়। অনেক স্থানে এলাকার তরুণরা এই দোকান দিয়েছেন সেটিও দেখা যায়।

gash

রাজধানীর ফার্মগেট, রাজাবাজার, শুক্রবাদ এলাকায় দেখা যায় কয়েকজন তরুণ বিভিন্ন মোড়ে মোড়ে এসকল গো খাদ্যের দোকান দিয়েছে। তাদের একজন সবুজ বলেন, আমরা পার্টটাইম কাজ করি বিভিন্ন দোকানে। এখন কয়েকজন মিলে এটি করছি। একেক সময় দুজন করে বসি। যদি ঈদে বাড়তি কিছু আয় হয়। বেচাকেনাও বেশ ভালো হচ্ছে বলে জানান।

আসাদ গেট এলাকায় তারেক উদ্দিন বলেন, এক মুঠো খড় ২০ টাকা আটি, ভূষি কেজি ধরে বিক্রি করছি। অর ঘাস আছে যা আসলে অনুমান নির্ভর বিক্রয় করি।


বিজ্ঞাপন


ধানমন্ডির বাসিন্দা আসাদুল ইসলাম গরু কিনেছেন মঙ্গলবার। গত দুদিন ধরেই একটু হেঁটেই কিনতে আসেন গো খাদ্য। তিনি ঢাকা মেইলকে বলেন, আগে পশু কিনলে একটু লালন পালন করা যায় একটু ভালোবাসা তৈরি হয়। এখন গরুরতো খাবার লাগবে। আমি হাট থেকেই কিনেছিলাম কিন্তু এলাকায় এসে দেখলাম। বিভিন্ন মোড়ে পাওয়া যাচ্ছে। হাঁটা দূরত্ব রিক্সাও লাগে না।

গোখাদ্যের দাম একটু বেশি উল্লেখ করে তিনি বলেন, কোরবানির সামনে দামটা আর প্রাধান্য দিচ্ছি না। তবে দাম একটু বেশি এটা সত্য।

gash

রাজধানীর কোথাও খড়ের আটি ২০ টাকা একটু বেশি হলে ৫০ বা তারও বেশি হলে ১০০ বা ২০০ টাকা ধরে আটি বাধা হয়েছে। মূলত খড় বেশি হলে দামও বাড়তে থাকে। রাজধানীতে খড়ের পাশাপাশি কাঁচা ঘাসও মিলছে। অনেকেই কাঁচা ঘাস রাজধানীর আশপাশ এলাকা থেকে সংগ্রহ করে এনে বিক্রি করছেন।

জানা গেছে, বছরের অন্যান্য সময় বিভিন্ন পেশায় নিয়োজিত থাকলেও কোরবানির আগে মাত্র দুই-এক দিনের পরিশ্রমে অনেক ভালো আয় হওয়ায় এখন অনেকেই মৌসুমি গো-খাদ্যের বিক্রেতা হয়েছেন।

বৃহস্পতিবার নাখালপাড়ার বাসিন্দা জুবায়ের গো-খাদ্য কিনতে এসে বলেন, আমরা যারা ঢাকায় থাকি তাদের জন্য গরু দেখভাল একটু কষ্টের। গোসল করাতে হয় সেটি ট্যাঙ্কিতে পাইপ লাগিয়ে করানো যায়। ২০ বা ৩০ টাকার খড় কিনলে কিছুই হয় না। প্রতিবার আমার গরুর জন্য ১০০ টাকার খর কিনি। সারাদিন যায়। এছাড়াও ভূসি, চালের খুত কিনেছি।

রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে দেখা গেছে, পাড়া-মহল্লা, বাজার-ঘাট থেকে শুরু করে প্রতিটি পশুর হাটে গভীর রাত পর্যন্ত ভাসমান দোকানে বিক্রি হচ্ছে পশু খাদ্য। খাদ্য তালিকায় রয়েছে কাঁচা ঘাস, গমের ভুসি, খেসার ডালের ভুসি, গুড়া, খড় ও ঘাস। এসব দোকানে ১০ বছরের শিশু থেকে ৬০ বছরের বৃদ্ধ পশু খাদ্য বিক্রি করছেন। কিছু এলাকায় নারীদেরও বিক্রি করতে দেখা যায়।

রাজধানীর বড় কোরবানির পশুর হাট গাবতলী। এ বাজারের ভেতরে বাহিরে প্রায় ৩০টির বেশি গো-খাদ্যের দোকান রয়েছে। উত্তরার বৃন্দাবন পশুর হাটের সাথেই গো খাদ্যের দোকান হবে কমপক্ষে ১৫টি। বিক্রেতারা বলেন, পশুর হাটে শুধু ক্রেতারাই নয় বিক্রেতারাও অনেক সময় কিনে থাকেন তার পশুকে খাওয়ানোর জন্য।

এ ছাড়া রামপুর, বাড্ডা, নতুন বাজার এলাকায় অলি-গলিতে গো-খাদ্যের দোকান দেখা গেছে। জিগাতলা এলাকায় একটু দূরেই রয়েছে পশুর হাট। গো খাদ্যের বিক্রেতা জুলহাস জানান, অন্য সময়ে তিনি ভ্যানে ফল কখনো কাঁচা তরকারি বিক্রি করেন। এখন গরু-ছাগলের খাদ্য বিক্রি করছেন। তার সাথে একজন বিক্রি করছেন কাচা ঘাষ। আজম নামের ওই বিক্রেতা বলেন, সকালে চলে যাই বছিলার ওদিকে। ঘাষ সংগ্রহ করে এনে বিক্রি করি। অন্যসময় হকারি করেন বলেন তিনি।

এছাড়াও অনেক দোকানে পশু খাদ্যের পাশাপাশি কোরবানির জন্য পাওয়া যাচ্ছে হোগলার চাটাই ও খাটিয়াও। প্রতি পিস চাটাই ১২০-১৫০ এবং খাটিয়া প্রতি পিস ১৫০ থেকে শুরু। মাংস ও হাড় কাটতে এই খাটিয়া বা কাঠের গুড়ি ব্যবহার হয়।

ডব্লিউএইচ/এএস

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

টাইমলাইন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর