পবিত্র ঈদুল আজহার বাকি এক সপ্তাহেরও কম। রাজধানীর পশুর হাটগুলোর প্রস্তুতি শেষ পর্যায়ে। আগামী রোববার (২৫ জুন) থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হবে বেচাকেনা। তবে হাটে গরু আসতে শুরু করেছে। যদিও বেচাবিক্রি এখনো শুরু হয়নি। হাটে জায়গা ভালোভাবে পেতেই আগেভাগে চলে এসেছেন বলে জানিয়েছেন বেপারীরা।
শুক্রবার (২৩ জুন) সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত রাজধানীর বছিলা হাট ঘুরে এই চিত্র দেখা গেছে।
বিজ্ঞাপন
সরেজমিনে দেখা গেছে, বিভিন্ন জায়গা থেকে ট্রাকে ট্রাকে গরু আসছে। বেপারীরা ট্রাক থেকে নেমেই আগে জায়গা ঠিক করছেন। তারা হাটে কয়েক দিন থাকার প্রস্তুতি নিয়ে এসেছেন। সাথে নিয়ে এসেছেন তাঁবু, বালিশ, কাথা, চট, চাদর, হাড়িপাতিল ও গোখাদ্য। একেকজন বেপারী ১০ থেকে শুরু করে অর্ধশতাধিক পর্যন্ত গরু নিয়ে এসেছেন। হাটে আগত গরুর বেশির ভাগই দেশি।
এই হাটে কুষ্টিয়া, কুমারখালী, ঝিনাইদহ, পাবনা, সিরাজগঞ্জ ও নওগাঁ থেকে বেপারীরা গরু নিয়ে এসেছেন। তারা বলছেন, আগে-ভাগে এলে ভালো জায়গা মেলে। গরুকে ভালোভাবে রাখার পাশাপাশি নিজেও থাকা যায়। এছাড়া হাটের হালচাল বোঝার জন্যও তারা আগেভাগে এসেছেন।
নওগাঁ থেকে আসা আরিফ জানালেন, তিনি আজ সকালে তিন ট্রাকে ৬২টি গরু নিয়ে এসেছেন, যার সবগুলোই দেশি। এই তালিকায় তার নিজের ছাড়াও কয়েক মাস আগে কেনা গরু রয়েছে। তার প্রতিটি গরু তিনি লাখ টাকার ওপরে বিক্রি করবেন।
বিজ্ঞাপন
তিনি জানালেন, তার প্রতিটি গরু কেনা ও পালন বাবদ যে খরচ হয়েছে তা এই দামে রয়েছে। তারপরও বাজারের অবস্থা বুঝে দাম-দর ঠিক করা হবে বলে জানান তিনি।
এখন চলছে হাট প্রস্তুতির মহাযজ্ঞ। প্রত্যেক বেপারী ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন। গরু বাঁধা, খাবার দেওয়া, ত্রিপল দিয়ে ছাউনি বানানো, আগত সদস্যদের দুপুর ও রাতের খাবার তৈরিসহ নানা কাজ করতে হচ্ছে তাদের। এই হাটে গরুর গোসলে পানির ব্যবস্থা নেই। তাই বাধ্য হয়ে হাটের পশ্চিম পাশে থাকা নদী থেকে পানি আনছেন কেউ কেউ। তার ফাঁকে অনেককে নদীতে গরু নিয়ে গিয়ে গোসল করাতেও দেখা গেল।
কুষ্টিয়ার কুমারখালী থেকে এসেছেন ওবায়দুল ইসলাম। প্রতি বছর তিনি ঢাকার বিভিন্ন হাটে গরু নিয়ে আসছেন। এবার এনেছেন ১৭টি। শুরুতে আনলে দাম ভালো মেলে বলে ধারণা তার। ঢাকা মেইলকে তিনি বলছিলেন, ‘গতবার লচ (লোকসান) গুনতে হয়েছে। তাই এবার আগেই আসলাম। জায়গায়ও পাওয়া যাবে, দামও পাব।’
এই হাট বছিলার ভেতরে থাকা গার্ডেন সিটি ও চল্লিশ ফিট আবাসিক এলাকাকে কেন্দ্র করে গড়ে ওঠেছে। হাট বলতে আবাসিক এলাকায় প্রবেশের প্রধান সড়ক ও এলাকার অলিগলি। তবে প্রধান সড়কের দুই পাশে থাকা ফাঁকা জায়গাগুলোতে খুঁটি গেড়ে দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। সেই খুঁটিগুলোতেই আগত বেপারীরা তাদের গরু বাঁধছেন। এখনো হাটের অর্ধেকের বেশি খুঁটি ও জায়গা খালি পড়ে আছে। আগামীকাল শনিবার (২৪ জুন) থেকে হাট শুরু হবে বলে আশাবাদী আগত বেপারীরা।’
হাটের প্রধান সড়কের ৫০ ও ১০০ গজ দূরত্বে হাসিল আয়ের ঘর বসানো হয়েছে। রোববার (২৫ জুন) থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে বেচাবিক্রি শুরু হবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
আগাম জায়গা পেতে এখন পর্যন্ত কোনো বেপারীকে টাকা গুনতে হয়নি। জলিল বেপারী বলছিলেন, বছিলা হাটে একটা জিনিস ভালো, হাট কর্তৃপক্ষ ভালো সুযোগ-সুবিধা রাখে।
এমআইকে/জেবি