প্রতি বছর রাজধানীর গরুর হাটগুলোতে উপচে পড়া ভিড় দেখা যায়। দূর দূরান্ত থেকে গরু আনতে হিমশিম খেয়ে যান খামারিরা। কিন্তু এবার চিত্র ভিন্ন।
শনিবার (২ জুলাই) রাতে গাবতলীর হাট ঘুরে দেখা গেছে, বড় গরুর খামারিরা আগাম এসেছেন। জায়গা আগে বেছে নিয়ে তারা গরুর যত্ন করতে শুরু করেছেন। কিন্তু এত আগে আসলেন কেন এটা ছিল অনেকের প্রশ্ন। কারণ হাট শুরু হবে আগামী ৬ জুলাই থেকে। তাহলে হাট শুরু চার দিন আগে কেন আসলেন তারা। বিষয়টি জানতে চাওয়া হয়েছিল আগাম আসা গরুর খামারীদের কাছে।
বিজ্ঞাপন
গরুর হাটে আগাম গরু নিয়ে আসার কারণ হিসেবে গরু খামারীরা জানালেন, রাস্তাঘাটে যানজটের কারণে অনেক সময় গরু আনতে দেরি হয়। ট্রাকে থাকা গরু অসুস্থ হয়ে পড়ে, বেশিরভাগ সময় মারা যায়। আবার হাটে জায়গা পাওয়া কঠিন হয়ে পড়ে। এসব বিষয়কে মাথায় রেখে এবার তারা আগাম এসেছেন।
কুষ্টিয়ার গাংনী উপজেলা থেকে গরু নিয়ে আসা গুরু বিক্রেতা ওমর ফারুক জানালেন, বছর খানেক আগে এক খামারির কষ্টের গল্প।
ফারুক জানান, গত বছরের গাবতলী ঘাটে এক খামারি বড় একটি গরু শখ করে নিয়ে এসেছিলেন। কিন্তু আনার পথে প্রচণ্ড গরম ছিল। গাবতলী হাটে গরুটি আনা মাত্র অসুস্থ হয়ে পড়ে। পরে ট্রাক থেকে নামাতে নামাতে সেটি মারা যায়। সেই গরুর দাম ছিল প্রায় ১০ লাখের উপরে। গত বছরের এই দৃশ্য দেখে তিনি শিক্ষা নিয়েছেন।
বিজ্ঞাপন
শুধু তিনি নন তার মত অনেকেই এই দৃশ্য দেখে কেঁদেছেনও। ফলে তারা ঠাণ্ডা আবহাওয়ায় গরু আনতে শুরু করেছেন।
পাবনার রুবেল জানান, তিনি দেশি চারটি গরু নিয়ে এসেছেন। প্রথম দিকে ক্রেতা ভালো পাওয়া যায়। দাম যা চাওয়া যায় তাই মিলে। এছাড়া হাটে দেরিতে আসলে জায়গা পাওয়া কঠিন হয়। আগে আসায় গরুর যত্ন খাতির করতে পারছেন। সুন্দর করে থাকার জায়গাও পাচ্ছেন। এসব ভেবে তিনি আগাম এসেছেন।
গাবতলী গরুর হাট এখনো তেমন জমতে শুরু করেনি। বৃহস্পতিবার ১৫ থেকে ২০টি গরু হাটে উঠতে দেখা গেছে। তার মধ্যে বেশিরভাগ গরুর দাম হাঁকানো হয়েছে দশ লাখের উপরে। সবগুলোর মধ্যে বেশি ছিল ফ্রিজিয়ান। আজ রোববার থেকে হাট কিছুটা জমবে বলে মনে করছেন অনেকে।
গরু খামারি ও বিক্রেতারা জানালেন, এ বছর কোরবানির দিনের এক সপ্তাহ আগে হাটে গরু বিক্রি করা যাবে বিষয়টি তাদের জানা ছিল না। তবে আগাম এসে তারা এখন স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলছেন। তার মনে করছেন, আগে এসেছেন। তাই বিক্রিও আগে করবেন। সবার আগে বাড়িতে গিয়ে দারুণভাবে পরিবার-পরিজন নিয়ে ঈদ করবেন।
প্রতি বছর গাবতলী হাটে মাঝামাঝি সময়ে গরু নিয়ে এসে বিপাকে পড়েন খামারি ও গরু বিক্রেতারা। বিগত সময়গুলো থেকে অনেকে শিক্ষা নিয়ে এবার আগাম আসতে শুরু করেছে।
এমআইকে/এএস