দেশি-বিদেশি পর্যটকদের চাহিদার কথা বিবেচনা করেই পর্যটন করপোরেশন সাশ্রয়ী মূল্যে স্বপ্নের পদ্মা সেতু ঘুরে দেখানোর উদ্যোগ নিয়েছে বলে জানিয়েছে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মো. মাহবুব আলী।
শুক্রবার (২২ জুলাই) বিকেলে পর্যটন ভবন প্রাঙ্গণে ‘স্বপ্নের পদ্মা সেতু ভ্রমণ’ প্যাকেজের উদ্বোধনকালে এ কথা জানান তিনি।
বিজ্ঞাপন
প্রতিমন্ত্রী বলেন, বিশ্বের ১১তম বড় পদ্মা বহুমুখী সেতু বাংলাদেশের উন্নয়নের এক অপার বিস্ময়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বলিষ্ঠ নেতৃত্বে বাঙালি জাতি উপহার পেয়েছে এই সেতু। দেশের টাকায় পদ্মা সেতু নির্মাণের মধ্য দিয়ে বাঙালি জাতি নতুন করে গৌরবের সঙ্গে মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে শিখেছে।
গত ২৫ জুন প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক পদ্মা সেতু উদ্বোধনের পর থেকে পদ্মা সেতু ভ্রমণে বাংলাদেশের মানুষের মধ্যে ব্যাপক আগ্রহ পরিলক্ষিত হয়েছে। ফলে পর্যটকদের আগ্রহের বিষয়টি বিবেচনা করে এবং বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনায় বাংলাদেশ পর্যটন করপোরেশন এই সাশ্রয়ী মূল্যের প্যাকেজের আয়োজন করেছে।
পর্যটন করপোরেশন জানিয়েছে, নিজস্ব দুটি শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত (এসি) ট্যুরিস্ট কোস্টারে চড়ে দর্শনার্থীরা স্বপ্নের পদ্মা সেতু ঘুরে দেখতে পারবেন। প্রতি শুক্র ও শনিবার ঢাকার আগারগাঁওয়ের পর্যটন ভবন থেকে বিকেল ৪টায় দর্শনার্থীদের নিয়ে যাত্রা শুরু করে পদ্মা সেতু ঘুরিয়ে আবার রাত ১০টায় ফিরে আসবে ট্যুরিস্ট কোস্টার দুটি। এই কোস্টারগুলো পদ্মা সেতু পার হয়ে ফরিদপুরের ভাঙ্গা চত্বর পর্যন্ত যাবে। আপাতত সপ্তাহে দুই দিন এই ভ্রমণের আয়োজন করা হলেও দর্শনার্থীদের চাহিদা বিবেচনায় পরে তা আরও বাড়ানো হতে পারে। এছাড়া ভ্রমণের জন্য সশরীরে কিংবা বিকাশে- দুইভাবেই টাকা পরিশোধের সুযোগ থাকছে। পাশাপাশি পাঁচ বছর বয়স পর্যন্ত বাচ্চাদের নিতে কোনো খরচ লাগবে না।
বিজ্ঞাপন
পদ্মা সেতুতে ভ্রমণে ২৯ আসনের দুটি ট্যুরিস্ট কোস্টারে প্রথম ভ্রমণে ৫০ শতাংশ মূল্যছাড় দিয়ে এক হাজার টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। অর্ধদিবসের এই পদ্মা সেতু ভ্রমণের ঘোষণায় ব্যাপক সাড়াও মিলেছে। যদিও পরের ভ্রমণগুলোতে মূল্যছাড় ৫০ থেকে কমিয়ে ৪০ শতাংশ করা হয়েছে। সে ক্ষেত্রে খরচ পড়বে এক হাজার ২০০ টাকা।
আগারগাঁওয়ের পর্যটন ভবন থেকে বিকেল ৪টায় যাত্রা শুরু করে শ্যামলী, আসাদগেট ও সায়েন্স ল্যাব হয়ে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) সামনে দিয়ে মেয়র হানিফ উড়ালসড়ক ব্যবহার করে ট্যুরিস্ট কোস্টার দুটি পদ্মা সেতুতে পৌঁছাবে বিকেল সাড়ে ৫টায়। সেখান থেকে ফরিদপুরের ভাঙ্গা চত্বরে দুই ঘণ্টার বিরতি। যেখানে পর্যটকদের জন্য থাকবে হালকা নাশতা বা স্ন্যাক্স জাতীয় খাবার। এরপর পর্যটকরা সেখানে দুই ঘণ্টা ঘুরতে পারবেন। সবশেষে ঢাকার উদ্দেশে ছেড়ে আসবে ট্যুরিস্ট কোস্টার দুটি।
এই ভ্রমণের মাধ্যমে পর্যটকরা দিনের আলোতে এবং সন্ধ্যা ও রাতের আবহেও পদ্মা সেতুর অপরূপ সৌন্দর্য উপভোগ করতে পারবেন। প্যাকেজ ট্যুরটি বাংলাদেশ পর্যটন করপোরেশন পরিচালিত ন্যাশনাল হোটেল অ্যান্ড ট্যুরিজম ট্রেনিং ইনস্টিটিউট প্রশিক্ষিত গাইড দ্বারা পরিচালিত হবে।
শুক্রবার পর্যটন করপোরেশনের ভ্রমণ প্যাকেজের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সচিব মোকাম্মেল হোসেন, ট্রিয়াবের প্রেসিডেন্ট খবির উদ্দিন আহমেদ ও টোয়াবের সভাপতি শিবলুল আজম কোরায়েশি।
উল্লেখ্য, গত ২৫ জুন পদ্মা সেতুর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপর থেকেই রাজধানী ছাড়াও দেশের বিভিন্ন এলাকার অসংখ্য মানুষ ছুটির দিনে পদ্মা সেতু দেখতে যাচ্ছেন। তাদের কেউ যাচ্ছেন ব্যক্তিগতভাবে, আবার কেউবা দল নিয়ে। দর্শনার্থীদের বড় অংশই সেতু পার হয়ে ফরিদপুরের ভাঙ্গা পর্যন্ত এক্সপ্রেসওয়ে ঘুরে আসছেন। স্বপ্নের পদ্মা সেতু ঘুরে দেখার এমন আগ্রহ বিবেচনা করেই ভ্রমণের এই প্যাকেজ চালু করেছে পর্যটন করপোরেশন।
ডিএইচডি/আইএইচ