স্বপ্নের পদ্মা সেতু উদ্বোধনী অনুষ্ঠান এবং এ উপলক্ষে আয়োজিত আওয়ামী লীগের জনসভায় দলটির সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথের একটি কবিতার অংশ আবৃত্তি করেছেন। দুটি অনুষ্ঠানে দেওয়া বক্তব্যেই সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রীর কণ্ঠে বিশ্বকবির কবিতা কিছুটা পরিবর্তন করে আবৃত্তি করতে দেখা যায়।
১৯১৪ সালে ভারতের বিহার রাজ্যের বুদ্ধিগয়ায় বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর লিখেছিলেন, ‘আবার যদি ইচ্ছা কর আবার আসি ফিরে, দুঃখসুখের-ঢেউ-খেলানো এই সাগরের তীরে।’
বিজ্ঞাপন
রবীন্দ্রনাথের সেই কবিতাকে কিছুটা পরিবর্তন করে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আবার যদি ইচ্ছা কর আবার আসি ফিরে, দুঃখসুখের-ঢেউ-খেলানো পদ্মা নদীর তীরে।’
এর আগে শনিবার (২৫ জুন) সকাল ১০টার কিছু আগে ঢাকার তেজগাঁওয়ের পুরাতন বিমানবন্দর থেকে থেকে হেলিকপ্টার যোগে মাওয়া পৌঁছান প্রধানমন্ত্রী। সেখানে সুধী সমাবেশে যোগ দেন তিনি।
সুধী সমাবেশে বক্তব্য দেন সরকারপ্রধান। সেখানে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী হিসেবে বক্তব্য দেন ওবায়দুল কাদেরও।
এরপর পদ্মা সেতু উদ্বোধন উপলক্ষে স্মারক ডাকটিকিট, স্যুভেনির শিট, উদ্বোধন খাম ও সিলমোহর প্রকাশ করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। মাওয়া প্রান্তে উদ্বোধনী ফলক ও ম্যুরাল-১ উন্মোচন করে মোনাজাতে অংশ নেন তিনি।
বিজ্ঞাপন
দুপুর ১২টায় পদ্মা সেতুর উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপর গাড়ি যোগে পদ্মা সেতুতে ওঠেন সরকারপ্রধান। পদ্মা সেতুতে উঠে ১৪ মিনিট দাঁড়ান তিনি। এ সময় সেখানে সেনা ও বিমান বিমান বাহিনীর কসরত দেখেন তিনি। এরপর জাজিরার উদ্দেশ্যে রওনা হন।
দুপুর ১২টা ৩৮ মিনিটে জাজিরা প্রান্তে উদ্বোধনী ফলক ও ম্যুরাল-২ উন্মোচন করে আবারও মোনাজাত করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
সেখান থেকে মাদারীপুরের শিবচর উপজেলার কাঁঠালবাড়ির উদ্দেশে সড়কপথে যাত্রা করে কাঁঠালবাড়িতে আওয়ামী লীগের জনসভায় অংশ নেন দলটির সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আর দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরও সেখানে বক্তব্য দেন।
জনসভার ভাষণে ওবায়দুল কাদের আরও বলেন, ‘এই পদ্মার পাড়ে কত ছেলে তার অসুস্থ মাকে নিয়ে অপেক্ষা করেছে। কিন্তু ফেরি আসেনি। পরে মায়ের মৃত লাশ নিয়ে বাড়ি ফিরেছে। পদ্মায় আটকা পড়ে কত ছেলে তারা বাবার জানাজায় যেতে পারেনি। অনেকে বলে, পদ্মা সেতুর জন্য এত টাকা, এত টোল, কিন্তু এ এলাকার মানুষ জানে পদ্মা সেতু তাদের কত প্রয়োজন। যারা বিষয়টি জানে না তারা পদ্মা সেতুর গুরুত্ব অনুধাবন করতে পারবে না।’
সেতুমন্ত্রী বলেন, ‘আজ পদ্মা সেতুর সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী তার নাম যুক্ত করেননি। কিন্তু যত দিন এখানে চন্দ্র ও সূর্য উদয় হবে, তত দিন বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা আপনাকে স্মরণ করবে। বঙ্গবন্ধুর কথা স্মরণ করে, শেখ হাসিনার মুখের দিকে চেয়ে আপনারা পৈতৃক ফসলি জমি দিয়েছেন। পদ্মার পাড়ের মানুষের প্রতি আমরা কৃতজ্ঞ।’
বিএনপির সমালোচনা করে তিনি বলেন, ‘আজ সবার মুখে আনন্দের হাসি। আর বিএনপির মুখে শ্রাবণের আকাশের মেঘ। এত ষড়যন্ত্র, এত কূটচাল, তারপরও শেখ হাসিনা পদ্মা সেতু করে ফেললেন। মির্জা ফখরুলের (বিএনপি মহাসচিব) মন খারাপ, বুকে বড় ব্যথা, বড় বিষের জ্বালা। জ্বালায়-জ্বালায় মরছে তারা।’
কারই/জেবি