শনিবার, ২১ ডিসেম্বর, ২০২৪, ঢাকা

‘স্বপ্নসেতু’ উদ্বোধনের মাহেন্দ্রক্ষণ

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ২৫ জুন ২০২২, ১১:২৭ এএম

শেয়ার করুন:

‘স্বপ্নসেতু’ উদ্বোধনের মাহেন্দ্রক্ষণ
কোলাজ: ঢাকা মেইল

জাতীয় কবির পঙ্কক্তিটি বাস্তবে রূপ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শত বাধা পেরিয়ে বহু আকাঙ্ক্ষিত সেই মাহেন্দ্রক্ষণ আজ! উদ্বোধন হচ্ছে দেশের সবচেয়ে বড় স্থাপনা পদ্মা সেতু। প্রধানমন্ত্রীর দৃঢ়তায় খরস্রোতা পদ্মা নদীর ওপর নির্মিত সেতুর উদ্বোধনে অপেক্ষা এখন ক্ষণিকের। কিছুক্ষণের মধ্যেই অপেক্ষার অবসান ঘটাবেন তিনি নিজেই, যিনি স্বপ্নসেতুর ভিত্তিপ্রস্তর করেছিলেন। 


বিজ্ঞাপন


৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ এই সেতু। মাওয়া থেকে জাজিরা। পদ্মা সেতু সড়ক, রেল, গ্যাস, বিদ্যুতের সংযোগ ঘটাবে উত্তরের সঙ্গে দক্ষিণের। নির্মাণের বিশাল কর্মযজ্ঞের সঙ্গে আছে সংযোগ সড়ক, রেলসংযোগ, নদীশাসন, পুনর্বাসন, পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য রক্ষা—নানা প্রকল্প ও কর্মকাণ্ড।

এর আগে ২২ জুনের সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জানিয়েছেন, পদ্মা সেতুর প্রকল্প ব্যয় ৩০ হাজার ১৯৩ কোটি ৩৯ লাখ টাকা। ২১ জুন পর্যন্ত ব্যয় হয়েছে ২৭ হাজার ৭৩২ কোটি ৮ লাখ টাকা।

এই সেতু নির্মাণের সুফল আসবে নানাভাবে, বাংলাদেশের অর্থনীতিতে তা বিরাট অবদান রাখবে। ট্রান্সএশিয়ান হাইওয়ে ও ট্রান্সএশিয়ান রেলওয়ের সঙ্গে যুক্ত হওয়ার সুযোগ তৈরি হবে। এ দেশের সঙ্গে ভারত, ভুটান ও নেপালের যোগাযোগ নিবিড় হবে। মোংলাবন্দর হবে রাজধানীর নিকটতম সমুদ্রবন্দর। এক সমীক্ষায় বলা হচ্ছে, পদ্মা সেতু জিডিপি (মোট দেশজ উৎপাদন) বৃদ্ধি করবে ১ দশমিক ২৩ শতাংশ। দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের জিডিপি বৃদ্ধি পাবে ২ দশমিক ৩ শতাংশ। বঙ্গবন্ধু যমুনা সেতুর আগের আর পরের উত্তরবঙ্গের মানুষের জীবনযাত্রার মানের পার্থক্য থেকেই এই আশা বাস্তব ভিত্তি পায়।

পদ্মা সেতু দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ১৯টি জেলাকে সড়কপথে সরাসরি সংযুক্ত করেছে। কংক্রিট আর ইস্পাতের কাঠামোয় পদ্মা নদীর দুই প্রান্তের সামাজিক ও অর্থনৈতিক যোগাযোগের সেতুবন্ধ ঘটছে। তবে এই সেতু শুধু একটি বড় অবকাঠামো নয়, এটি বিদেশি অর্থায়ন ছাড়া প্রথমবারের মতো বাস্তবায়িত বাংলাদেশের একটি ‘মেগা’ প্রকল্প। এটি প্রমত্ত পদ্মার বুকে কারিগরি নানা জটিলতা কাটিয়ে নির্মাণ করা একটি সেতু। এটি দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের জেলাগুলোর মানুষ ও ব্যবসায়ীদের দীর্ঘ অপেক্ষার অবসান।


বিজ্ঞাপন


উল্লেখ্য, ২০১১ সালে এপ্রিল থেকে জুন মাসের মধ্যে পদ্মা সেতু প্রকল্পে অর্থায়নের বিষয়ে বিশ্বব্যাংক, এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি), জাইকা ও ইসলামি উন্নয়ন ব্যাংকের (আইডিবি) সঙ্গে ঋণচুক্তি সই করা হয়। পরে বিশ্বব্যাংক দুর্নীতির ষড়যন্ত্রের অভিযোগ এনে অর্থায়ন বন্ধ করে। বাকি দাতা সংস্থাগুলোও পিছিয়ে যায়। সেই সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সংসদে ঘোষণা করেন, বাংলাদেশ নিজেদের সামর্থ্যেই গড়ে তুলবে স্বপ্নের পদ্মা সেতু। উন্নয়ন–সহযোগীদের জানিয়ে দেওয়া হয়, তাদের অর্থায়নের দরকার নেই।

এইউ

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

টাইমলাইন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর