ঘটা করে উদ্বোধনের পর জনসাধারণের জন্য খুলেছে মেট্রোরেলের দুয়ার। দেশের প্রথম বিদ্যুৎচালিত এই গণপরিবহনে চড়তে তাই আগ্রহের শেষ নেই নাগরিকদের। রাজধানীর বুক চিরে ছুটে চলা এই মেট্রোতে চড়তে অনেকেই দূর-দূরান্ত থেকেও আসছেন ঢাকায়। কুয়াশার চাদর ভেদ করে লাইনে দাঁড়িয়ে দীর্ঘসময় অপেক্ষার পর টিকিট কেটে উঠছেন স্বপ্নের মেট্রোরেলে।
শুক্রবার (৩০ ডিসেম্বর) ছুটির দিনেও মেট্রোরেলের যাত্রায় নাগরিকদের চোখে-মুখে ছিল বাঁধভাঙা উচ্ছ্বাস। তাদেরই একজন আহাদ মিয়া। তবে জন্ম থেকেই চোখে দেখেন না তিনি। তাতে কী হয়েছে? মেট্রোরেল ছুঁয়ে দেখার পাশাপাশি ভ্রমণের স্বাদ তো নিতে পারবেন! এ জন্য এসেছেন মেট্রোরেলের উত্তরা স্টেশনে।
বিজ্ঞাপন
টিকিট কাটা থেকে শুরু করে সার্বক্ষণিক সহযোগিতাও পেয়েছেন অন্যদের। সবশেষে আহাদ মিয়া উঠতে সক্ষম হয়েছেন মেট্রোরেলে। পরে ধীরে ধীরে ট্রেন ছুটতে শুরু করামাত্রই চোখে-মুখে উচ্ছ্বাসের ছাপ দেখা যায় তার।
রাজধানীর বুক চিরে যখন মেট্রোরেল ছুটছিল তখন পাশে থাকা আরেক যাত্রী আশপাশের বর্ণনা দিয়ে যাচ্ছিলেন আহাদ মিয়াকে। পরে অনুভূতি জানতে চাইলে ঢাকা মেইলকে বলেন, অনেক ভালো লাগতেছে। ওই সময় ট্রেনের পাশ দিয়ে আরেকটি মেট্রো যাচ্ছিল। সেই শব্দ শোনামাত্রই আহাদ মিয়া প্রশ্ন করেন- আরেকটা ট্রেন গেল না-কি? পরে হ্যাঁ সূচক জবাব পেতেই তার চোখ-মুখ আরও উজ্জ্বল হয়ে ওঠে।
আহাদ মিয়া থাকেন উত্তরার আজমপুরে। প্রায়দিন তাকে শ্যামলীতে যাতায়াত করতে হয়। এ নিয়ে মেট্রোযাত্রা শেষে তিনি বলেন, আমি এরপর থেকে ট্রেনেই যাতায়াত করব। আমাদের জন্য টিকিটে ছাড় আছে। আধুনিক ব্যবস্থা। চোখে আলো নাই আমার। বাসে যাতায়াত করি। যানজটে বসে থাকতে থাকতে অস্থির লাগে। এখন আমার কষ্টটা কমে যাবে।
আহাদ মিয়া বলেন, আল্লাহ আমার চোখ দেন নাই। কিন্তু আমার মনের চোখ দিয়ে দেখলাম ট্রেন। আমি খুবই খুশি। আমার যাতায়াতের কষ্টটা অনেক কমে গেল।
বিজ্ঞাপন
পরে মেট্রো থেকে নেমে সাদাছড়ি নিয়ে স্টেশন থেকে নেমে আসেন আহাদ মিয়া। এরপর রিকশা নিয়ে রওয়ানা হন গন্তব্যে। তবে পুরোটা সময় তার উচ্ছ্বসিত হাসি মন কেড়েছে অনেক যাত্রীরই।
পিএস/আইএইচ