আগামীকাল বুধবার (২৮ ডিসেম্বর) উদ্বোধন হতে যাচ্ছে দেশের প্রথম বিদ্যুৎচালিত ট্রেন বা মেট্রোরেল। স্বপ্নের এই প্রকল্প নিয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে ব্যাপক উচ্ছ্বাস থাকলেও এর ভাড়া নির্ধারণ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন অনেকেই। প্রতিবেশী দেশগুলোর তুলনায় কয়েক গুণ বেশি ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে অভিযোগ করে বিভিন্ন মহল থেকে তা কমানোর দাবি উঠেছে। তবে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের জানিয়েছেন, বাস্তবতার নিরিখেই এই ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে। সবাই এটা মেনে নেবে বলেও আশা প্রকাশ করেন মন্ত্রী।
মঙ্গলবার (২৭ ডিসেম্বর) দুপুরে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে মেট্রোরেলের উদ্বোধনের আগের দিন আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
বিজ্ঞাপন
ভাড়া নির্ধারণের যৌক্তিকতা তুলে ধরে ওবায়দুল কাদের বলেন, 'এখন যে অবস্থান ঢাকা সিটিতে, আপনি উত্তরা থেকে কমলাপুর আসবেন ১০০ টাকা। কত মিনিটে আসবেন? ৩৮ মিনিটে। তাহলে কোথায় লস হলো।'
সরকারের সড়ক পরিবহন মন্ত্রী বলেন, 'প্রত্যেকে আনন্দের সঙ্গে এটা গ্রহণ করবে। ভাড়া একটা বিষয়। তবে বাস্তবে এটা সবাই এক্সেপ্ট করবে। মিনিমাম রিক্সাভাড়া এখন ২০ টাকা।'
একই সঙ্গের উত্তর দেন মেট্রোরেলের পরিচালক এন এম সিদ্দিক। তিনি বলেন, 'আপনি নিশ্চয়ই কলকাতা মেট্রো হতে চলেছেন। এটা কখন হয়েছে? একবার একটু চিন্তা করে দেখেন। আর কলকাতা মেট্রোরেলে কী ফেসিলিটি আছে এবং এখানকার মেট্রোরেলে কী ফেসিলিটি আছে সেটা দেখেন। মেট্রো ট্রেন যে কতটুকু সময় সাশ্রয় সেটা দেখে নেবেন। মাননীয় মন্ত্রী মহোদয় ইতোমধ্যে বলেছেন, আমাদের ননস্টপ আছে, তাতে ১০ মিনিট ১০ সেকেন্ডে যাতায়াত করা যাবে। উত্তরা থেকে আপনি এমনি যদি আসেন আপনার কতক্ষণ লাগবে, এটা চিন্তা করে দেখেন।'
মেট্রোরেল পরিচালক জানান, মেট্রোরেলের কারণে ৩ দশমিক ৮ মিলিয়ন অর্থ সাশ্রয় হবে। বর্তমান টাকার অঙ্কে ৪২ হাজার কোটি টাকা। তিনি বলেন, 'ভাড়াটা যেটা ঠিক করা হয়েছে সেটা বর্তমান প্রেক্ষাপটে। আপনি যদি টাইম মেশিনে পেছনে চলে যান তারপর যদি হিসাব করেন তাহলে তা হবে না। আপনি সম্প্রতি যেসব দেশের মেট্রোরেল তৈরি হয়েছে তার সঙ্গে আপনি তুলনা করবেন দেখবেন যে, আমরা সেই জায়গাটাতে আছি।'
বিজ্ঞাপন
মেট্রোরেল পরিচালক জানান, মেট্রোরেল বিদ্যুতে চলাচল করবে। যে দেশে বিদ্যুতের দাম যেমন সে অনুযায়ী ভাড়া নির্ধারণ করা হয়। তিনি বলেন, 'এটা একেবারে সর্বনিম্ন ভাড়া এবং এই ভাড়া দিয়ে মেট্রোরেল লাভজনকভাবে পরিচালনা করা যাবে না।'
এখন যে স্টেশনগুলো চালু করা হচ্ছে না, সেগুলো আদৌ প্রস্তুত আছে কি না এবং মেট্রোরেল তাড়াহুড়ো করে চালু করা হলো কি না- এমন প্রশ্নের জবাবে এন এম সিদ্দিক বলেন, 'প্রত্যেকটা স্টেশন প্রস্তুত আছে। এখানে কোনো তাড়াহুড়ার বিষয় নেই। আমরা একাধিক বার বলেছি। মানুষের অভ্যস্ততা হলো বড় বিষয়। এজন্য এটা করা হয়েছে৷ মানুষের অভ্যস্ততার সঙ্গে সামঞ্জস্য করার জন্য আমরা এটা করেছি। তিন মাস পরে ২৬ মার্চ প্রত্যেকটি স্টেশনে ট্রেন থেমে যাবে এবং আস্তে আস্তে মানুষ যখন অভ্যস্ত হয়ে যাবে তখন ট্রেনের সংখ্যাগুলো বাড়বে। আমাদের এখানে কোথাও কোনো কাজ বাকি নেই। এখানে কোনো তাড়াহুড়ার বিষয় নেই। বাস্তবতার নিরিখে এটা আন্তর্জাতিক স্বীকৃত একটা পদ্ধতি। আমরা সেই পদ্ধতি অনুসরণ করে অগ্রসর হচ্ছি।'
কারই/জেবি