স্বপ্নের মেট্টোরেলের যুগে প্রবেশ করছে বাংলাদেশ। উন্নত বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে মেট্টোরেল এখন বাংলাদেশের মানুষের কাছে আর স্বপ্ন নয় বাস্তব। ২৯ অক্টোবর থেকে সাধারণ মানুষ মেট্টোরেলে চেপে যাতায়াত করতে পারবেন।
ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড (ডিএমটিসিএল) সূত্রে জানা গেছে, এমআরটি লাইন-৬ এর আওতায় উত্তরা থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত মেট্রোরেল পথের উদ্বোধন হতে যাচ্ছে। মেট্রোরেল বাংলাদেশের প্রথম বৈদ্যুতিক ট্রেন। যা ঘণ্টায় ৬০ হাজার এবং এক দিনে ৫ লাখ যাত্রী পরিবহন করতে পারবে। ৬টি কোচ সংবলিত প্রতিটি একমুখী মেট্রোরেল প্রতিবারে ৩৮ মিনিটে উত্তরা থেকে মতিঝিল পর্যন্ত ১৬টি স্টেশনে থেকে সর্বোচ্চ ২ হাজার ৩০৮ জন যাত্রী পরিবহন করতে পারবে। তবে মতিঝিল পর্যন্ত এখনই চালু হচ্ছে না। সে জন্য আরও অপেক্ষা করতে হবে। তবে মেট্রোরেলে নারী যাত্রীদের চলাচল নির্বিঘ্ন করার নিমিত্তে প্রতিটি ট্রেনের একটি করে কোচ শুধুমাত্র নারী যাত্রীদের জন্য সংরক্ষিত থাকবে।
বিজ্ঞাপন
এমআরটি লাইন-৬ এর উপ প্রকল্প পরিচালক নাজমুল ইসলাম ভূইয়া ঢাকা মেইলকে বলেন, আমাদের ৬টি কোচের মধ্যে নারীদের জন্য একটি সংরক্ষিত। তবে নারী যাত্রীরা অন্য কোচেও যেতে পারবেন। নারী যাত্রীরা অনেকেই মনে করেন একটি সংরক্ষিত কোচ থাকলে তারা অনেকেই স্বস্তি খুঁজে পান।
তিনি আরও বলেন, যেহেতু এখানে আলাদা আসন করা হয়নি তাই বসার ক্ষেত্রে কখনো কম বেশি হতে পারে। তবে মতিঝিল পর্যন্ত চালু হলে প্রতিটি একমুখি ট্রেনে সর্বোচ্চ ২ হাজার ৩০৮ জন যাত্রী পরিবহন করা যাবে সে আশাবাদ জানান।
মেট্টোরেলের কোচ বিষয়ে ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড (ডিএমটিসিএল) সূত্রে আরও জানা গেছে, সম্পূর্ণ শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত (এসি) হবে মেট্রোরেলের প্রতিটি কোচ। দুই প্রান্তে দুটি চালক কোচ (ট্রেইলর কার) সহ মোট ৬টি কোচ থাকবে একটি ট্রেনে। প্রতিটি কোচ সাড়ে ৯ ফুট চওড়া।
কোচের ভেতরে দুই সারিতে সবুজ রঙের লম্বা আসন রয়েছে। এর বাহিরেও দাঁড়িয়ে যাতায়াত করার ব্যবস্থাও আছে। মাঝখানের প্রশস্ত জায়গায় যাত্রীরা দাঁড়িয়ে ভ্রমণ করবে। দাঁড়ানো যাত্রীদের ধরার জন্য ওপরে হাতল এবং স্থানে স্থানে খুঁটি আছে। একটি ট্রেনে বসে এবং দাঁড়িয়ে দুইভাবেই যাত্রী যাতায়াত করতে পারবেন। ট্রেনের কোচগুলো এমন ভাবে নির্মাণ করা হয়েছে যাতে স্টেশনে থামার পর এর মেঝে একেবারে প্ল্যাটফর্মের সমতলে থাকে। এতে সহজেই যাত্রীরা হেঁটে ট্রেনে উঠতে পারবেন। কোচের দুই পাশে চারটি করে দরজা। ভাড়া পরিশোধের জন্য থাকবে স্মার্ট কার্ড টিকেটিং ব্যবস্থা।
বিজ্ঞাপন
নারী যাত্রীদের সুবিধা বিষয়ে আরও জানা গেছে, মেট্রো স্টেশনগুলোতে মহিলা যাত্রীদের জন্য পৃথক বাথরুমের ব্যবস্থা আছে এবং তাতে শিশুদের ডায়াপার পরিবর্তনের সুবিধার্থে বিশেষ ব্যবস্থা সংযোজিত আছে। গর্ভবতী মহিলা ও বয়স্ক যাত্রীগণের জন্য মেট্রো ট্রেনের কোচের অভ্যন্তরে আসন সংরক্ষিত থাকবে।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এতে করে ছোট ছোট যানবাহনের ব্যবহার কমে যাবে। জীবাশ্ম ও তরল জ্বালানির ব্যবহারও কমে আসবে। ঢাকা মহানগরীর যাতায়াত ব্যবস্থায় ভিন্নমাত্রা যোগ করবে মেট্রোরেল। এতে কর্মঘণ্টাও সাশ্রয় হবে। রাজধানীর যানজট কমানোর পাশাপাশি যাতায়াত সহজ করতে ২০১২ সালে মেট্রোরেল নির্মাণের প্রকল্প অনুমোদন হয়।
ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের (ডিএমটিসিএল) সূত্র মতে, প্রাথমিকভাবে উত্তরা থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত ১১.৭৩ কিলোমিটার মেট্রোর জন্য উন্মুক্ত করা হচ্ছে। এই পথে থাকবে ৯টি স্টেশন। মেট্রোর প্রথম স্টেশন উত্তরা উত্তর। এরপরের স্টেশন উত্তরা সেন্টার, তারপর উত্তরা দক্ষিণ, এরপর পল্লবী, মিরপুর-১১, মিরপুর-১০, কাজিপাড়া, শ্যাওড়াপাড়া এবং সবশেষ স্টেশন আগারগাঁও। প্রতি দশ মিনিট পর পর ট্রেন আসবে।
ডব্লিউএইচ/এএস

















































































































































































































