শনিবার, ২৩ নভেম্বর, ২০২৪, ঢাকা

বাবা বাইপাসের রোগী মাও অসুস্থ, জানি না তারা কী অবস্থায় আছেন

জেলা প্রতিনিধি
প্রকাশিত: ১৮ জুন ২০২২, ০৭:৪৭ পিএম

শেয়ার করুন:

বাবা বাইপাসের রোগী মাও অসুস্থ, জানি না তারা কী অবস্থায় আছেন
ছবি: সংগৃহীত

‘৪৮ ঘণ্টা ধরে যোগাযোগ নেই। বাবা বাইপাসের রোগী মাও অসুস্থ। জানতেও পারছি না তাদের সর্বশেষ অবস্থা।’ বলছিলেন শর্মি দে নামের একজন। 

বন্যার কারণে সুনামগঞ্জ বিদ্যুত বিচ্ছিন্ন হওয়ায় জেলায় ইন্টারনেট ও নেটওয়ার্ক নেই। ফলে গেল দুই দিন হলো আত্মীয় স্বজনের সঙ্গে যোগাযোগ নেই অনেকেরই। এমনই একজন শর্মি দে। মা বাবার অবস্থান জানলেও অনেকে জানেনই না তাদের আত্মীয় স্বজনেরা কোথায় আছেন, কেমন আছেন।


বিজ্ঞাপন


সিলেট ও সুনামগঞ্জ এলাকার বন্যায় সেখানকার মানুষদের দিন কেমন কাটচ্ছে সেটা ভেবে উদ্বেগ-উৎকন্ঠায় আছেন পার্শ্ববর্তী জেলা মৌলভীবাজারে বসবাসরত আত্মীয় স্বজনেরাও।

ইতিমধ্যেই সিলেট ও সুনামগঞ্জ বিদ্যুত সংযোগ সম্পূর্ণভাবে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। ইন্টারনেট ও নেটওয়ার্ক না থাকায় আতঙ্ক আরও বাড়ছে।

সুনামগঞ্জ পৌর শহরের নুতনপাড়া এলাকায় নিজেদের চারতলা বাড়িতে থাকেন অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক সঞ্চিতা দে এবং স্বামী কাজল দে। বাড়ির নিচতলা পুরোটাই ডুবে গেছে বন্যার পানিতে। তাদের দুই মেয়ের মধ্যে শর্মি দে মৌলভীবাজারের একটি হাসপাতালে চিকিৎসক হিসেবে কর্মরত। আরেক মেয়ে ঊর্মি দে সিলেটে থেকে পড়াশোনা করেন। তারা জানান, বাড়ির নিচতলায়ই থাকতেন তাদের বাবা-মা। নিচতলা তলিয়ে যাওয়ায় তারা উঠেছেন ওপরের তলায়। গত ৪৮ ঘণ্টা ধরে যোগাযোগ নেই তাদের সঙ্গে।

সড়কপথের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন থাকায় সুনামগঞ্জে যেতেও পারছেন জানিয়ে জেলা শহরের বাসিন্দা রাসেল আহমদ বলেন, ‘খুবই চিন্তায় আছি, সেখানে বৃদ্ধ মামা মামি আছেন। তারা যে এখন কী করছেন।’
জেলা শহরের বাসিন্দা সন্দিপ দাশ জানান, ‘সুনামগঞ্জে অনেক আত্মীয় স্বজন আছেন, দুইদিন হয়ে গেল তাদের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করা সম্ভব হচ্ছে না। জানি না তারা কেমন আছেন। খুবই আতঙ্কে আছি।’


বিজ্ঞাপন


শহরের আরেক বাসিন্দা প্রাচুর্য গোস্বামী সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সাহায্যের আবেদন জানিয়ে লেখেন, ‘সুনামগঞ্জ শহরে কোন উদ্ধারকর্মী বা স্বেচ্ছাসেবক টিম আছেন? ৩ দিন ধরে বোনের বাসার কারো সাথে যোগাযোগ নেই। কী অবস্থায় আছে? তাও জানি না। শেষ যোগাযোগে জানলাম তারা বিছানায় বসে আছেন। ঘরের মধ্যে অনেক পানি। সাহায্য চাচ্ছি।’

রাজনগর এলাকার জাহেদ মিয়া। বাবার চাকুরির সূত্রে ছোটবেলা কেটেছে সুনামগঞ্জে। সেখানে অনেক পরিচিতজন আছেন। কিন্তু তাদের কোনো খবরাখবর পাচ্ছেন না জানিয়ে তিনি বলেন, ‘ছোটবেলায় বহুবার এইরকম ভোগান্তির অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হয়েছি৷ সময় বদলিয়েছে কিন্তু বদলায়নি শুধু সুনামগঞ্জের সেই হাওড়পারের মানুষগুলোর উদ্বেগ উৎকন্ঠার দিনগুলো৷ আজও তাদের নির্ঘুম রাত কাট‌ছে।’

প্রতিনিধি/এএ

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

টাইমলাইন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর