মঙ্গলবার, ৩ ডিসেম্বর, ২০২৪, ঢাকা

সিলেট এখন ভুতুড়ে নগরী

সেলিম আহমেদ
প্রকাশিত: ১৮ জুন ২০২২, ১১:০০ পিএম

শেয়ার করুন:

সিলেট এখন ভুতুড়ে নগরী

সন্ধ্যার পর রাজ্যের নিস্তব্ধতা নেমেছে সিলেট নগরীতে। নগরের অনেক জায়গায় নেই বিদ্যুৎ। নেই মোবাইল নেটওয়ার্ক। ইন্টারনেট সেবাও বন্ধ। বন্ধ রয়েছে দোকানপাট, খাবারের হোটেলও। মোমবাতি আর জ্বালানি তেলের সংকটে অনেক বাসায় জ্বলছে না আলোও। সব মিলিয়ে ভুতুড়ে এক পরিস্থিতি। সেই সঙ্গে অজানা আতঙ্ক। 

টানা বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলের কারণে সিলেটের কুমারগাঁও ও বরইকান্দিতে বিদ্যুৎ উপকেন্দ্রে পানি প্রবেশ করায় ১২ টার দিকে পুরো নগরীর বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়। তাতে অন্ধকারে নিমজ্জিত হয়ে পড়ে পুরো সিলেট নগরী। তবে ৬ ঘণ্টা বিদ্যুতহীন থাকার পর শনিবার সন্ধ্যা ৬টার দিকে নগরীর কিছু জায়গায় পুনরায় বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়া হয়েছে।  তবে আপাতত নগরীর উচু এলাকাগুলোতে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হবে বলে জানা গেছে। তাই অধিকাংশ এলাকায় এখন বিদ্যুৎহীন।


বিজ্ঞাপন


গতকাল ৫ টাকার মোমবাতি ১০ থেকে ৫০ টাকায় মিললেও আজ কোথাও মোমবাতি নেই। ফলে অন্ধকারে বসবাস করতে বাধ্য হচ্ছেন সাধারণ মানুষ। এতে আতঙ্ক বেড়েছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, কুমারগাঁও গ্রিড উপকেন্দ্র থেকে সেচ দিয়ে পানি সরিয়ে সিলেট নগরীর এসব জায়গায় বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়া হয়। মূলত সিলেটে যেসব স্থান এখনো প্লাবিত হয়নি সেসব জায়গায় বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়া শুরু হয়েছে। তবে বন্যা কবলিত সুনামগঞ্জ জেলা এখনও বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন অবস্থায় রয়েছে।

উপশহরের বাসিন্দা রজত কান্তি দাস বলেন, তিনদিন ধরে বাসায় বিদ্যুৎ নেই। মোমবাতি জ্বালিয়ে কোনোভাবে রাতে প্রয়োজনীয় কাজ করছি। তবে মোম বাতিও পাওয়া যাচ্ছে না।

লামাপাড়ার বাসিন্দা মো. পারভেজ আহমদ বলেন, দুইদিন ধরে বিদ্যুৎ নেই। বাসায় কোমর পানি। উপরের ফ্লাটে আছি। রান্না-বান্না হচ্ছেনা। শুকনো খাবারের উপর নির্ভর করেই আছি।


বিজ্ঞাপন


তালতলা এলাকার বাবুল আহমেদ বলেন, সুনামগঞ্জে পানিবন্দি বাবা-মা। একে তো তাদের চিন্তা, কারণ যোগাযোগ করতে পারছি না; তার উপর সিলেট শহরে নেই বিদ্যুৎ। সেই সাথে বন্ধ সব খাবারের রেস্টুরেন্ট। ইচ্ছে করলেও রান্না করার উপায় নেই, কারণ গ্যাসও নেই। দুশ্চিন্তায় মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে গেছি।'

তাতিপাড়ার ব্যবসায়ী কাদির আহমদ জানান, ‘পানির কারণে দোকান বন্ধ। বাসায়ও পানি। শুয়ে থাকার অবস্থা নেই, কারণ আশপাশের ছিন্নমূল মানুষকে জায়গা দিয়েছি। সেই সাথে খাবারের সংকট। আমি বুঝছি না আসলে কী করা উচিত। সাপের ভয়ে বাইরে গিয়ে দাঁড়াতে ভয় লাগছে। দিন-রাত একই জায়গায়। আর বেরই বা হব কোথায়? সব জায়গায় পানি।’

অসুস্থ মানুষদের আতঙ্ক আরও বেড়েছে মেডিকেল সেবা বিঘ্নিত হওয়ার ঘটনায়। সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন। হাসপাতালে পানিও উঠে গেছে। ফলে কেউ অসুস্থ হলে কোথায় যাবেন, তা নিয়েও আতঙ্কিত হয়ে আছেন অসুস্থ মানুষজন।

এসএএস/ একেবি

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

টাইমলাইন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর