বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর, ২০২৪, ঢাকা

বন্যায় বিপদ এড়াতে করণীয়

নিশীতা মিতু
প্রকাশিত: ১৮ জুন ২০২২, ১১:০৫ এএম

শেয়ার করুন:

বন্যায় বিপদ এড়াতে করণীয়

টানা বৃষ্টি আর পাহাড়ি ঢলে স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যা পরিস্থিতির মুখোমুখি হয়েছে সিলেটবাসী। জেলার প্রায় ৮০ শতাংশ জায়গা তলিয়ে গেছে পুরোপুরি। পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন ২৫ লাখেরও বেশি মানুষ। একই সঙ্গে বন্যার তীব্রতা বাড়তে শুরু করেছে দেশের উত্তরাঞ্চলেও। আশঙ্কা করা হচ্ছে আগামী দুই দিনের মধ্যে উত্তরাঞ্চলের ১৪টি জেলায়ও বন্যা শুরু হবে। 

বন্যার আগে করণীয়


বিজ্ঞাপন


বন্যার ক্ষয়ক্ষতি থেকে বাঁচতে কিছু বিষয় আগে থেকেই মাথায় রাখতে হয়। পূর্ব প্রস্তুতি থাকলে বন্যাকালীন ক্ষয়ক্ষতি কিছুটা হলেও এড়ানো যায়। 

floodউঁচু করে বাড়ি তৈরি: বন্যায় নিচু এলাকা দ্রুত প্লাবিত হয়। তাই বাড়ি যতটা পারা যায় উঁচু করে তৈরি করুন। বন্যার সাম্ভাব্য উচ্চতা মাথায় রেখে মাটি কেটে ভিটা উঁচু করুন। বন্যার আগের ঘরের বেড়া মজবুত করে নিন। 

গাছ লাগান: বাড়ির চারপাশে যত সম্ভব গাছ লাগান। প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকে রক্ষা করতে গাছ উপকারি ভূমিকা রাখে। নদীর পাড়ে ঢেউ প্রতিরোধের জন্য ঢোল কমলি, কাশিয়া, দূর্বাঘাস ইত্যাদি ভাঙ্গন প্রতিরোধ গুল্ম লাগান। 

floodখাদ্য সংরক্ষণ: বন্যার সময় খাদ্যের অভাব দেখা দেয়। তাই আগে থেকেই কিছু শুকনো খাবার সংরক্ষণ করে রাখুন। চাল, ডাল, মুড়ি, চিড়া, শিশুদের গুঁড়া দুধ, বিস্কুটের মতো অতি প্রয়োজনীয় খাদ্য হাতের নাগালে রাখুন। গবাদি পশু থাকলে তাদের খড়, ভুষিও সংরক্ষণে রাখুন। পাতিল বা মাটির কলসিতে খাবার রাখুন যেন বন্যার পানিতেও তা নষ্ট না হয়।


বিজ্ঞাপন


বন্যার সময় করণীয়  

আগাম প্রস্তুতি নিয়ে রাখলেও বন্যা এলে পরিস্থিতি এলোমেলো হয়ে যায়। ঘরবাড়ি সব তলিয়ে যায়। বন্যা পরিস্থিতি সামলাতে চাই দৃঢ় মনোবল। আকস্মিক বন্যার কবলে পড়লে কী করণীয় চলুন জেনে নেওয়া যাক। 

floodশিশু ও বৃদ্ধদের জন্য নিরাপদ স্থান: বন্যার পানি বাড়িতে প্রবেশ করলেই বাড়ির শিশু, বয়স্ক ব্যক্তি, গর্ভবতী নারী, প্রতিবন্ধীদের দ্রুত বন্যামুক্ত নিরাপদ স্থানে কিংবা আত্মীয় স্বজনদের বাড়িতে রেখে আসুন। 

জরুরি কাগজপত্র সংরক্ষণ: দলিল, সনদপত্র, লাইসেন্সের মতো প্রয়োজনীয় ও জরুরি কাগজপত্র একাধিক পলিথিন দিয়ে মুড়িয়ে বন্যামুক্ত এলাকায় কোনো আত্মীয়-স্বজন বা পরিচিত ব্যক্তির কাছে রাখতে পারেন। বাড়ির উঁচু স্থানেও এসব কাগজ রাখা নিরাপদ নয়। কারণ যেকোনো সময় বন্যা বড় আকার বাড়তে পারে। পানির উচ্চতা বৃদ্ধি পেতে পারে। 

floodপ্রয়োজনীয় জিনিস উঁচু স্থানে: বাড়িতে উঁচু স্থান থাকলে দামী এবং পানিতে নষ্ট হয়ে যাবে এমন প্রয়োজনীয় জিনিসগুলো সেখানে দ্রুত সরিতে রাখুন। উঁচু স্থান না থাকলে একটি উঁচু মাচা তৈরি করতে পারেন। চাইলে বন্যামুক্ত এলাকায় সরিয়ে নিতে পারেন। 

বিশুদ্ধ পানি: বন্যা মোকাবিলায় সবচাইতে গুরুত্বপূর্ণ কাজ হচ্ছে বিশুদ্ধ পানি ও খাদ্য ব্যবহার করা। কারণ, বন্যায় অধিকাংশ রোগই পানি ও খাদ্যবাহিত। তাই বিশুদ্ধ পানি পান করা জরুরি। পানি ছেঁকে কমপক্ষে আধা ঘণ্টা ফুটিয়ে ঠান্ডা করে পান করুন। এই ব্যবস্থা না থাকলে ফিটকিরি, পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট দিয়েও পানি বিশুদ্ধ করা যায়। 

floodপ্রয়োজনীয় ওষুধ: এ সময় নোংরা পানি, আবহাওয়া, টানা বৃষ্টির কারণে নানা স্বাস্থ্যসমস্যা দেখা দেয়। সবচেয়ে বেশি দেখা দেয় ডায়রিয়ার প্রকোপ। হাতের কাছে খাবার স্যালাইন রাখুন। প্রাথমিক চিকিৎসার জন্য স্যাভলন ও ব্যান্ডেজ রাখতে পারেন।

বিদ্যুতের সুইচ বন্ধ: বন্যার পানি ধেয়ে আসলে ঘরের সকল বিদ্যুতের সুইচ এবং মেইন সুইচ বন্ধ করে দিন। এতে বিদ্যুৎ ঘটিত সাম্ভাব্য দুর্ঘটনা এড়ানো সম্ভব হবে।

floodআলোর ব্যবস্থা: দুর্যোগের মধ্যেই রাত কাটাতে হবে। তাই হাতের নাগালে দেশলাই, মোমবাতি, হারিকেন, টর্চ লাইট রাখুন।

বন্যার সময় মনোবল শক্ত রাখুন। নিকটস্থ আশ্রয়কেন্দ্রে চলে যান। নিরাপদে থাকুন। জিনিসপত্রের কথা ভেবে ঘরে থেকে যাবেন না। হঠাৎ পানির স্রোত বাড়লে বিপদে পড়বেন। 

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

টাইমলাইন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর