মঙ্গলবার, ৩ ডিসেম্বর, ২০২৪, ঢাকা

বন্যায় তলিয়ে যাওয়া সিলেটে নৌকা ভাড়া নিয়ে সীমাহীন নৈরাজ্য

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ১৮ জুন ২০২২, ০৫:০৫ পিএম

শেয়ার করুন:

বন্যায় তলিয়ে যাওয়া সিলেটে নৌকা ভাড়া নিয়ে সীমাহীন নৈরাজ্য
ছবি: সংগৃহীত

বন্যায় বিপর্যস্ত পুরো সিলেট। পানিবন্দি লাখ লাখ মানুষ। সহায়তা পেতে মরিয়া বানভাসিরা। তাই সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিতে অনেকেই যাচ্ছেন সিলেটের বন্যার্তদের কাছে। আর এই কাজে তাদের প্রয়োজন পড়ছে নৌকার। তবে দুর্যোগের মাঝেই নৌকা ভাড়া নিয়ে নৈরাজ্য দেখা দিয়েছে বলে জানা গেছে। স্থানীয় নৌকার মাঝিরা প্রতি ঘণ্টার জন্য ভাড়া চাচ্ছেন ৫০ হাজার থেকে এক লাখ টাকা পর্যন্ত।

শুক্রবার (১৭ জুন) রাতে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেইজে এমন তথ্যই জানিয়েছেন কণ্ঠশিল্পী তাসরিফ খান।


বিজ্ঞাপন


অন্যদের মতো সিলেটে বন্যার্তদের জন্য সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন তিনি। ছুটে গেছেন সিলেটে। সেখানকার ঘটনার বর্ণনা দিয়ে ফেসবুক পেইজে দেওয়া এক স্ট্যাটাসে নৌকা ভাড়ার নৈরাজ্যের কথা জানান তিনি।

স্ট্যাটাসে তাসরিফ লিখেন, ‘আজ (শুক্রবার) সিলেটের কোম্পানিগঞ্জ গিয়েছিলাম একজন অন্তঃসত্ত্বা মহিলাকে উদ্ধার করার জন্যে। জানেন? এখানে কোন কোন নৌকা এক ঘণ্টার জন্যে ৫০ হাজার, এক লাখ টাকাও চাইছে। ওরাই বা কি করবে ওদের ত সব গেছে।’

তাসরিফ আরও লিখেন, ‘যাবার পথে দেখলাম সেনাবাহিনীও নৌকার খোঁজ করছে ঘাঁটে বসে। হেল্প চাইলাম, উনারাও নিরুপায়। অনেক কষ্টে একজন মাঝির হাতে-পায়ে ধরে রোগীর কথা বলিয়ে রাজি করালাম। তবে মাঝি আস্তে আস্তে বলছিল, আমার ঘরের লোক গলা পানিতে ভাসতাছে আমি জাইতাম না।’

‘গ্রামের মানুষের মনটা হয় আকাশের চেয়ে বড়। রাজি হয়ে ঠিকি নিয়ে গেলেন আমাদের। কোনরকমে স্রোত পার করে পৌঁছালাম সেই অন্তঃসত্ত্বা মহিলার ঘরের দরজায়।’

ঘটনার বর্ণনা দিয়ে তাসরিফ আরও লিখেছেন, ‘কোন নেটওয়ার্ক বা যোগাযোগের ব্যবস্থা ছিল না। উনার ছোট বোন আমাদের সাথে গিয়েছিল, বাড়িটাও চিনিয়ে দিল আমাদের। মেয়েটা ওর বড় বোনের চিন্তায় অনেকটা দম আটকে ছিল পুরো রাস্তা। গিয়ে শুনলাম, অল্প কিছুক্ষণ আগেই উনারা অনেক কষ্টে আরেকটা নৌকা মেনেজ করে সিলেটের উদ্দেশে রওনা করেছেন।’

নিজের অনুভূতি জানিয়ে ওই স্ট্যাটাসে তাসরিফ লিখেন, ‘পানিতে সব ডুবে যাওয়ায় ওদিকটা যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন। তাই উনার খোঁজও নিতে পারছিলাম না। একদিকে ওনাদের দুশ্চিন্তা আর অপরদিকে ভাবছিলাম, এটা না মাত্র একটা কাহিনী। এরকম লাখ লাখ কাহিনীর ওপর দীর্ঘশ্বাস ফেলে পার হচ্ছে সিলেটবাসীর দিন।’

এরই মধ্যে বিভিন্ন ব্যক্তি তাসরিফের মাধ্যমে বন্যার্ত সিলেটবাসীর সহযোগিতায় এগিয়ে এসেছেন। এমন তথ্য জানিয়ে তাসরিফ লিখেছেন, ‘দুই দিনে ১৬ লাখ টাকা অনুদান এসেছে। আমাদের সব নাম্বারের লিমিট শেষ। এখন কেউ টাকা পাঠায়েন না। আমরা এইটা ডিস্ট্রিবিউট করার পর প্রয়োজন হলে আবার জানাব। হায়রে পানি! কখনো মানুষরে হাসায়, কখনো কাঁদায়।’

কারই/আইএইচ

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

টাইমলাইন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর