বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় মোখার আঘাত পুরোপুরি না লাগলেও আংশিক আঘাতে লণ্ডভণ্ড হয়ে গেছে উপকূলীয় জেলা কক্সবাজার। টেকনাফসহ উপকূলীয় এলাকায় ২০ হাজারের বেশি ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছে বলে স্থানীয় প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে। সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সেন্টমার্টিন দ্বীপ। সেখানকার প্রায় ৮০ ভাগ কাঁচা ও আধাপাকা ঘর ভেঙে পড়েছে।
রোববার (১৪ মে) রাত ৯টার দিকে কক্সবাজার জেলা প্রশাসন সূত্রে এমন তথ্য জানা গেছে।
বিজ্ঞাপন
কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) বিভীষণ কান্তি দাশ ঢাকা মেইলকে বলেন, কক্সবাজার জেলার সবকটি উপজেলার ২০ হাজার ৪৬৯টি ঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তবে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে টেকনাফ উপজেলায়।
এই কর্মকর্তা বলেন, ৫৭৬টি আশ্রয়কেন্দ্রে দিনভর শুকনো খাবার দেওয়া হয়েছে। তবে সন্ধ্যার পর থেকে যাদের বাড়ি-ঘর তেমন ক্ষতি হয়নি তাদের নিজ বাড়িতে অবস্থান করার জন্য বলা হয়েছে।
কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মুহাম্মদ শাহীন ইমরান ঢাকা মেইলকে বলেন, সেন্টমার্টিন, শাহপরীর দ্বীপ, টেকনাফ, উখিয়া, কুতুবদিয়া ও মহেশখালীর বেশিভাগ ঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে খবর পেয়েছি। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত কোনো হতাহতের খবর পাইনি। দুজন মৃত্যুর খবর জনমুখে শুনেছি। কিন্তু কোনো মাধ্যমেই আমরা নিশ্চিত হতে পারিনি।
এর আগে রোববার (১৪ মে) দুপুরে কক্সবাজারের উপকূলীয় এলাকায় আঘাত হানে ঘূর্ণিঝড় মোখা। এর মূল আঘাতটি মিয়ানমারে হওয়ায় অপেক্ষাকৃত কম ক্ষতি হয় বাংলাদেশের।
বিজ্ঞাপন
এদিকে আতঙ্কের ঘূর্ণিঝড় মোখার বিপদ কেটে গেছে। আবহাওয়া অধিদফতরের ২২ নম্বর বিশেষ ও সিরিজের সর্বশেষ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় ‘মোখা’ উত্তর-উত্তরপূর্ব দিকে অগ্রসর হয়ে রোববার সন্ধ্যা ৬টায় উপকূল অতিক্রম সম্পন্ন করেছে এবং দুর্বল হয়ে সিটুয়ে, মিয়ানমারের স্থলে গভীর নিম্নচাপে পরিণত হয়েছে। এটি স্থলভাগের অভ্যন্তরে আরও উত্তর-উত্তরপূর্ব দিকে অগ্রসর ও বৃষ্টি ঝরিয়ে ক্রমান্বয়ে দুর্বল হতে পারে।
এমতাবস্থায় কক্সবাজার সমুদ্রবন্দরকে ১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেত নামিয়ে তার পরিবর্তে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। পাশাপাশি চট্টগ্রাম ও পায়রা সমুদ্রবন্দরকে ৮ নম্বর মহাবিপদ সংকেত নামিয়ে তার পরিবর্তে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। এছাড়া মোংলা সমুদ্রবন্দরকে ৪ নম্বর স্থানীয় হুঁশিয়ারি সংকেত নামিয়ে তার পরিবর্তে নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।
তবে আবহাওয়াবিদ ওমর ফারুক স্বাক্ষরিত ওই বিজ্ঞপ্তিতে উত্তর বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত সকল মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলা হয়েছে।
কেআর/জেবি