বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট গভীর নিম্নচাপটি ঘূর্ণিঝড় ‘মোখা’য় রূপ নিয়ে আগামী রোববার (১৪ মে) নাগাদ কক্সবাজারের টেকনাফে আঘাত হানতে পারে বলে জানিয়েছেন কানাডার সাসকাচুয়ান বিশ্ববিদ্যালয়ের আবহাওয়া ও জলবায়ুবিষয়ক পিএইচডি গবেষক মোস্তফা কামাল পলাশ।
বুধবার (১০ মে) রাতে পৃথক দুটি ফেসবুক পোস্টে এই আশঙ্কার কথা জানিয়েছেন তিনি।
বিজ্ঞাপন
ফেসবুক পেজে দেওয়া পোস্টে আবহাওয়া ও জলবায়ুবিষয়ক এই পিএইচডি গবেষক লিখেছেন, ঘূর্ণিঝড় মোখা (সম্ভব্য) টেকনাফ উপজেলায় অবস্থিত রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবিরগুলোর ওপর দিয়ে অতিক্রম করার আশঙ্কা প্রবল। ফলে রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবিরগুলোর ওপর ব্যাপক পরিমাণ বৃষ্টি, বন্যা থেকে শুরু করে পাহাড় ধ্বসের প্রবল ঝুঁকি রয়েছে।
ফেসবুকের ওই পোস্টে তিনি আরও জানিয়েছেন, স্থলভাগে আঘাতের সময় ঘূর্ণিঝড় মোখার বাতাসের গতিবেগ থাকতে পারে ঘণ্টায় ১৩০ থেকে ১৫০ কিলোমিটার। ফলে রোহিঙ্গা ক্যাম্পের ঘুরগুলো উড়িয়ে নিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা শতভাগ। এছাড়াও ঘূর্ণিঝড় মোখার অগ্রভাগ রোববার সকাল ৬টার পর থেকে দুপুর ১২টার মধ্যে চট্টগ্রামের উপকূলে আঘাত করার আশঙ্কা রয়েছে। তবে ঘূর্ণিঝড়ের কেন্দ্র দুপুর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত ও পেছনের অংশ সন্ধ্যা থেকে সোমবার (১৫ মে) ভোর পর্যন্ত উপকূল অতিক্রম করার সম্ভাবনা রয়েছে।
>> আরও পড়ুন: শক্তি সঞ্চয় করছে ‘মোখা’
এদিকে, পৃথক আরেকটি পোস্টে একটি ছবি দিয়ে কানাডার সাসকাচুয়ান বিশ্ববিদ্যালয়ের এই গবেষক লিখেছেন, জাপানের কৃত্রিম ভূ-উপগ্রহ হিমাওয়ারি- ৯ ঘূর্ণিঝড় ‘মোখা’র (সম্ভব্য) কারণে সৃষ্ট মেঘের ছবি তুলেছে আজ (বুধবার) সন্ধ্যা ৬টা ৫০ মিনিটে। ছবিটির গঠন দেখে অনুমান করছি যে, আগামী ৩ থেকে ৬ ঘণ্টার মধ্যে গভীর নিম্নচাপ অবস্থা থেকে পূর্ণাঙ্গ ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হবে। গভীর নিম্নচাপটির কেন্দ্র বর্তমানে প্রায় ১০ দশমিক ৫ ডিগ্রী উত্তর অক্ষাংশ ও ৮৬ ডিগ্রী পূর্ব দ্রাঘিমাংশে অবস্থান করছে।
বিজ্ঞাপন
ফেসবুকের ওই পোস্টে তিনি আরও জানিয়েছেন, ঘূর্ণিঝড় ‘মোখা’র অগ্রভাগ রোববার (১৪ মে) সকাল ৬টার পর থেকে দুপুর ১২টার মধ্যে চট্টগ্রাম বিভাগের উপকূলে আঘাত করার আশঙ্কা করা হচ্ছে। এছাড়া ঘূর্ণিঝড়ের কেন্দ্র দুপুর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত ও পেছনের অংশ সন্ধ্যা থেকে সোমবার (১৫ মে) ভোর পর্যন্ত উপকূল অতিক্রম করার সম্ভাবনা রয়েছে।
ঘূর্ণিঝড়টি চট্টগ্রাম, কক্সবাজার ও মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের উপর দিয়ে স্থলভাগে আঘাত করার সর্বোচ্চ সম্ভাবনা রয়েছে জানিয়ে তিনি আরও লিখেছেন, স্থলভাগে আঘাতের সময় ঘূর্ণিঝড় মোখার বাতাসের গতিবেগ থাকতে পারে ঘণ্টায় ১৩০ থেকে ১৫০ কিলোমিটার। উল্লেখিত গতিবেগে ঘূর্ণিঝড় মোখা চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার জেলার উপকূলের উপর দিয়ে অতিক্রম করার সময় এই দুই জেলার উপকূলীয় এলাকাগুলোয় ১৫ ফুট উচ্চতার জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
>> আরও পড়ুন: ‘মোখা’ মোকাবেলায় ফায়ার সার্ভিসের ১৪৯ স্টেশন প্রস্তুত
আবহাওয়া ও জলবায়ুবিষয়ক এই পিএইচডি গবেষক আরও জানিয়েছেন, ঘূর্ণিঝড় মোখার কেন্দ্র কক্সবাজার জেলার সেন্টমার্টিন দ্বীপ, টেকনাফ, কুতুবদিয়া ও মহেশখালী উপজেলার উপর দিয়ে অতিক্রম করার প্রবল আশঙ্কা রয়েছে। পাশাপাশি টেকনাফ উপজেলায় অবস্থিত রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবিরগুলোর উপর দিয়ে এটি অতিক্রম করার আশঙ্কাও প্রবল। ফলে রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবিরগুলোতে পাহাড় ধ্বসেরও প্রবল ঝুঁকি রয়েছে।
/আইএইচ