রোববার, ২৪ নভেম্বর, ২০২৪, ঢাকা

ঘূর্ণিঝড় মোখা: সমুদ্রে নিষেধাজ্ঞা, সেন্টমার্টিন ছাড়ছে মানুষ

জেলা প্রতিনিধি
প্রকাশিত: ১২ মে ২০২৩, ০৮:২২ পিএম

শেয়ার করুন:

ঘূর্ণিঝড় মোখা: সমুদ্রে নিষেধাজ্ঞা, সেন্টমার্টিন ছাড়ছে মানুষ

কক্সবাজারে ঘূর্ণিঝড় মোখার প্রভাবে উত্তাল রয়েছে সমুদ্র সৈকত। সেই সঙ্গে সমুদ্রের পানির উচ্চতা ৩ থেকে ৪ ফুট উচ্চতায় বৃদ্ধি পেয়েছে। হালকা ও মাঝারি বাতাসও বইছে।ঘূর্ণিঝড় মোখার দূরত্ব কক্সবাজার উপকূল থেকে ৯৩৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণ পশ্চিমে। সমুদ্র উপকূলে ৪ নম্বর হুঁশিয়ারি সংকেত দেখাতে বলেছেন আবহাওয়া অফিস।

সমুদ্র উত্তাল ও সংকেত বৃদ্ধি পাওয়ায় পর্যটকদের সমুদ্রের পানিতে নামতে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে জেলা প্রশাসন। এর আগে শুক্রবার (১২ মে) বেলা ২টা ৪০মিনিট থেকে ৪ টা পর্যন্ত মাঝারি বৃষ্টিপাত হয়েছে। আকাশ এখনও মেঘাচ্ছন্ন রয়েছে।


বিজ্ঞাপন


কক্সবাজার আবহাওয়া অফিসের সহকারী আবহাওয়াবিদ আবদুর রহমান জানিয়েছেন, মোখার প্রভাবে দুপুরে মাঝারি বৃষ্টিপাত হয়েছে। থেমে থেমে আবারও হতে পারে। শুক্রবার সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত ঘূর্ণিঝড়টি কক্সবাজার সমুদ্র উপকূল থেক ৯৩৫ কিলোমিটার দক্ষিণ - দক্ষিণ পশ্চিমে অবস্থান করছে। এখন ৪ নম্বর হুঁশিয়ারি সংকেত চলছে। মাছ ধরার ট্রলারগুলোকে উপকূলের কাছাকাছি চলে আসতে বলা হয়েছে।

Coxbazar

এদিকে, ঘূর্ণিঝড় মোখার প্রভাবে কক্সবাজারের উখিয়া ও টেকনাফের ৩৩টি রোহিঙ্গা ক্যাম্পের ১০ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গাকে ঝুঁকিপূর্ণ বিবেচনায় নানা প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে সংশ্লিষ্ট প্রশাসন। তাদের জন্য প্রস্তুত রাখা হয়েছে সাড়ে তিন হাজার স্বেচ্ছাসেবক। ঘূর্ণিঝড় আঘাত হানলে পাহাড়ের ওপরে ও পাদদেশে যারা ঝুঁকি নিয়ে বসবাস করছে, তাদের নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেবেন স্বেচ্ছাসেবকরা।

অতিরিক্ত শরণার্থী, ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার সামছুদ্দৌজা নয়ন তিনি বলেন, রোহিঙ্গাদের নিরাপত্তা নিশ্চিতসহ ঘূর্ণিঝড়-পরবর্তী সময়ের পরিস্থিতি বিষয়ে প্রস্তুতি সভা করা হয়েছে। সভায় ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলায় সব ধরনের প্রস্তুতির সিদ্ধান্ত হয়েছে। ইতোমধ্যে ক্যাম্পগুলোতে সাড়ে তিন হাজার স্বেচ্ছাসেবক প্রস্তুত রয়েছেন। পাশাপাশি ক্যাম্পে স্কুল, মসজিদ, মাদরাসাসহ মজবুত সেন্টারগুলো প্রস্তুত রাখা হয়েছে।


বিজ্ঞাপন


অন্যদিকে, সেন্টমার্টিনে বৃহস্পতিবার থেকে শুক্রবার বিকাল পর্যন্ত প্রায় দুই হাজার লোকজন টেকনাফে নিরাপদ আশ্রয়ে চলে গেছে বলে জানা গেছে।

সেন্টমার্টিন ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ফিরোজ আহমদ খান বলেন, শুক্রবার সকাল থেকে ঘূর্ণিঝড় আতঙ্কে সেন্টমার্টিনের লোকজন টেকনাফে যাওয়া শুরু করেছে। বৃহস্পতিবার থেকে শুক্রবার বিকাল নাগাদ প্রায় দুই হাজার মানুষ কাঠের ট্রলার ও স্পিডবোটে করে টেকনাফে গেছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। আরও কিছু লোক টেকনাফ যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন।

ফিরোজ জানান, মানুষ আতঙ্কে রয়েছে। কখন কি হয়ে যায় তা বলা যায় না। তাই সময় থাকতে নিরাপদে আশ্রয় নেওয়া উত্তম।

Coxbazar

টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. কামরুজ্জামান বলেন, ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলায় সেন্টমার্টিন দ্বীপে তিনটি সাইক্লোন শেল্টারসহ ৩৭টি হোটেল প্রস্তুত রাখা হয়েছে। তাতে সাত হাজারের বেশি মানুষ আশ্রয় নিতে পারবেন। মানুষজনকে সচেতন করতে এলাকায় মাইকিং করা হচ্ছে। পরিস্থিতি অনুযায়ী মানুষকে সাইক্লোন শেল্টারে আনা হবে। সেখানে পর্যাপ্ত পরিমাণে শুকনা খাবার মজুত রাখা হয়েছে।

কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আবু সুফিয়ান বলেন, সৈকতে উৎসুক জনতার ভিড় না করতে বলা হচ্ছে। ইতোমধ্যে সৈকতের বিচ ছাতা সরিয়ে নিয়ে আসতে বলা হয়েছে। একই সঙ্গে সৈকতের আশপাশের দোকান সন্ধ্যার পর বন্ধ রাখতে বলা হয়েছে। এ পরিস্থিতিতে সৈকতের পানিতে নামতে নিষেধাজ্ঞাও প্রদান করা হয়েছে। যার জন্য প্রশাসন, বিচকর্মী, ট্যুরিস্ট পুলিশ ও লাইফ গার্ডকে সঙ্গে নিয়ে কাজ করা হচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, প্রশাসন মানুষজনের নিরাপত্তায় সর্বোচ্চ সজাগ রয়েছে। দুর্যোগকালীনের জন্য নগদ ২৫ লাখ টাকা রাখা হয়েছে। এর মধ্যে ১০ লাখ টাকা উপজেলা পর্যায়ে পাঠানো হয়েছে। একই সঙ্গে ৫.৯০ মেট্রিক টন চাল, ৩.৫ মেট্রিক টন টোস্ট বিস্কুট, ৩.৪ মেট্রিক টন কেক, ১৯৪ বান্ডেল ঢেউটিন, ২০ হাজার প্যাকেট ওরস্যালাইন এবং ৪০ হাজার পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট মজুদ রাখা হয়েছে। প্রস্তুত রয়েছে ৫৭৬টি আশ্রয়কেন্দ্র এবং ১০ হাজারের বেশি স্বেচ্ছাসেবক। অবস্থা বিবেচনায় ঝুঁকিপূর্ণদের আশ্রয়কেন্দ্রে নিয়ে আনা হবে। টেকনাফ ও সেন্টমার্টিনের বাসিন্দাদের আশ্রয়কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।

প্রতিনিধি/এসএস

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

টাইমলাইন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর