রোববার, ২৪ নভেম্বর, ২০২৪, ঢাকা

মোখার আঘাতে মিয়ানমারে নিহত ‘কয়েকশ’ 

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: ১৬ মে ২০২৩, ০৩:০৯ পিএম

শেয়ার করুন:

মোখার আঘাতে মিয়ানমারে নিহত ‘কয়েকশ’ 
ঘূর্ণিঝড়টি অস্থায়ী শিবিরগুলোর ব্যাপক ক্ষতি করেছে, যেখানে অনেক রোহিঙ্গা বাস করতে বাধ্য হয়েছে। ছবি: এএফপি

বাংলাদেশের কক্সবাজার হয়ে ঘূর্ণিঝড় মোখা সম্প্রতি মিয়ানমারে প্রবল বেগে আঘাত হেনেছে। দেশটির ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় ঘূর্ণিঝড় পরবর্তী উদ্ধার ও ত্রাণ তৎপরতা চালাচ্ছে একটি মানবিক গোষ্ঠী। তারা জানিয়েছে, ঝড়ে শত শত লোক নিহত হয়েছে। এক প্রতিবেদনে এমন তথ্য জানিয়েছে আল জাজিরা।

রবিবার মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের সিত্তওয়েতে সম্পূর্ণ শক্তি নিয়ে আছড়ে পড়ে মোখা। যে এলাকায় ঘূর্ণিঝড়টি ব্যাপক আঘাত হেনেছে সেটি মিয়ানমারের সামরিক জান্তার নিয়ন্ত্রণে নেই। সোমবার রাতে সামরিক জান্তা জানায় যে, ঘণ্টায় ২৫০ কিলোমিটার বেগে ঝড়টি আঘাত হানে। এতে গাছপালা, টেলিযোগাযোগ টাওয়ার এবং বহু ছাড় ভেঙে পড়ে। 


বিজ্ঞাপন


জাতিসংঘের মানবিক বিষয়ক সমন্বয়ের কার্যালয় (UNOCHA) বলেছে যে, সেখানে ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ হয়েছে। মুষলধারে বৃষ্টি এবং ঝড়ের কারণে ৩ থেকে সাড়ে ৩ মিটার উচ্চতার ঢেউয়ে সিত্তওয়ের চারপাশে নিম্নাঞ্চলে ব্যাপক বন্যার সৃষ্টি হয়েছে।

সোমবার একটি আপডেটে বলা হয়েছে, প্রাথমিক প্রতিবেদনে ব্যাপক ক্ষতির খবর পাওয়া গেছে। সেখানে বসবাসরত দুর্বল সম্প্রদায়ের এবং আগে থেকে বাস্তুচ্যুত লোকদের সহায়তা প্রয়োজন।

myanmar mocha
ম্যাক্সার টেকনোলজিস থেকে পাওয়া স্যাটেলাইট ইমেজে সিত্তওয়েতে ভবন ও অবকাঠামোর ব্যাপক ক্ষতি ধরা পড়েছে। ওপরের ছবিটি গত ফেব্রুয়ারিতে তোলা হয়েছিল। নিচের ছবিটি ঘূর্ণিঝড় মোখার আঘাতের পর তোলা। ছবি: এএফপি

২০১৭ সালে ক্রাকডাউনের কারণে রাখাইনে থাকা হাজার হাজার রোহিঙ্গা মানবেতর জীবন যাপন করছেন। এছাড়া মোখার গতিপথে ২০ লাখের বেশি মানুষের বসবাস। এদের বেশিরভাগের চলাচলের ওপর কঠোর নিষেধাজ্ঞা রয়েছে এবং অকার্যকর শিবিরে তাদের বাস।


বিজ্ঞাপন


পার্টনারস রিলিফ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (যা রাখাইনে কাজ করে) বলেছে যে, সিত্তওয়ের কাছে বসবাসকারী রোহিঙ্গারা তাদের বলেছে যে, তাদের শিবিরগুলো প্রায় ধ্বংস হয়ে গেছে এবং অন্যান্য প্রাথমিক প্রতিবেদনগুলো 'মৃত্যুর সংখ্যা কয়েকশ গণনা করছে'।

রোহিঙ্গা কর্মী এবং জাতীয় ঐক্য সরকারের মানবাধিকার মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা অং কিয়াও মো টুইটবার্তায় বলেছেন যে, শুধু সিত্তওয়েতে মৃত্যুর সংখ্যা ৪০০ ছিল। তিনি মাটিতে মিশে যাওয়া ভবনগুলোর ভিডিও শেয়ার করেছেন, তবে বিস্তারিত বলেননি।

সামরিক মালিকানাধীন মায়াওয়াদ্দি চ্যানেল সোমবার জানিয়েছে যে, ঘূর্ণিঝড়ে তিনজন নিহত হয়েছে।

২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে অং সান সু চির নির্বাচিত সরকারের কাছ থেকে সামরিক বাহিনী ক্ষমতা দখল করার পর থেকে মিয়ানমার তীব্র সংকটে নিমজ্জিত হয়েছে। দেশটিতে গণ বিক্ষোভ পরিণত হয়েছে সশস্ত্র বিদ্রোহে।

সেনাবাহিনী এবং ইউনাইটেড লিগ অফ আরাকান (ইউএলএ) (জাতিগত আরাকান আর্মির রাজনৈতিক শাখা) প্রত্যেকেই রাখাইনের প্রশাসনিক নিয়ন্ত্রণের দাবি করে। দুই পক্ষের সংঘাতে বহু বছর ধরে হাজার হাজার মানুষ বাস্তুচ্যুতির শিকার হয়েছে।

rakhain mocha
রাখাইনের শিবিরগুলোতে যথেষ্ট ক্ষতির খবর পাওয়া গেছে। ছবি: এএফপি

মিয়ানমারের রাষ্ট্র পরিচালিত গ্লোবাল নিউ লাইট সোমবারের সংস্করণে প্রাকৃতিক দুর্যোগ কমিটির জরুরি বৈঠকে সেনাপ্রধান সিনিয়র জেনারেল মিন অং হ্লাইংকে দেখানো হয়েছে।

অভ্যুত্থান ঘটানো এই নেতা বলেছিলেন যে, 'মিয়ানমারের সকল নাগরিককে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেওয়া প্রয়োজন'। মিয়ানমার রোহিঙ্গাদের নাগরিক মনে করে না।

মঙ্গলবার রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম জানিয়েছে যে, জেনারেল সিত্তওয়ে পরিদর্শন করেছেন। তবে হতাহতের বিষয়ে কিছু উল্লেখ করা হয়নি।

ঘূর্ণিঝড়ের আগে মিয়ানমার ও বাংলাদেশের কয়েক লাখ মানুষকে আশ্রয়কেন্দ্রে সরিয়ে নেওয়া হয়েছিল।

একে

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

টাইমলাইন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর