ধেয়ে আসছে বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় মোখা। অতি শক্তিশালী এই ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে জলোচ্ছ্বাস হলে পূর্ব সুন্দরবনের বাঘ ও হরিণের ভেসে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্টরা।
সুপার সাইক্লোন সিডর, আইলা, মহসিন, বুলবুল, আম্ফান ও ইয়াসের মতো ঘূর্ণিঝড় ও জলোচ্ছ্বাসে মারা যায় সুন্দরবনের বাঘ ও হরিণসহ অনেক বন্যপ্রাণী। তবে সুন্দরবনের করমজল বন্যপ্রাণী প্রজনন কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হাওলাদার আজাদ কবির বলেন, মোখার প্রভাবে জলোচ্ছ্বাস না হলে সুন্দরবনের বন্যপ্রাণী ভেসে যাওয়ার সম্ভাবনা খুবই কম।
তিনি আরও জানান, ঘূর্ণিঝড় মোখা কারণে শনিবার ভোর থেকে সুন্দরবনে পর্যটকসহ সব ধরনের বনজীবীদের প্রবেশ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। করমজল বন্যপ্রাণী প্রজনন কেন্দ্রের ৩০টি হরিণ, ১২৩টি লবণ পানি প্রজাতির কুমির ও বিলুপ্তপ্রায় প্রজাতির ৪৩২টি বাটাগুর বাচকা কচ্ছপ নিরাপদ রাখতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
বিজ্ঞাপন
সুন্দরবনে ৮৮টি পুকুরের পাড় উঁচু থাকায় ঝড় ও জলোচ্ছ্বাসের সময় বন্যপ্রাণীরা সেখানে আশ্রয় নেয় জানিয়ে এই কর্মকর্তা বলেন, বেশি উচ্চতার জলোচ্ছ্বাস না হলে সুন্দরবনের বন্যপ্রাণী ভেসে যাবার সম্ভাবনা খুবই কম। সর্বশেষ জরিপে সুন্দরবনে ১১৪টি বাঘ, ২ লাখ হরিণ, ৫০ হাজার বন্যশুকর, ৪০ হাজার বানর, ৩০০ কুমির, ৩০ হাজার উদবিড়ালসহ ৩৭৫ প্রজাতির বিভিন্ন বন্যপ্রাণী রয়েছে।
এদিকে ঘূর্ণিঝড় মোখার কারণে মোংলাবন্দরের পশুর চ্যানেল থেকে সব লাইটার জাহাজকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। বর্তমানে মোংলাবন্দর চ্যানেলে নিরাপদে পণ্যবাহী ১১টি বাণিজ্যিক জাহাজ নোঙ্গর করে রয়েছে। চট্টগ্রাম থেকে নিরাপদ আশ্রয়ের জন্য নৌবাহিনী ও কোস্টগার্ডের বড় ৬টি যুদ্ধ জাহাজ মোংলাবন্দরে এসে নোঙ্গর করেছে। এসব যুদ্ধ জাহাজের মধ্যে রয়েছে নৌবাহিনীর বিএনএস বঙ্গবন্ধু, বিএনএস স্বাধীনতা, বিএনএস প্রত্যাশা, বিএনএস প্রত্যায় ও কোস্টগার্ডের বিসিজিএস তাজউদ্দিন ও বিসিজিএস সৈয়দ নজরুল।
মোংলাবন্দর কর্তৃপক্ষের হারবার মাস্টার ক্যাপটেন মোহাম্মদ শাহিন মজিদ জানান, ঘূর্ণিঝড় মোখার কারণে মোংলাবন্দরের পশুর চ্যানেল থেকে সব লাইটার জাহাজকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। বর্তমানে মোংলাবন্দর চ্যানেলে নিরাপদে পণ্যবাহী ১১টি বাণিজ্যিক জাহাজ নোঙ্গর করে রয়েছে। চট্টগ্রাম থেকে নিরাপদ আশ্রয়ের জন্য নৌবাহিনী ও কোস্টগার্ডের বড় ৬টি যুদ্ধ জাহাজ মোংলাবন্দরে এসে নোঙ্গর করেছে। কর্তৃপক্ষ বন্দরে এলার্ট নম্বর-‘২’ জারি রয়েছে। সতর্ক সংকেত আরও বাড়ানো হলে বন্দরে পণ্য ওঠা-নামা বন্ধ করা হবে।
এছাড়াও বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জ ও শরণখোলার ১০টি পয়েন্টে পানি উন্নয়ন বের্ডের ১০ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ ঝুঁকিপূর্ণ থাকায় জলোচ্ছ্বাসের হুমকিতে রয়েছে কয়েক লাখ মানুষ।
প্রতিনিধি/এইউ

















































































































































































































































































