মোংলা আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, শুক্রবার (১২ মে) সকালে ঘূর্ণিঝড় মোখা মোংলা থেকে ১ হাজার ১৬৫ কিলোমিটার দূরে অবস্থান করছে। এমতাবস্থায় মোখার ক্ষয়ক্ষতি থেকে রক্ষায় প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে মোংলা বন্দর কতৃপক্ষ, কোস্টগার্ড পশ্চিমজোন, সুন্দরবন বিভাগ। নিরাপদ অবস্থানে আনা হচ্ছে বাংলাদেশ নৌবাহির যুদ্ধ জাহাজগুলো।
মোংলা বন্দরের হারবার বিভাগ জানিয়েছে, শুক্রবার (১২ মে) বন্দরে ১০টি বিদেশি বাণিজ্যিক জাহাজ অবস্থান করছে। এর মধ্য ৩টি জাহাজ বন্দর ত্যাগ করার কথা রয়েছে। একইসঙ্গে আরও ৪টি জাহাজ পণ্য খালাসের জন্য বন্দর চ্যানেলে প্রবেশ করার কথা রয়েছে।
এ ছাড়া গভীর সাগর থেকে বাংলাদেশে নৌবাহিনীর ৪টি যুদ্ধ জাহাজ বৃহস্পতিবার বন্দর চ্যানেলে নিরাপদ অবস্থানে রাখা হয়েছে। আজ নৌবাহিনীর আরও একটি জাহাজ বন্দর চ্যানেলে প্রবেশের কথা রয়েছে। বন্দর কতৃপক্ষ জানিয়েছে, ঝড়ের প্রতিটি মুহূর্ত্বের খবর পর্যালোচনা করে বন্দরের কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে।
বিজ্ঞাপন
এদিকে সুন্দরবন সংলগ্ন উপকূলীয় এলাকার জেলেদের ঘূর্ণিঝড়ের ক্ষয়ক্ষতি থেকে রক্ষায় ঘূর্ণিঝড় মোখা আঘাত আনার আগেই নিরাপদ আশ্রয়ে অবস্থান নেওয়ার জন্য প্রচারণামূলক কার্যক্রম চালাচ্ছে বাংলাদেশ কোস্টগার্ড।
কোস্টগার্ড পশ্চিম জোনের অপারেশন কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট তারেক আহম্মেদ জানিয়েছেন, কোস্টগার্ড পশ্চিম জোনের একটি জোনাল অফিস ও ১৪টি স্টেশনে কর্মরতদের এবং যুদ্ধ জাহাজগুলো প্রস্তুত রাখা হয়েছে। ঝড়ের আগে ও পরে সকল ধরনের সহায়তার জন্য তারা প্রস্তুত বলে জানান কোস্টগার্ডের এই কর্মকর্তা। এ ছাড়া কোস্টগার্ডের পক্ষ থেকে একটি কনট্রোল রুম চালু করা হয়েছে।
এদিকে সুন্দরবনের নদ-নদীতে মাছ ধরতে থাকা সকল জেলেদের উপকূলের কাছাকাছি থাকতে বলা হয়েছে বন বিভাগের পক্ষ থেকে।
সুন্দরবন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা বেলায়েত হোসেন (ডিএফও) জানিয়েছেন, সুন্দরবন পূর্ব-পশ্চিম বিভাগের ২টি রেঞ্জ অফিসের আওতায় ১৬টি স্টেশন ও ৬৩টি টহল ফাঁড়ি রয়েছে। এসব স্টেশন ও ফাঁড়িতে দায়িত্বে থাকা বন কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের ক্ষয়ক্ষতির কবল থেকে জানমাল রক্ষায় প্রস্তুত থাকতে বলা হয়েছে। ঝুকিপূর্ণ স্টেশন ও ফাঁড়িতে দায়িত্বরতদের ঝড়ের অবস্থান বুঝে নিরাপদে আশ্রয় নিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
বিজ্ঞাপন
এ ছাড়া মোংলা উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে প্রস্তুতিমূলক সভা করে নানা কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়েছে। মোংলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা দীপংকর দাশ জানিয়েছেন, এরইমধ্যে ১০৩টি সাইক্লোন সেল্টার প্রস্তুত করা হয়েছে। এ ছাড়া উচু স্কুল ভবনগুলো প্রস্তুত রাখা হয়েছে। ঝড়ের আগে ও পরে স্থানীয়দের সহায়তা করার জন্য ১ হাজার ৪০০ সেচ্ছ্বাসেবক প্রস্তুত রয়েছে। শুকনো খাবার মজুদ করা হয়েছে। উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে একটি কনট্রোল রুম খোলা হয়েছে। একটি কনট্রোল রুম খুলে এর মাধ্যমে ঝড়ের অবস্থা পর্যালোচনা করে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
এদিকে শুক্রবার দুপুর পর্যন্ত মোংলা বন্দরের বাণিজ্যিক জাহাজে পণ্য উঠা-নামার কাজ স্বাভাবিক রয়েছে। মোংলা উপকূলে স্বাভাবিক অবস্থা বিরাজ করছে।
প্রতিনিধি/ এজে