যেকোনো সময় সোনাগাজীর উপকূলীয় অঞ্চলে আঘাত হানতে পারে ঘূর্ণিঝড় মোখা। এই অঞ্চলের মানুষের জানমাল রক্ষায় ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েছে প্রশাসন। মোখা মোকাবিলায় মাঠে রয়েছে ২ হাজার সিপিপি স্বেচ্ছাসেবকসহ বিপুল সংখ্যক পুলিশ আনসার এবং ফায়ার সার্ভিসের ৩টি টিম।
কোনো হতাহতের খবর এলেই ঘটনাস্থলে গিয়ে তাৎক্ষনিক সেবা প্রদানের জন্য প্রস্তুত রয়েছে ১৪টি মেডিকেল টিম এবং পশু পাখির বা খামার ক্ষতিগ্রস্থ হলে সেবা দেওয়ার জন্য ৪টি ভেটেনারি (পশু) মেডিকেল টিম মাঠে থাকবে।
বিজ্ঞাপন
মোখা মোকাবিলার সার্বিক প্রস্তুতির বিষয়ে শনিবার (১৩ মে) বিকালে সোনাগাজী উপজেলা নির্বাহী অফিসার কামরুল হাসান বলেন, উপজেলার চারটি ঝুঁকিপূর্ণ উপকূলীয় ইউনিয়ন চরচান্দিয়া, চরদরবেশ, আমিরাবাদ ও সদর ইউনিয়নে ইতোমধ্যে ৩৩টি আশ্রয়কেন্দ্র পরিপূর্ণ প্রস্তুত করা হয়েছে। এসব আশ্রয়ণ কেন্দ্রে বিকল্প আলোর ব্যাবস্থাসহ পর্যাপ্ত শুকনা খাবার মজুত থাকবে।
শনিবার বিকালে উপকূলীয় এলাকার জেলেপাড়া ও চরখোন্দকার নদী সংলগ্ন এলাকায় সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, সিপিপি স্বেচ্ছাসেবী এবং ফায়ার সার্ভিস সদস্যরা হ্যান্ড মাইক দিয়ে মানুষকে নিরাপদ স্থানে আশ্রয় নেওয়ার জন্য প্রচারণা চালাচ্ছেন।
এসময় ফায়ার সার্ভিস ও পুলিশের গাড়িসহ হ্যান্ড মাইকে অনবরত সাইরেন বাজিয়ে আসন্ন বিপদের সতর্ক বার্তা দেওয়া হচ্ছে মানুষকে। তবে শনিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত কোনো ঝড়ো হাওয়া কিংবা বৃষ্টি না থাকায় এখানকার সাধারণ মানুষের মাঝে কোনো আতংকের আতঙ্কের ছাপ দেখা যাচ্ছে না। তারা স্বাভাবিকভাবেই দৈনন্দিন কাজ কর্ম করে যাচ্ছেন। আশ্রয়ণকেন্দ্রে যাওয়ার বিষয়েও আগ্রহ কম ছিল এসব মানুষের।
বিজ্ঞাপন
ফেনীর পুলিশ সুপার জাকির হাসান উপকূলীয় এলাকা পরিদর্শন শেষে বলেন, দুর্যোগের সময় মানুষের জানমাল রক্ষায় মাঠে থাকবে পুলিশ। প্রয়োজনে বাড়তি জনবল দেওয়া হবে দুর্যোগের সময় দায়িত্ব পালনের জন্য।
ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স ফেনীর সহকারী পরিচালক আবুল বাসার বলেন, দুর্যোগের সময় ফায়ার সার্ভিস সদস্যরা সার্বক্ষনিক প্রস্তুত থাকবে। যে মুহূর্তে যেখানে প্রয়োজন দ্রুততম সময়ের মধ্যে সেখানে পৌঁছে যাবে ফায়ার সার্ভিস সদস্যরা।
জেলা আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর কম্যান্ডেন্ট জানে আলম সুফিয়ান বলেন, বাহিনীর মৌলিক প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত সদস্যরা মাঠে থেকে উপকূলীয় জনপদের জানমাল রক্ষায় প্রশাসনকে সরাসরি সহযোগিতা করবে।
উপকূলীয় এলাকা পরিদর্শনের সময় ফেনী জেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উপ-পরিচালক ইকরাম উদ্দিন বলেন, মোখার প্রভাবে ফসলের তেমন ক্ষয়ক্ষতির সুযোগ নেই। কারণ আমাদের বোরো ধান এবং রবি শষ্য ইতোমধ্যে কৃষকের ঘরে উঠে গেছে। আউশ ধান এখনও ক্ষতি হওয়ার পর্যায়ে নেই।
প্রতিনিধি/এসএস