এসময় মেঘনা নদী থাকার কথা উত্তাল, সেখানে মেঘনা একেবারে শান্ত। এ সুযোগে উপকূলীয় জেলেরা মাছ শিকারে মহাব্যস্ত। তবে সকাল থেকে ঘূর্ণিঝড় মোখার প্রভাবে লক্ষ্মীপুরে গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি হচ্ছে। মেঘনা উপকূলীয় এলাকাতে হালকা বাতাস বইছে। এছাড়া সকাল থেকে নদী শান্ত থাকায় জেলেরা মাছ শিকারে নৌকা ভাসিয়েছে৷ বাগদা চিংড়ির রেণু শিকারে মেয়ে উঠেছেন জেলেরা। তবে এরমধ্যে ঘূর্ণিঝড়কে কেন্দ্র করে ভাঙন আতঙ্ক বেড়েছে উপকূলীয় বাসিন্দাদের মাঝে।
এদিকে লক্ষ্মীপুরকে ৮ নম্বর মহাবিপদ সংকেতের আওতায় রেখেছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। তবে এ প্রতিদেবন লেখা পর্যন্ত লক্ষ্মীপুরের উপকূলে তেমন কোন চিত্র দেখা যায়নি। সংকেত শুনেই উপকূলের মানুষের মাঝে আতঙ্ক বিরাজ করছে। তবে এ আতঙ্ক ঘূর্ণিঝড় আসবে এ জন্য নয়। আতঙ্ক হচ্ছে ঘূর্ণিঝড় এলেই নদী ভয়াবহ হয়ে উঠবে। উপকূলের ভাঙন বেড়ে যাবে। বিলীন হয়ে যেতে পারে বিস্তির্ণ জনপদ।এতে নিঃস্ব হয়ে যাওয়ার শঙ্কা থেকে আতঙ্কিত উপকূলের বাসিন্দারা।
বিজ্ঞাপন
অন্যদিকে ৮ নম্বর বিপদ সংকেত থাকলেও নদী এখনো শান্ত রয়েছে। এজন্য সকাল থেকেই মাছ শিকারে ব্যস্ত সময় পার করছে জেলেরা। ইলিশ শিকারীরা নদীতে নৌকা ভাসিয়েছে। আর বাগদা চিংড়ি রেণু শিকারে নদীর তীর এলাকায় জেলেরা মেতে উঠেছে। যদিও চিংড়ি রেণু শিকার অবৈধ ও আইনত দণ্ডনীয়।
রেডক্রিসেন্টের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, দুইদিন ধরে তারা সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী মানুষকে সচেতন করে আসছে। কিন্তু আবহাওয়া এখনো অনূকূলে থাকায় কেউই তাদের কথা শুনছেন না। এখনো পর্যন্ত কেউই আশ্রয়ণ কেন্দ্রে যায়নি।
জেলে আবুল কাশেম মাঝি ও মোসলেহ উদ্দিন জানায়, বেড়িবাঁধ না থাকায় উপকূলীয় বাসিন্দারা সবচেয়ে বেশি আতঙ্ক থাকে। বেড়িবাঁধ থাকলে তাদের আর আতঙ্কিত থাকতে হতো না। নদীর ভাঙনে হাজার হাজার পরিবার নিঃস্ব হয়ে গেছে। এখন যারা নদী এলাকায় আছেন, তারা তাদের পূর্বের প্রতিবেশিদের শূন্যতা অনুভব করছেন সবসময়। আর কোন প্রতিবশিকে নিঃস্ব দেখতে চাননা তারা। এজন্য দ্রুত তীর রক্ষা বাঁধ নির্মাণ করতে সরকারের কাছে জোর দাবি জানিয়েছেন মেঘনা উপকূলীয় বাসিন্দারা।
জেলা প্রাশাসন থেকে জানানো হয়েছে, জেলা সদর, রায়পুর, রামগতি ও কমলনগর উপজেলা মেঘনা উপকূলীয় এলাকা। এতে এসব এলাকার মানুষকে নিরাপদে সরিয়ে আনতে উপজেলা প্রশাসন, পুলিশ, কোস্টগার্ড ও রেডক্রিসেন্টের সদস্যরা কাজ করছেন। নিরাপদ আশ্রয়ের জন্য সাইক্লোন শেল্টারসহ ১৮৫ টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রস্তুত রয়েছে। ৬৪ টি মেডিকেল টিম প্রস্তুত রাখা হয়েছে সেবা নিশ্চিতের জন্য। এছাড়া সকল সরকারি কর্মকর্তা-কর্মকর্তাদের সার্বক্ষণিক কর্মস্থলে থাকার জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
বিজ্ঞাপন
কমলনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সুচিত্র রঞ্জন দাস বলেন, আমি সকাল থেকে মেঘনা নদীর ফলকন, লুধুয়া, পাটারিরহাট ও মাতাব্বর হাট এলাকা পরিদর্শন করেছে। নদী শান্ত থাকায় সবখানেই জেলেরা মাছ শিকারে ব্যস্ত রয়েছে। এ মুহুর্তে নদীতে গিয়ে তাদেরকে ধাওয়া করে উঠিয়ে আনা সম্ভব হচ্ছে না। তবে জেলেদেরকে নিরাপদ আশ্রয়ে আনার জন্য আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করে যাচ্ছি। উপজেলার সকল আশ্রয়ণ কেন্দ্র খোলা রয়েছে।
প্রতিনিধি/একেবি