ধেয়ে আসছে ঘূর্ণিঝড় মোখা। এই খবরে রীতিমতো দুশ্চিন্তায় দেশের উপকূলীয় জনপদ বরগুনার বেতাগী উপজেলার কৃষকরা। মাঠে থাকা ফসল ঘরে তুলতে এখন ব্যস্ত সময় পার করছেন তারা। এমন পরিস্থিতিতে পাকা বোরো ধান ছাড়াও রবিশস্যসহ সংগ্রহ উপযোগী ফসল দ্রুত কাটার এবং আউশের চাষ ও আউশের বীজতলা রক্ষায় পরামর্শ দিয়েছে স্থানীয় কৃষি বিভাগ।
প্রচারণাকালে পাকা বোরো ধান ছাড়াও কাচা মরিচ, বাদাম, মুগডাল, মিষ্টি আলু, সবজি, পরিপক্ব আম ও অন্যান্য সংগ্রহ উপযোগী ফসলসহ আউশের চাষ ও আউশের বীজতলা যেগুলো মাঠে বিদ্যমান রয়েছে তা দ্রুত সংগ্রহে কৃষকদের পরামর্শ প্রদান করা হচ্ছে। ফলে সরেজমিনে বৃহস্পতিবার (১১ মে) দিবাগত রাতেও অক্লান্ত পরিশ্রম করে কৃষকদের দ্রুত রবিশস্য ঘরে তুলতে দেখা গেছে।
বিজ্ঞাপন
উপজেলা কৃষি বিভাগ জানিয়েছে, ঘূর্ণিঝড়ের বার্তা থাকায় ৮০ ভাগ বোরো ধান পেকে গেলে সবাইকে দ্রুত ধান কেটে ফেলতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। ঘূর্ণিঝড়টির প্রভাবে ফসলের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে। এ জন্য সম্ভাব্য ক্ষয়ক্ষতি এড়ানোর লক্ষ্যে উপজেলার প্রান্তিক পর্যায়ের কৃষকদের মধ্যে ঘূর্ণিঝড়ের সতর্কতামূলক তথ্য ও সরকারি নির্দেশনামূলক ব্যাপক প্রচারণাও চালানো হচ্ছে। সেই সঙ্গে আবহাওয়াসংক্রান্ত যে কোনো তথ্য ও পরামর্শের জন্য সরকারি নির্দেশনা অনুসরণ করতে মাইকিংও করা হচ্ছে।
ঘূর্ণিঝড়ের আগমনী বার্তা নিয়ে কথা হয় উপজেলার সদর ইউনিয়নের চাষি মো. নফিছুর রহমানের সঙ্গে। ঢাকা মেইলকে তিনি বলেন, ঝড় আসার খবরে আমরা সবাই কৃষি অফিসের নির্দেশনা পাওয়ার পর দ্রুত সংগ্রহ উপযোগী ফসল গড়ে তুলতে আপ্রাণ চেষ্টা চালাচ্ছি।
একই কথা জানিয়েছেন কাজিরাবাদ এলাকার কৃষক আব্দুর রহমান। তিনি বলেন, জমিতে বোরো ধানের আবাদ করেছেন। ঘূর্ণিঝড়ের আতঙ্কে শ্রমিক সংকটে বেশি মজুরি দিয়েই ধান কাটতে হচ্ছে। কারণ, ঘূর্ণিঝড়ের আগে ধান কাটতে না পারলে ক্ষতির মুখে পড়বেন।
এ বছর বরগুনার বেতাগী উপজেলায় ৫ হাজার ৭৪৭ হেক্টর জমিতে মুগডালের চাষ করা হয়েছে। ইতোমধ্যে প্রায় অর্ধেকের বেশি মুগ তোলা হয়েছে। সেই সঙ্গে বাকিটুকু দুই-একদিনের মধ্যে তোলার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। তবে ১৫ থেকে ১০ শতাংশ মুগ ঘূর্ণিঝড়ে ক্ষতির কবলে পড়তে পারে বলেও আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন কৃষি কর্মকর্তারা।
বিজ্ঞাপন
ঘূর্ণিঝড় ‘মোখা’য় সম্ভাব্য ক্ষতির বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. ইছা ঢাকা মেইলকে জানান, বেতাগী উপজেলায় ৩৫৩ হাজার হেক্টর জমিতে এবার বোরো ধানের আবাদ হয়েছে। এরমধ্যে ৮০ শতাংশের বেশি ধান ইতোমধ্যেই কাটা হয়েছে। আশা করছি, খুব দ্রুতই বাকি ধান কাটা সম্ভব হবে। ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে বোরোতে তেমন ক্ষতির কোনো আশঙ্কা নেই। তবে ঘূর্ণিঝড়ে সব ধরনের সতর্কতামূলক পরামর্শের জন্য আমরা সার্বক্ষণিক কৃষকের পাশে রয়েছি।
প্রতিনিধি/আইএইচ