স্মরণকালের ভয়াবহ ভূমিকম্পে তুরস্ক ও সিরিয়ার ধ্বংসাবশেষ থেকে এখনো মিলছে লাশ। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত প্রাণহানির সংখ্যা ছাড়িয়েছে ২১ হাজার। তুরস্কেই ১৮ হাজারের কাছাকাছি মানুষের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।
আল-জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দেশটির ভাইস প্রেসিডেন্ট ফুয়াত অকতের দেওয়া তথ্যমতে, শুক্রবার পর্যন্ত শুধু তুরস্কেই এ পর্যন্ত মারা গেছেন ১৭ হাজার ৬৭৪ জন। অন্যদিকে, সিরিয়ায় কমপক্ষে ৩ হাজার ৩৭৭ জনের মৃত্যু হয়েছে।
বিজ্ঞাপন
এদিকে, ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকে পড়াদের উদ্ধারে আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন উদ্ধারকারী দল ছাড়াও স্বেচ্ছাসেবকরা। তীব্র তুষারপাতের বাধা উপেক্ষা করেই চলছে উদ্ধারকাজ। তবে সময় যত গড়াচ্ছে ধ্বংসাবশেষ আর আবর্জনার নিচে আটকে পড়াদের জীবিত উদ্ধারের আশা ততই ক্ষীণ হয়ে আসছে। যদিও উদ্ধার তৎপরতায় এখনো বড় বাধা হয়ে রয়েছে হিমাঙ্কের নিচে বা এর কাছাকাছি পর্যায়ের তাপমাত্রা।
আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমগুলোর তথ্য অনুযায়ী, ভয়াবহ এই দুর্যোগে তুরস্ক ও সিরিয়ায় এখন পর্যন্ত গৃহহীন হয়ে পড়েছেন লাখ লাখ মানুষ। খোলা আকাশের নিচে তীব্র ঠান্ডায় অত্যন্ত মানবেতর জীবনযাপন করছেন তারা। অনেকেই ধ্বংসাবশেষ থেকে আবর্জনা ও কাপড় পুড়িয়ে শরীর গরম রাখার চেষ্টা করছেন।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) মতে, যেসব অঞ্চলে ভূমিকম্প সংঘটিত হয়েছে, মানচিত্র অনুসারে বলা যায় এসব জায়গায় ২ কোটি ৩০ লাখ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হবে। এরমধ্যে ৫০ লাখ মানুষ এখনো অরক্ষিত অবস্থায় আছে।
সোমবার (৬ ফেব্রুয়ারি) ভোররাত ৪টা ১৭ মিনিটে তুরস্কের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে রিখটার স্কেলে ৭ দশমিক ৮ মাত্রার প্রথম ভূমিকম্পটি আঘাত হানে। এর উৎপত্তিস্থল ছিল দক্ষিণাঞ্চলীয় প্রদেশ খারমানমারাসের গাজিয়ানতেপ শহরের কাছে। যার গভীরতা ছিল ভূপৃষ্ঠে থেকে ১৭ দশমিক ৯ কিলোমিটারে। এরপর একই দিন দুপুরে ও বিকেলে আরও দুইবার শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হানে।
বিজ্ঞাপন
এরমধ্যে তুরস্কের স্থানীয় সময় সোমবার দুপুরে ৭ দশমিক ৬ মাত্রার তীব্র ভূমিকম্প আঘাত হানে বলে জানায় তুরস্কের দুর্যোগ ও জরুরি ব্যবস্থাপনা প্রেসিডেন্সি (এএফএডি)। আর বিকালে ৬ মাত্রার আরও একটি শক্তিশালী ভূমিকম্প তুরস্কের মধ্যাঞ্চলে আঘাত হানে বলে জানায় যুক্তরাষ্ট্রের ভূতাত্ত্বিক জরিপ ইউএসজিএস।
/এএস