তুরস্কে ভূমিকম্পের ২৯৬ ঘণ্টা পর ধসে পড়া ভবন থেকে শিশুসহ তিন জনকে উদ্ধার করা হয়েছে। শনিবার এ ঘটনা ঘটে। দক্ষিণ তুরস্ক ও সিরিয়ায় দু’বার ভয়াবহ ভূমিকম্প সংঘটনের ১২ দিন পার হওয়ার পর তাদের উদ্ধার করা হয়।
তুর্কি গণমাধ্যম আনাদোলু এজেন্সি তাদের প্রতিবেদনে জানিয়েছে, শনিবার দেশটির দক্ষিণ হাতায় প্রদেশের ধ্বংসস্তূপ থেকে একটি শিশুসহ আরও তিনজনকে উদ্ধার করা হয়েছে। ওই অঞ্চলে দু’টি ভয়াবহ ভূমিকম্পের প্রথম আঘাতের ২৯৬ ঘণ্টারও বেশি সময় পরে এমন অলৌকিক উদ্ধারকাজ সম্পন্ন হয়।
বিজ্ঞাপন
স্থানীয় গণমাধ্যমগুলো জানিয়েছে, ‘প্রাথমিকভাবে কানাতলি অ্যাপার্টমেন্ট ভবনের ধ্বংসাবশেষ থেকে বাবা-মা এবং তাদের ১২ বছরের শিশুকে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে। তবে প্রাথমিক চিকিৎসার ব্যবস্থা থাকা সত্ত্বেও পরে শিশুটির মৃত্যু হয়। সামির মোহাম্মদ আকর এবং তার স্ত্রী রাগদাকে অ্যাম্বুলেন্সে করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। ওই দম্পতির আরও দুই সন্তানও একই ধ্বংসস্তূপে প্রাণ হারায়। ৬ ফেব্রুয়ারি মারাত্মক ভূমিকম্পের সংঘটনের পর ১৩তম দিনে একটি অনুসন্ধান ও উদ্ধারকারী দল আন্তাকিয়া জেলার ওই ধসে পড়া ভবনের ধ্বংসাবশেষ থেকে বেঁচে যাওয়া এ ব্যক্তিদের বের করে এনেছে।
উল্লেখ্য, তুরস্কে গত ১০০ বছরের মধ্যে এটা সবচেয়ে মারাত্মক ভূমিকম্প। এ ভূমিকম্পের ২৯৬ ঘণ্টারও বেশি সময় পরে জানা গেছে যে তুরস্ক ও সিরিয়ায় প্রায় ৫০ হাজারের মতো মানুষ নিহত হয়েছে।
— TRT World Now (@TRTWorldNow) February 18, 2023
৭.৭ ও ৭.৬ মাত্রার ওই ভূমিকম্পগুলো দেশটির কাহরামানমারাস প্রদেশকে কেন্দ্র করে সংঘটিত হয়েছে। এ শক্তিশালী ভূমিকম্পে তুরস্কের আরও ১০ প্রদেশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সে প্রদেশগুলো হলো - আদানা, আদিয়ামান, দিয়ারবাকির, হাতায়, গাজিয়ানটেপ, মালটিয়া, কিলিস, ওসমানিয়ে, এলাজিগ এবং সানলিউরফা। এ বিধ্বংসী ভূমিকম্পে এক কোটি ৩০ লাখেরও বেশি মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
বিজ্ঞাপন
সিরিয়া এবং লেবাননসহ এই অঞ্চলের বেশ কয়েকটি দেশ ১০ ঘণ্টারও কম সময়ের মধ্যে তুরস্কে আঘাত করা শক্তিশালী কম্পন অনুভব করেছে। এ সময় সিরিয়াতে নিহত হয়েছেন ৩,৬৮৮ জনের বেশি।
তুর্কি দুর্যোগ ও জরুরি ব্যবস্থাপনা প্রেসিডেন্সি (আফাদ) এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, বর্তমানে উদ্ধার অভিযানে দুই লাখ ৬৪ হাজার ৩৮৯ জনেরও বেশি কর্মী মাঠে কাজ করছে।
আফাদ জানিয়েছে, ভূমিকম্প-বিধ্বস্ত অঞ্চল থেকে এখন পর্যন্ত প্রায় ৩৮,০৪৪ জনকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।
বর্তমানে তুরস্কের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করে বিশ্বজুড়ে সমবেদনা জানানো হচ্ছে। অনেক দেশ উদ্ধারকারী দল এবং সহায়তা পাঠিয়েছে।
দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় শুক্রবার জানিয়েছে, ৬৭টি দেশের মোট ৫,৭৫৩ জন বিদেশী কর্মী বর্তমানে দুর্যোগকবলিত অঞ্চলে কাজ করছে।
তুর্কি কর্তৃপক্ষ আরও জানিয়েছে, ‘১০১ টি দেশ এ পর্যন্ত সহায়তার প্রস্তাব দিয়েছে এবং আরও দু’টি দেশ উদ্ধারকারী দল পাঠাবে বলে আশা করা হচ্ছে।’
সূত্র : আনাদোলু এজেন্সি, টিআরটি ওয়ার্ল্ড
এমইউ