শুক্রবার, ৬ ডিসেম্বর, ২০২৪, ঢাকা

এখনও আশায় তুরস্ক ও সিরিয়ার মানুষ

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ০৬:১৮ পিএম

শেয়ার করুন:

এখনও আশায় তুরস্ক ও সিরিয়ার মানুষ
তুরস্ক ও সিরিয়ার মানুষ এখনও তাদের স্বজনদের জীবিত ফেরত পাওয়ার আশা করছেন

শক্তিশালী ভূমিকম্পের পর 'অলৌকিক' কোনো ঘটনার আশায় আছে তুরস্ক ও সিরিয়ার মানুষ। এখনও তারা স্বজনদের জীবিত ফেরত পাওয়ার আশা করছেন। বুধবার তুরস্কের দক্ষিণাঞ্চলের ইস্কেন্দেরুন শহরের একটি ভবনের ধ্বংসস্তূপে উদ্ধারকাজ চালানোর সময় এক পর্যায়ে উপস্থিতদের নীরব থাকার অনুরোধ করেন উদ্ধারকারীরা। সে সময় ধ্বংসস্তূপের নিচ থেকে আসা শব্দ থেকে তারা ধারণা করেন যে সেখানে জীবিত মানুষ থাকার সম্ভাবনা রয়েছে।

ওই ভবনে বসবাসকারী পরিবারের সদস্য, বন্ধুবান্ধব, প্রতিবেশীরা এবং উদ্ধারকাজ দেখতে আশেপাশে দাঁড়িয়ে থাকা মানুষও কিছুক্ষণের জন্য কথা বলা বন্ধ করে দেন। আশেপাশের ক্রেন ও উদ্ধারকাজে ব্যবহৃত অন্যান্য যন্ত্রপাতি বন্ধ করে দেওয়া হয়।


বিজ্ঞাপন


কয়েক মুহূর্তের নীরবতার পর উদ্ধারকারী দলের কয়েকজন অ্যাম্বুলেন্স ডাকার আহ্বান জানান। তারা জানান যে ধ্বংসস্তূপের নিচ থেকে এক নারীকে জীবিত অবস্থায় পাওয়া গেছে।

উদ্ধারকারীদের কাছ থেকে এই ঘোষণা আসার সঙ্গে সঙ্গে উপস্থিত জনতা আনন্দে হর্ষধ্বনি করে ওঠে। অনেকেই চোখের পানি আটকে রাখতে পারেননি।

ঘটনাস্থলে দাঁড়িয়ে থাকা কয়েকজন জানান, সোমবার ভূমিকম্পে বিধ্বস্ত হওয়ার পর ওই ভবনের ধ্বংসস্তূপ থেকে প্রথম কোনো জীবিত ব্যক্তিকে উদ্ধার করা হলো।

এই ঘটনার পর স্বজনের খোঁজ না পাওয়া অনেকের মধ্যেই নতুন করে আশার সঞ্চার হয়েছে। অনেকেই বলছেন যে তাদের পরিচিতদের জীবিত উদ্ধার করা যাবে – এমন আশা ফিরে পেয়েছেন তারা।


বিজ্ঞাপন


এক নারীর ভাষ্যে, তিনি ‘অলৌকিক’ কিছুর জন্য অপেক্ষা করছেন।

এই বিচ্ছিন্ন ঘটনাটি সেখানকার উদ্ধার কর্মীদের মধ্যে কিছুক্ষণের জন্য প্রাণসঞ্চার করে।

স্থানীয় চিকিৎসক মেহমেত রিয়াত বলেন, সোমবার থেকে বিপুল সংখ্যক চিকিৎসক ও সেবা দানকারী উদ্ধার হওয়া মানুষের চিকিৎসায় কাজ করে যাচ্ছে।

তিনি বলেন, “আমরা এমন রোগী পেয়েছি যারা প্রায় পিষে গেছে। আমরা এই কয়েক দিন শুধু ভাঙা হাড়, ঘাড় ভাঙা এবং মাথায় আঘাত পাওয়া রোগী দেখেছি। এছাড়া দেখেছি অনেক অনেক মৃত্যু। ইস্কেন্দেরুন শহরের যেখানেই তাকান আপনি শুধু ধ্বংসস্তূপই দেখতে পাবেন। এখানে একটি হাসপাতালসহ বহু ভবন ধ্বংস হয়ে গেছে।’

সমালোচকদের অভিযোগ, উদ্ধারকাজের সহায়তার উদ্দেশ্যে নেওয়া জরুরি সেবা কার্যক্রম ধীরগতিতে চলছে এবং ভূমিকম্প প্রবণ অঞ্চলের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে যথাযথ পদক্ষেপ নেয়নি সরকার।

তুর্কি প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ানও স্বীকার করেছেন যে ভূমিকম্পের পর প্রথম দিনে সাড়া দেওয়ার ক্ষেত্রে কিছু সমস্যা ছিল। কিন্তু, একই সময়ে তিনি তুর্কি জনগণকে ধৈর্য্য ধরতে এবং ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।’

তুরস্কের প্রেসিডেন্ট বলেন, উদ্ধার অভিযানের সময় রাস্তাঘাট ও বিমানবন্দরে কিছু সমস্যা ছিল, কিন্তু সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সবকিছু ঠিক হয়ে যাবে।

এরদোয়ান বলেন, নাগরিকদের শুধুমাত্র কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগে মনোযোগ দেওয়া উচিত এবং "উস্কানিদাতাদের" উপেক্ষা করা উচিত। 

এ সময় তিনি প্রতিশ্রুতি দেন যে নতুন বাড়ি তৈরি করা হবে এবং কাউকে রাস্তায় ফেলে রাখা হবে না।

তুরস্কের প্রেসিডেন্ট আরও বলেন, ‘এখন আমাদের ঐক্যবদ্ধ হওয়ার সময়।’

সূত্র : বিবিসি, আল-জাজিরা

এমইউ

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

টাইমলাইন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর