তেহরান ওয়াশিংটনের আলোচনার আহ্বান প্রত্যাখ্যান করার পরও মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ঘোষণা করেছেন যে যুক্তরাষ্ট্র ইরানের সঙ্গে তার পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে সরাসরি আলোচনা শুরু করেছে।
সোমবার (৮ এপ্রিল) হোয়াইট হাউসে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনইয়ামিন নেতানিয়াহুর সঙ্গে যৌথ সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন ট্রাম্প। খবর আল-জাজিরার।
বিজ্ঞাপন
সাংবাদিকদের ট্রাম্প বলেন, আমরা ইরানের সঙ্গে সরাসরি আলোচনা করছি। আগামী শনিবার সরাসরি বৈঠক হবে ইরানি কর্তৃপক্ষের সঙ্গে। আমাদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এ বৈঠক।
তিনি আর বিস্তারিত তথ্য না দিয়ে বলেন, আমি মনে করি সবাই একমত হবেন যে ইরানের সঙ্গে পরমাণু ইস্যুতে একটি চুক্তি করাই ভালো হবে।
ট্রাম্প আরও বলেন, ইরানের পারমাণবিক উচ্চাকাঙ্ক্ষা রোধে কূটনৈতিক প্রচেষ্টা ব্যর্থ হলে বড় ধরণের বিপদে পড়বে তেহরান। তিনি আরও বলেন, ইরান কিছুতেই পারমাণবিক অস্ত্রের অধিকারী হতে পারবে না।
এই মাসের শুরুতে ট্রাম্প মার্কিন গণমাধ্যম এনবিসি নিউজকে বলেছিলেন, যদি ইরান কোনো চুক্তি না করে, তাহলে বোমা হামলা হবে। তিনি আরও বলেন, বোমা হামলা এমন ধরণের হবে যা তারা আগে কখনও দেখেনি।
বিজ্ঞাপন
আল-জাজিরার জ্যেষ্ঠ রাজনৈতিক বিশ্লেষক মারওয়ান বিশারা বলেন, তেহরানের সঙ্গে ট্রাম্পের সরাসরি আলোচনার ঘোষণা নেতানিয়াহুর পছন্দসই হবে না, কারণ ইসরায়েলি নেতা দীর্ঘদিন ধরে কেবল ইরানে বোমা হামলা চালাতে চেয়েছেন। পাশাপশি যুক্তরাষ্ট্রকেও উসকানি দিয়ে আসছেন ইরানে বোমা হামলা চালাতে।
বিশারা আরো বলেন, ট্রাম্প দীর্ঘদিন ধরেই ইরানের সঙ্গে একটি চুক্তি চেয়েছেন। তবে নেতানিয়াহু মনে করেন, গত বছর ইরানে ইসরায়েলি বিমান হামলার ফলে তেহরানের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা দুর্বল হয়ে পড়েছে। তিনি এটিকে মার্কিন সহায়তায় ইসরায়েলের জন্য ইরানকে ধ্বংস করার একটি দুর্দান্ত সুযোগ হিসেবে দেখছেন।
বাস্তবে, ট্রাম্প যখন বিশ্বের অন্য দেশের সঙ্গে বাণিজ্য যুদ্ধের মধ্যে আছেন, তখন তিনি ইরানের সঙ্গে যুদ্ধে জড়াতে চান না।
সপ্তাহান্তে ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাঘচি তেহরানের পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে আমেরিকার সঙ্গে সরাসরি আলোচনার সম্ভাবনাকে “অর্থহীন” বলে বর্ণনা করেছিলেন।
গত মাসে ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনিকে লেখা এক চিঠিতে ট্রাম্প যখন বলেছিলেন যে তিনি আশা করেন তেহরানের সঙ্গে একটি আলোচনা হবে।
পারমাণবিক চুক্তি না করলে ট্রাম্প ইরানে বোমা হামলার হুমকি দিয়েছেন। তবে, ট্রাম্পের এসব হুমকি-ধমকিকে পাত্ত্ই দিচ্ছে না ইরান। তেহরান এখন পর্যন্ত ওয়াশিংটনের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করছে।
ইরান বলছে, পরমাণু ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে কোনো আলোচনায় বসবে না গেহরান, তবে তারা পরোক্ষ ভাবে কূটনীতির চ্যানেলে আলোচনার পথ উন্মুক্ত রেখেছেন।
২০১৮ সালে, তার প্রথম দফায় প্রেসিডেন্ট থাকাকালীন সময় ইরান এবং বিশ্বশক্তির মধ্যে ২০১৫ সালের হওয়া পারমাণবিক চুক্তি থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে প্রত্যাহার করে নেন এবং তেহরানের ওপর কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করেন।
ইরান বরাবরই বলে আসছে যে, তার পারমাণবিক কর্মকাণ্ড কেবলমাত্র বেসামরিক উদ্দেশ্যে। এই অঞ্চলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষ মিত্র ইসরায়েলের কাছে অঘোষিত পারমাণবিক অস্ত্রভাণ্ডার রয়েছে বলে ব্যাপকভাবে বিশ্বাস করা হয়।
-এমএমএস