গত পরশু প্রায় ২৮ লাখ টাকার মালামাল দোকানে তুলেছিলেন লেবু মিয়া। আজ সকালে আগুনের ঘটনায় তার সব পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। সকাল সাতটার দিকে খবর পেয়ে বাসা থেকে ছুটে আসেন তিনি। এরপর চোখের সামনে দাউদাউ করে জ্বলতে দেখেছেন, কিছুই করার ছিল না। এখন চোখে-মুখে শুধু অন্ধকার দেখছেন।
মঙ্গলবার (৪ এপ্রিল) দুপুরে সরকারি কর্মচারী হাসপাতালের বিপরীত পাশে রাস্তার ফুটপাতে বসে কথাগুলো জানাচ্ছিলেন লেবু মিয়া।
বিজ্ঞাপন
‘ভাইরে পথের ফকির হয়ে গেলাম!’ বলে আক্ষেপ করছিলেন লেবু মিয়া। পাশে থাকা সহকর্মীরা তখন তাকে সান্ত্বনা দিচ্ছিলেন।
লেবু মিয়ার মতোই গতকাল ছয় বস্তা মালামাল তুলেছিলেন বঙ্গ মার্কেটের ব্যবসায়ী সাজ্জাদুর রহমান। যাত্রাবাড়ীর কোনাপাড়া এলাকায় থাকেন তিনি। সকাল সাড়ে সাতটায় খবর পেয়ে দ্রুত ছুটে আসেন ঘটনাস্থলে। কিন্তু এসে দেখেন ততক্ষণে সব পুড়ে ছাই হয়ে গেছে।
তিনি বলছিলেন, বঙ্গ মার্কেটে তার দুটি দোকান ছিল। দুই দোকান মিলে তার ৬০ লাখ টাকার উপরে ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। ফুটপাতে বসে মালামালের উপরে বিষন্ন মনে কী যেন ভাবছিলেন তিনি।
অন্যদিকে সাজ্জাদের এনেক্সকো মার্কেটে থাকা আরও দুটি দোকানের মালামাল কিছু ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, তবে পুড়ে যায়নি। তার দাবি, আগুন নেভানোর সময় পানি ছেটানো এবং উদ্ধারকর্মীদের কারণে এমন ক্ষতি হয়েছে।
বিজ্ঞাপন
শুধু লেবু মিয়া ও সাজাদুর রহমান নন, তাদের মতো বঙ্গ মার্কেটে ব্যবসা করতে এসে কোটি কোটি টাকার মালামাল পুড়ে এখন ক্ষতির মুখে কয়েক হাজার ব্যবসায়ী।
আগুন লাগার খবরে মার্কেট ব্যবসায়ীরা ঘটনাস্থলের আশেপাশে জড়ো হয়ে কেউ কান্নাকাটি করছেন। কেউবা কিছু উদ্ধারকৃত মালামাল সরিয়ে নিচ্ছেন। তবে বঙ্গমার্কেট পুরোপুরি পুড়ে গেলেও উত্তর পাশে থাকা এনেক্সকো মার্কেট অনেকটাই সুরক্ষিত রয়েছে। তবে এই মার্কেটের ব্যবসায়ীরা তাদের মালামাল সরিয়ে নিচ্ছেন।
বঙ্গ মার্কেটের হামদান শাড়ি বিধানের মালিক জাহিদুল ইসলাম বাবু মার্কেটে গত ২৩ বছর ধরে ব্যবসা করেন। তার একটি দোকানে থাকা মালামাল পুরোটাই পুড়ে গেছে। যার ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ ৩০ লাখ টাকার উপরে।
এদিকে মহানগর সুপার মার্কেটের চেয়ারম্যান আব্দুর রহমান জানিয়েছেন, এই এলাকায় চারটি মার্কেট একত্রিত হয়ে গড়ে উঠেছিল বঙ্গমার্কেট। প্রথমে বঙ্গ মার্কেটে আগুনের ঘটনা ঘটে, পরে তা শেষ মুহূর্তে চলে আসে মহানগর মার্কেটে। মহানগর মার্কেটের ভেতরে অনেক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে দাবি তার।
আগুন লাগার খবরের ঘণ্টাখানেক পর মহানগর মার্কেটের ব্যবসায়ীরা ঘটনাস্থলে হাজির হওয়ায় তাদের মালামাল অনেকটাই সরিয়ে নিতে সক্ষম হয়েছেন।
এমআইকে/জেবি