চলতি বছরের শুরু থেকে বেশ কিছু আগুনের ঘটনা ঘটেছে রাজধানীতে। এর মধ্যে সবচেয়ে বড় অগ্নিকাণ্ড রাজধানীর বঙ্গবাজারেরটি। মঙ্গল (৪ এপ্রিল) ভোর ছয়টায় লাগা আগুন প্রায় সাড়ে ছয় ঘণ্টার চেষ্টায় নিয়ন্ত্রণে এসেছে। তবে পুরোপুরি নেভেনি এখনো। এই অগ্নিকাণ্ডে চার থেকে পাঁচ হাজার কাপড় ব্যবসায়ীর সম্বল শেষ হয়ে গেছে। ঈদের আগে বিশাল এই ক্ষতির মুখে পড়ে দিশেহারা ব্যবসায়ীরা।
সম্প্রতি আরও কিছু আগুনের ঘটনা ঘটেছে ঢাকায়। এর মধ্যে গত ২৭ মার্চ সকাল পৌনে ৭টার দিকে রাজধানীর মহাখালীর সাততলা বস্তিতে আগুন লাগে। খবর পাওয়ার অল্প সময়ের মধ্যে ফায়ার সার্ভিসের নয়টি ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌঁছায় এবং দুই ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়। এতে শতাধিক ঘর পুড়ে যায়।
বিজ্ঞাপন
৫ মার্চ সকাল ১০টা ৫০ মিনিটের দিকে রাজধানীর সায়েন্সল্যাবের শিরিন ম্যানশনে হঠাৎ বিকট শব্দে বিস্ফোরণ ঘটে। এতে ভবনটিতে লাগানো মোটা গ্লাস ছাড়াও দেয়াল ধসে পড়ে। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের চারটি ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌঁছে ১১টা ১৩ মিনিটে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। এ ঘটনায় তিনজন নিহত এবং ২০ জন আহত হন।
গত ৭ মার্চ বিকেল ৪টা ৫০ মিনিটে গুলিস্তানে বিআরটিসির বাস কাউন্টারের কাছে সিদ্দিকবাজারে ভয়াবহ বিস্ফোরণ ঘটে। এতে পাশাপাশি দুটি বহুতল ভবন ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এ ঘটনায় ২০ জন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন শতাধিক লোক।
এর আগে ১ মার্চ রাজধানীর গোপীবাগে একটি রিকশার গ্যারেজ আগুনে পুড়ে ছাই হয়েছে। ফায়ার সার্ভিসের ছয়টি ইউনিট কাজ করে আগুন নেভায়।

বিজ্ঞাপন
গত ২৮ মার্চ দুপুর ১২টা ১৩ মিনিটের দিকে মধ্য বাড্ডার ইউলুপের পোস্ট অফিস গলির একটি মিষ্টির দোকানে আগুন লাগে। ফায়ার সার্ভিসের দুটি ইউনিট ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। আগুনে দোকানটি পুড়ে ছাই হয়ে যায়। ভবনটিও ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
গত ২৬ ফেব্রুয়ারি বিকেলে রাজধানীর কড়াইল বস্তিতে আগুন লাগে। পরে ফায়ার সার্ভিসের ১০টি ইউনিট কাজ করে আগুন নেভায়। এ ঘটনায় বস্তির ৬০টি কাঁচাঘর পুড়ে ছাই হয়ে যায়। একই দিন সকালে রাজধানীর মৌচাকে একটি বহুতল ভবনে আগুনের ঘটনা ঘটে। ফায়ার সার্ভিসের দুটি ইউনিট কাজ করে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।
গত ১৯ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যা সাতটার দিকে গুলশান-২ নম্বরের ১০৪ নম্বর সড়কের ২/এ হোল্ডিংয়ের ১৪ তলা ভবনের ১১ তলায় আগুনের ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে প্রথমে ফায়ার সার্ভিসের ছয়টি ইউনিট ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন নেভাতে কাজ শুরু করে। পাশাপাশি ভবন থেকে বাসিন্দাদের নামিয়ে আনতে থাকেন তারা। আগুন ভয়াবহ রূপ ধারণ করলে একে একে আরও ১৯টি ইউনিট গিয়ে আগুন নেভানোর কাজে যোগ দেয়। এছাড়া সেনাবাহিনী-নৌবাহিনীর একটি করে ইউনিটের চেষ্টায় রাত ১১টার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। আগুন থেকে বাঁচতে লাফ দিয়ে আহত একজন হাসপাতালে নেওয়ার পর মারা যান। উদ্ধার করা হয় ২২ জনকে। পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আরেকজন মারা যান।
গত ১৬ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর গুলশানের কড়াইল বস্তিতে আগুনের ঘটনা ঘটে। ফায়ার সার্ভিসের পাঁচটি ইউনিট এক ঘণ্টা কাজ করে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। ১০ ফেব্রুয়ারিতে ভাসানটেক বস্তিতে আগুনের ঘটনা ঘটে। পরে ফায়ার সার্ভিসের তিনটি ইউনিট কাজ করে এই আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।
৯ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর সোয়ারিঘাট এলাকার একটি প্লাস্টিক কারখানায় আগুনের ঘটনা ঘটে। ফায়ার সার্ভিসের চারটি ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌঁছে প্রায় এক ঘণ্টা কাজ করে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।

৭ ফেব্রুয়ারি শ্যামপুরে চাঁদনী টেক্সটাইল মিলে আগুনের ঘটনা ঘটে। ফায়ার সার্ভিসের আটটি ইউনিট কাজ করে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।
৬ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর রামপুরা বাজারের আম্বিয়া টাওয়ারে আগুনের ঘটনা ঘটে। ফায়ার সার্ভিসের তিনটি ইউনিট কাজ করে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।
৫ ফেব্রুয়ারি ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের নতুন ভবনে এসিতে আগুনের ঘটনা ঘটে। এ সময় হাসপাতালের রোগীদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। পরে ফায়ার সার্ভিসের দুটি ইউনিট গিয়ে আগুন নেভায়।
ফায়ার সার্ভিস সূত্র জানায়, এসব ঘটনার পেছনে সবচেয়ে বড় কারণ ত্রুটিপূর্ণ বিদ্যুৎ সংযোগ। বৈদ্যুতিক শর্টসার্কিট থেকেই বেশিরভাগ আগুনের সূত্রপাত। এছাড়া সিগারেটের আগুন, চুলার আগুন এবং উন্মুক্তভাবে দাহ্য পদার্থ রাখার কারণে আগুনের ঘটনা থামছে না।
কারই/জেবি












































































































































