শনিবার, ২৭ এপ্রিল, ২০২৪, ঢাকা

গুলিস্তানে ভবনে বিস্ফোরণ: আতঙ্ক কাটেনি এখনও

খলিলুর রহমান
প্রকাশিত: ২৯ মার্চ ২০২৩, ০৯:৫৮ এএম

শেয়ার করুন:

গুলিস্তানে ভবনে বিস্ফোরণ: আতঙ্ক কাটেনি এখনও

রাজধানীর গুলিস্তানের সিদ্দিকবাজারে ভয়াবহ বিস্ফোরণে এ পর্যন্ত ২৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। বিস্ফোরণে বিধ্বস্ত কুইন স্যানিটারি মার্কেট ভবনটিকে ঘটনার পর ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করা হয়। এরপর ধীরে ধীরে আশপাশের ভবনগুলোর ব্যবসায়ীরা তাদের ব্যবসায়িক কার্যক্রম শুরু করেছেন। সবকিছু স্বাভাবিক হয়ে আসলেও ভবনের আশপাশের মানুষ ও ব্যবসায়ীদের মধ্যে ভয় ও আতঙ্ক বিরাজ করছে এখনো। শুধু তাই নয়, ঝুঁকিপূর্ণ ভবনের সামনের সড়কে চলাচল করা যানবাহনের যাত্রীরাও আতঙ্কিত হচ্ছেন।

সোমবার (২৭) বিকালে সরেজমিন গিয়ে এবং বিস্ফোরিত ভবনের আশপাশের মানুষের সাথে কথা বলে এমন তথ্য জানা গেছে।


বিজ্ঞাপন


সরেজমিন দেখা গেছে, কুইন স্যানিটারি মার্কেট ভবনের দক্ষিণ পাশে পুলিশ সদস্যরা বসে আছে। উত্তর ও দক্ষিণ পাশের মার্কেটগুলো খোলা আছে। ক্ষতিগ্রস্ত ভবনটির সামনে সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে একটি ব্যানার সাটানো রয়েছে, যাতে লেখা ‘ভবনটি ঝুঁকিপূর্ণ’।

dm

এছাড়া ওই ভবনটির সামনের ফুটপাতে এখনও ব্যারিকেড দেওয়া আছে। সেখান দিয়ে কাউকে চলাচল করতে দেওয়া হচ্ছে না। অবশ্য সামনের সড়ক দিয়ে যানবাহন চলাচল ও সাধারণ মানুষ যাতায়াত করছে। বাসে বা অন্য পরিবহনে চলাচলকারী লোকজন ভবনটি দেখার চেষ্টাও করছেন। এ সময় অনেকেই আতঙ্কিত হতে দেখা গেছে।

ভিক্টর পরিবহনের একটি বাসের চালক মিলাদ মিয়া ঢাকা মেইলকে বলেন, বিস্ফোরণের পর কয়েকদিন ওই সড়কটি বন্ধ ছিল। এরপর রাস্তায় যান চলাচল শুরু হয়। তবে এখনও ওই এলাকায় আসলে ভয় লাগে। শুধু আমাদের নয়, যাত্রীরাও ভয় পান। ভবনের পাশে আসার আগেই অনেকেই বলেন, ওই ভবনের এলাকা তাড়াতাড়ি পার হওয়ার জন্য।


বিজ্ঞাপন


ঘোড়ার গাড়ি দিয়ে গুলিস্তান মোড়ে আসছিলেন বরিশালের বাসিন্দা আলম মিয়া। আসার সময় বারবার ওই ভবনের দিকে তাকাচ্ছিলেন। এক পর্যায়ে কথা হয় তার সাথে। তিনি বলেন, আমার গ্রামের বাড়ি বরিশাল। পারিবারিক কাজ ঢাকায় আসছি। সদরঘাট থেকে ঘোড়ার গাড়িতে করে গুলিস্তান আসলাম। আসার পথেই সেই ভবনটি দেখতে পাইলাম। ক্ষতবিক্ষত ওই ভবনটি দেখে ভয়ই লাগছিল।

dm

তিনি বলেন, বিস্ফোরণের পর টিভিতে ভবনটি দেখি। আজ বাস্তবে দেখলাম। মনে কিছুটা ভয় বেড়ে গেছে। ভবনের পাশ দিয়ে মানুষ চলাচল করা ঝুঁকিপূর্ণ বলেও মন্তব্য করেন বরিশাল থেকে আসা আলম মিয়া।

দায়িত্বরত পুলিশ সদস্য সিয়াম ঢাকা মেইলকে বলেন, আমরা দুই শিফটে দায়িত্ব পালন করি। সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত এক শিফট। আর সন্ধ্যা থেকে পরদিন সকাল পর্যন্ত আরেক শিফট।

তিনি জানান, বিস্ফোরণে ক্ষতিগ্রস্ত ভবনের পাশের বিল্ডিংয়ে ব্র্যাক ব্যাংক ও সুন্দরবন কুরিয়ার সার্ভিস ছিল। বিস্ফোরণের পর থেকে দুটি প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে গেছে। অনেকেই ওই দুটি প্রতিষ্ঠানের সন্ধানে আসে। তবে স্থান পরিবর্তন করে প্রতিষ্ঠান দুটি অন্য এলাকায় নেওয়া হয়েছে।

dm

গত ৭ মার্চ বিকেল ৪টা ৫০ মিনিটে গুলিস্তানে বিআরটিসির বাস কাউন্টারের কাছে সিদ্দিকবাজারে ওই ভয়াবহ বিস্ফোরণ ঘটে। এতে পাশাপাশি দুটি বহুতল ভবন কুইন স্যানিটারি মার্কেট ও ফাতেমা মার্কেট ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এরমধ্যে একটি সাততলা, আরেকটি ভবন পাঁচতলা। সাততলা ভবনের বেজমেন্ট, প্রথম ও দ্বিতীয় তলা বিধ্বস্ত হয়েছে। আর পাঁচতলা ভবনের নিচতলা বিধ্বস্ত হয়েছে। এই ভবনের দ্বিতীয় থেকে পঞ্চম তলা পর্যন্ত ব্র্যাক ব্যাংকের কার্যালয়।

এদিকে, গুলিস্তানের সিদ্দিকবাজারে বিধ্বস্ত কুইন স্যানিটারি মার্কেটের পাশের ফাতেমা মার্কেট ভবনটিতে এখনো বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়া হয়নি। তাই মোমবাতি ও চার্জার লাইট জ্বালিয়ে ব্যবসায়ীরা তাদের কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন। বিদ্যুৎ সংযোগ না দেওয়ায় সেই মার্কেটে ক্রেতাদের আনাগোনাও কমে গেছে।

ফাতেমা মার্কেটের ব্যবসায়ীরা ঢাকা মেইলকে জানান, ১২ মার্চ থেকে তারা দোকান খুলছেন। ব্যবসা পরিচালনা করলেও এখনো ওই ভবনের বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়া হয়নি। বিষয়টি ভবন মালিক ও ব্যবসায়ী সমিতির নেতাদের বলা হয়েছে। কিন্তু বিষয়টি কেউ গুরুত্ব দিয়ে দেখছে না। তারপরও তারা ব্যবসা প্রতিষ্ঠান খোলা রাখছেন। কিন্তু অন্ধকার থাকায় ক্রেতা খুবই কম আসছে।

কেআর/জেএম

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

টাইমলাইন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর