ভয়াবহ বিস্ফোরণে ২৪ প্রাণ কেড়ে নেওয়া সিদ্দিকবাজারের সেই ভবনের সামনের সড়কটি অবশেষে খুলে দেওয়া হয়েছে। ফলে গত মঙ্গলবার (৮ মার্চ) বিস্ফোরণের দিন থেকে বন্ধ থাকা ভবনের সামনের সড়ক দিয়ে চলতে শুরু করেছে যানবাহন। এতে করে এই এলাকা দিয়ে চলাচল করা যানবাহনের শ্রমিক ও যাত্রী সবার মুখে তৃপ্তির হাসি ফুটেছে।
মঙ্গলবার (১৪ মার্চ) পুরান ঢাকার সিদ্দিকবাজারের বিধ্বস্ত ভবনের সামনের সড়ক দিয়ে যানবাহন চলাচল শুরু করে। গত এক সপ্তাহ ধরে ভবনটির উল্টো পাশের সড়ক দিয়ে যানবাহন চলতো। দুইদিকের যানবাহন একসঙ্গে চলায় পুরো তাতীবাজার, বংশাল, জিরো পয়েন্ট থেকে গুলিস্তান, ফুলবাড়িয়ায় তীব্র যানজট লেগে থাকত।
বিজ্ঞাপন
এতে এই পথে চলা যাত্রীরা একদিকে যেমন যানজটে নাকাল হয়ে পড়তেন, তেমনি পরিবহনের লোকজনকেও গাড়ি নিয়ে ঘণ্টার পর ঘণ্টা বসে থাকতে হতো। যে কারণে বেশিরভাগ বাস ভিক্টোরিয়া পার্কে না গিয়ে গুলিস্তান থেকে ঘুরে যেত। গত কয়েকদিন এই পথে যানবাহন সামাল দিতে ট্রাফিক পুলিশকেও বেশ বেগ পেতে হতো। অবশেষে সড়কটি খুলে দেওয়ায় সবার মাঝে স্বস্তি ফিরেছে।
মঙ্গলবার সরেজমিন দেখা গেছে, সিদ্দিকবাজারের ভবনটির সামনের দিকে সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে ভবনটি ঝুঁকিপূর্ণ লেখা বড় ব্যানার টানানো। গত কয়েকদিন ভবনটির ভেতরে লোহার পাইপ বসানোর কাজ করছিলেন যারা তাদের কেউ নেই।
এদিকে ভবনের সামনের অংশ খুলে দেওয়া হলেও ফুটপাতের পরে সড়কের কিছু অংশে সিমেন্টের তৈরি গার্ডার দিয়ে দেওয়া হয়েছে। যাতে ওই অংশের ভেতরে কেউ প্রবেশ করতে না পারে।
বিজ্ঞাপন
ফুলবাড়িয়া এলাকায় দায়িত্ব পালন করা একজন ট্রাফিক পুলিশের সদস্য ঢাকা মেইলকে বলেন, আজকে এটি খুলে দেওয়া হয়েছে। এখন রাস্তায় কিছুটা স্বস্তি পাওয়া যাচ্ছে। কয়টা দিন খুব কষ্টে গেছে আমাদের।
এদিকে সোমবার (১৩ মার্চ) পর্যন্ত ভবনটির আশপাশের দোকানপাট বন্ধ থাকলেও মঙ্গলবার তা খুলেছে। দোকানে ক্রেতারাও আসছেন। কেনাকাটা করতেও দেখা গেছে।
অন্যদিকে স্যানিটারি পণ্যের জন্য পরিচিত এই এলাকার মার্কেটগুলো থেকে কেনা পণ্য ভ্যান ও পিকআপে করে আনা নেওয়া বেশি হয়। গত কয়েকদিন সব থমকে গেলেও আজ থেকে ভ্যান চালকদেরও ব্যস্ততা বেড়েছে।
গত মঙ্গলবার (৮ মার্চ) বিকেলে হঠাৎ করে বিস্ফোরণে কেঁপে ওঠে গোটা গুলিস্তান এলাকা। সিদ্দিকবাজারের ওই ভবনের বিস্ফোরণে বিধ্বস্ত হয় স্যানিটারি পণ্যের দোকানপাট ও পাশের ভবনের ব্র্যাক ব্যাংকের গুলিস্তান শাখা।
এখন পর্যন্ত ভবন বিধ্বস্ত হওয়ার ঘটনায় মারা গেছেন ব্যবসায়ী, দোকান কর্মচারী ও পথচারীসহ ২৪ জন। আরও কয়েকজন এখনও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
এরইমধ্যে দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগে ভবন মালিকসহ তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
এদিকে সরকারি একাধিক সংস্থা ভবনে বিস্ফোরণের কারণ অনুসন্ধানে একাধিক তদন্ত কমিটি করেছে। তবে এখনও কেউ আনুষ্ঠানিকভাবে কারণ না জানালেও গ্যাস লিকেজের ফলে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটতে পারে বলে জানা গেছে।
বিইউ/এমএইচএম