গুলিস্তানের সিদ্দিকবাজারে বিস্ফোরণের আগের দিন স্ত্রী ও সন্তানকে চট্টগ্রামের মামাশ্বশুরের বাড়িতে পাঠিয়েছিলেন মেহেদী হাসান স্বপন (৩৭)। মামাশ্বশুর তাকেও অনুরোধ করেছিলেন সেখানে যেতে। তবে কাজের ব্যস্ততায় যেতে পারেননি স্বপন। সবশেষ মঙ্গলবার (৭ মার্চ) সন্ধ্যায় গুলিস্তানের বিস্ফোরণের খবর পান তারা। এরপর ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন স্বপনের মামাশ্বশুর আব্দুল মান্নান। কিন্তু দ্বিতীয় দিনেও খোঁজ মেলেনি স্বপনের। ফলে তারা ধারণা করছেন স্বপন আর বেঁচে নেই।
বুধবার (৮ মার্চ) সন্ধ্যায় ঘটনাস্থলের পাশে বসে থাকার সময় কথা হলে কান্নাভেজা কণ্ঠে আব্দুল মান্নান জানান, মেহেদী হাসান স্বপনের গ্রামের বাড়ি নোয়াখালীর বজরা এলাকায়। ঢাকায় পরিবার নিয়ে থাকতেন তিনি। বিস্ফোরণের আগের দিন স্ত্রী-সন্তানদের চট্টগ্রামে পাঠিয়েছেন তিনি।
বিজ্ঞাপন
স্বপন বাংলাদেশ স্যানিটারি নামের একটি প্রতিষ্ঠানে ম্যানেজার হিসেবে কাজ করতেন জানিয়ে তিনি বলেন, মঙ্গলবার সন্ধ্যার দিকে তারা সেই ভবনে বিস্ফোরণের খবর পাওয়ার পরপরই চট্টগ্রাম থেকে ঢাকায় রওয়ানা হয়েছিলেন।
স্বপনের মামাশ্বশুর আরও বলেন, মেয়েটাকে আমার বাসায় লালন-পালন করে স্বপনের সঙ্গে বিয়ে দিয়েছি। সংসার সুখেই কাটছিল তার। কিন্তু গতকাল থেকে মেয়েটা ভেঙে পড়েছে। আমরা এখন পর্যন্ত তার সঙ্গে কোনো কথা বলতে পারিনি। তাকে কোনোকিছু না বলে ঢাকার উদ্দেশে রওয়ানা হয়েছি।
এ সময় ফায়ার সার্ভিসের কর্মীদের দ্রুত অভিযান শেষ করার অনুরোধ জানিয়ে তিনি বলেন, তারা যেন দ্রুত উদ্ধার অভিযান শেষ করে। যদি স্বপনের লাশ ভবনের নিচে থেকেও থাকে, তাহলে যেন তা উদ্ধার করে আমাদের বুঝিয়ে দেওয়া হয়।
এর আগে বুধবার দ্বিতীয় দিনে বিস্ফোরিত ভবনটির বেসমেন্টে উদ্ধার অভিযানে নামে ফায়ার সার্ভিসের উদ্ধারকারী দল। একপর্যায়ে বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে সেখান থেকে আরও দুইজনের লাশ উদ্ধার করেন তারা। এ নিয়ে এই বিস্ফোরণের ঘটনায় এখন পর্যন্ত মৃতের সংখ্যা বেড়ে ১৯ জনে দাঁড়িয়েছে। তবে ফায়ার সার্ভিস জানিয়েছে, তারা এখনই অভিযান শেষ করছেন না। যতক্ষণ পর্যন্ত না নিখোঁজের কোনো অভিযোগ না থাকছে, ততক্ষণ তারা অভিযান চালিয়ে যাবেন।
বিজ্ঞাপন
এমআইকে/আইএইচ